হাইতিতে ৩ লাখ, কাশ্মীরে ৮০০০০: গত দু-দশকের বিভীষিকাময় ভূমিকম্পগুলো
দক্ষিণ তুরস্ক ও উত্তর সিরিয়ার ভূমিকম্পের বিভীষিকায় চোখে জল এসেছে গোটা বিশ্বেরই। তবে এই একইভাবে বারবার কেঁপে উঠেছে আমাদের পৃথিবী। বিগত দুই দশকে কাশ্মীর, চীন, নেপাল থেকে ইন্দোনেশিয়া, বারবার কম্পমান বিভীষিকার সাক্ষী থেকেছে লাখ লাখ মানুষ। এতে প্রাণ হারিয়েছে কয়েক লাখ মানুষ। একবার ফিরে দেখা সেই সব ভূমিকম্পকে।
আফগানিস্তান, ২০২২: গত বছরের ২২ জুন আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ৬.১ সেই ভূমিকম্পে প্রাণ হরিয়েছিলেন অন্তত ১১০০ জন। আহত হন দেড় হাজার। পুরো বা আংশিক ধসে পড়ে সাড়ে চার হাজার বাড়ি।
হাইতি, ২০২১: ২০২১ সালের ১৪ অগস্ট সকালে ৭.২ মাত্রার শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে হাইতি। এই বিপর্যয়ে কম করে মৃত্যু হয়েছিল ২,২০০ জনের। ভূমিকম্পে ধসে পড়ে অসংখ্য বাড়ি, স্কুল ও হাসপাতাল। ২০১০ সালের ভূমিকম্পের পর এটাকে হাইতির 'সবচেয়ে বড় বিপর্যয়' বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল।
ইন্দোনেশিয়া, ২০১৮: রিখটার স্কেলে ৭.৫ মাত্রার এক বিধ্বংসী ভূমিকম্পে ইন্দোনেশিয়ার ৪৩০০ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। ২০২২ সালের নভেম্বরেও ইন্দোনেশিয়ায় এক ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এতে মূলত জাভা দ্বীপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কয়েকশো মানুষ এতে প্রাণ হারিয়েছিলেন।
নেপাল, ২০১৫: ২০১৫ সালে নেপালে হওয়া ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল গোটা দেশ। ২৫ এপ্রিলের সেই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.৮। নেপালের ৮০ শতাংশ ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থাপনা ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এই কম্পনে। ১৯৩৪ সালের পর নেপালে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প ছিল এটি।
জাপান, ২০১১: ২০১১ সালের মার্চে জাপানে ৯ মাত্রার শক্তিশালী এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের পর আঘাত হানে সুনামি। ভূমিকম্প ও সুনামিতে প্রায় ১৯ হাজার মানুষ নিহত হন। আহত হন আরও ৬ হাজার। এই ভূমিকম্পের ফলে ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিপর্যয় ঘটে।
হাইতি, ২০১০: ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে হাইতির রাজধানী পোর্ট–অব–প্রিন্সে ৭ মাত্রার শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে রীতিমতো বিধ্বস্ত হয় পোর্ট-অ-প্রিন্স। নিহত হয় ৩ লাখ ১৬ হাজারের মতো মানুষ। ভূমিকম্পটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে হাইতির প্রতিবেশী দেশ কিউবা ও ভেনেজুয়েলাতেও ভূকম্পন অনুভূত হয়।
চীন, ২০০৮: ২০০৮ সালের মে মাসে ৭.৮ মাত্রার এক ভূমিকম্পে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় সাড়ে ৮৭ হাজার মানুষের। সেই ভূমিকম্পে ৮ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের সম্পদ নষ্ট হয়েছিল। ভূমিকম্পের জেরে ১০ হাজার স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছিল। গৃহহীন হয়ে পড়ে আরও প্রায় এক কোটি মানুষ। ভূমিকম্পের আঘাতে কয়েক লাখ বিল্ডিং মাটিতে মিশে গিয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছিল।
কাশ্মীর, ২০০৫: ২০০৫ সালের মে মাসে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ৮০ হাজার মানুষ। গৃহহীন হয়েছিল ১০ লাখের বেশি মানুষ। শক্তিশালী ভূমিকম্পটি দুর্গম এলাকায় আঘাত হানায় উদ্ধারকাজ খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল। এর জেরে মৃতের সংখ্যা এত ছিল।