ইউক্রেনকে পাঠানো আমেরিকান অস্ত্র দখল করে ইরানে পাঠাচ্ছে রাশিয়া
ইউক্রেনের অনেক এলাকা নতুন করে দখল করে নিচ্ছে রাশিয়া। এসব এলাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর পাঠানো অনেক অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি ফেলে পিছু হটেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। আর ফেলে যাওয়া সেসব অস্ত্র দখলে নিয়ে সেগুলো ইরানে পাঠাচ্ছে রাশিয়া। খবর সিএনএন-এর।
যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা, তেহরান এসব অস্ত্র ও সরঞ্জামে রিভার্স-ইঞ্জিনিয়ারিং প্রয়োগ করার চেষ্টা করবে।
গত এক বছরে বছরে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো ও অন্যান্য পশ্চিমা কর্মকর্তারা দেখেছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনীয় বাহিনীর ফেলে যাওয়া জ্যাভেলিন অ্যান্টি-ট্যাংক ও অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট সিস্টেমসহ অনেক অস্ত্র জব্দ করে নিয়েছে রুশ বাহিনী। অন্তত চারটি সূত্র সিএনএনকে এ তথ্য জানিয়েছে।
এসব অস্ত্র ও সরঞ্জামের অনেকগুলো রাশিয়া ইরানে পাঠিয়ে দিয়েছে খুলে খুলে বিশ্লেষণ করার জন্য। তারপর সম্ভবত ইরানি সেনাবাহিনী এসব অস্ত্রের নিজস্ব সংস্করণ বানানোর চেষ্টা করবেন।
রাশিয়া মনে করছে, দখল করা পশ্চিমা অস্ত্র ইরানে পাঠানো অব্যাহত রাখলে ইউক্রেন যুদ্ধে তেহরান মস্কোকে জোরালো সমর্থন দেওয়া অব্যাহত রাখবে।
মার্কিন অস্ত্রগুলো ইরান সফলভাবে রিভার্স-ইঞ্জিনিয়ারিং করতে পেরেছে কি না, নিশ্চিতভাবে এখনও জানা যায়নি। তবে অতীতে তেহরান দখল করা মার্কিন অস্ত্রশস্ত্রের ওপর রিভার্স-ইঞ্জিনিয়ারিং প্রয়োগ করে প্রতিনিয়ত উন্নত অস্ত্র তৈরি করে গেছে।
ইরানের ভান্ডারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হলে অ্যান্টি-ট্যাংক গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র তুফান। এটি তেহরান বানিয়েছে ১৯৭০-এর দশকের মার্কিন বিজিএম-৭১ টিওডব্লিউ ক্ষেপণাস্ত্র রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং করে।
২০১১ সালেও আমেরিকার তৈরি একটি ড্রোন রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং করে নতুন একটি ড্রোন বানায় ইরান। ওই ড্রোন ২০১৮ সালে ইসরায়েলের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে।
গত কয়েক বছরে ইরানের সঙ্গে রাশিয়ার সামরিক সহায়তা বাড়িয়েছে রাশিয়া। এছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধের মাধ্যমে ইরান যুদ্ধক্ষেত্রে নিজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাড়াচ্ছে।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ও যুদ্ধক্ষেত্রে অনেক অস্ত্র হারানোর কারণে রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্র ও গোলাবারুদ উৎপাদন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এর ফলে ইরানের কাছ থেকে কয়েকশ ড্রোনসহ সাঁজোয়া যান ও ট্যাঙ্ক চেয়ে নিয়েছে রাশিয়া।
এর বিনিময়ে রাশিয়ার কাছ থেকে ফাইটার জেট, রাডার সিস্টেম, হেলিকপ্টারসহ বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম চেয়েছে ইরান।
পশ্চিমা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়া-ইরানের এ ঘনিষ্ঠতা পশ্চিমা মিত্রদের জন্য বিপদ বাড়াতে পারে।