জেসিন্ডার পদত্যাগের পর নিউজিল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ক্রিস হিপকিন্স
জেসিন্ডা আরডার্নের পদত্যাগের পর নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য একমাত্র প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করলো বর্তমানের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে জেসিন্ডার উত্তরসূরী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন লেবার পার্টির নেতা ক্রিস হিপকিন্স (৪৪)। খবর রয়টার্সের।
সবাইকে চমকে দিয়ে গত ১৯ জানুয়ারি নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন জেসিন্ডা আরডার্ন। এরপর থেকেই দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে চলছিলো আলোচনা।
তবে দলের সমর্থন পাওয়ার পরও ক্রিসের প্রধানমন্ত্রী হতে আরও কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি রয়েছে। প্রথমত আগামীকাল (রোববার) তাকে পার্লামেন্টে লেবার পার্টির থেকে আনুষ্ঠানিক সমর্থন পেতে হবে।
আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি জেসিন্ডা আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির গভর্নর জেনারেলের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। এরপর গভর্নর জেনারেল রাজা তৃতীয় চার্লসের পক্ষে ক্রিসকে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ প্রদান করবেন।
আইনপ্রণেতা হিসেবে পার্লামেন্টে যোগ দেওয়ার আগে ক্রিস দেশটির শিক্ষামন্ত্রীর উপদেষ্টা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্কের কার্যালয়েও কাজ করেছেন।
২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টের সদস্য হন তিনি। এরপর ২০২০ সালে করোনা মহামারি প্রতিরোধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হন। বর্তমানে মহামারি প্রতিরোধ মন্ত্রণালয় ছাড়াও শিক্ষা, সরকারি সেবা ও পুলিশ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে আছেন ক্রিস।
প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে ক্রিসের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন দেশটির বিচারমন্ত্রী কিরি অ্যালান। লেবার পার্টি দলের নেতৃত্বের জন্য একমাত্র প্রার্থী হিসেবে ক্রিসের নাম ঘোষণার পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, "আমি মনে করি আমরা অত্যন্ত শক্তিশালী একটি দল। আমরা ঐক্যের মধ্য দিয়ে এ ধারা বজায় রেখেছি এবং তা অব্যাহত থাকবে। এ ধরনের চমৎকার লোকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দলের সঙ্গে কাজ করতে পেরে নিজেকে সত্যি খুব ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।"
তবে ক্রিস ঠিক কতদিন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন তা নির্ভর করছে চলতি বছরের অক্টোবরের সাধারণ নির্বাচনের ওপর। যদি এ নির্বাচনে লেবার পার্টির পরাজয় ঘটে তবে তিনি মাত্র আট মাস এ দায়িত্বে থাকবেন আর যদি লেবার পার্টি জিতে যায় তাহলে দায়িত্ব আরও দীর্ঘয়িত হবে।
তবে বিভিন্ন মতামত জরিপে দেখা গেছে, ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির জনসমর্থন তলানিতে এসে ঠেকেছে। ফলে আসন্ন নির্বাচনে ক্রিস ও তার দলকে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হবে।
২০১৭ সালে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী নারী হিসেবে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হন জেসিন্ডা।
বৃহস্পতিবার পদত্যাগের ঘোষণা প্রদানের সংবাদ সম্মেলনে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে জেসিন্ডা জানান, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালনরত সাড়ে পাঁচ বছরের সময়টা তার জন্য কঠিন ছিল। তার সরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে।
চলতি বছর জেসিন্ডার মেয়ে নেভের স্কুলজীবন শুরু হবে। এখন থেকে নিজের কন্যাকে বেশি সময় দিতে চান তিনি।
পদত্যাগের ঘোষণার সময় ৪২ বছর বয়সী জেসিন্ডা বলেন, "কঠিন সময় যাচ্ছে বলে আমি দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছি, বিষয়টি এমন নয়। এমন হলে আমি আগেই সরে যেতাম। আমি চলে যাচ্ছি, কারণ প্রধানমন্ত্রীর অনেক দায়িত্ব থাকে, যা পালন করা আমার পক্ষে হয়তো আর সম্ভব নয়।"