ইয়েমেন যুদ্ধ: সৌদি-হুথি আলোচনা শান্তি প্রতিষ্ঠার আশা দেখাচ্ছে
ইরানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের পর এবার ইয়েমেন যুদ্ধ অবসানে আরেকটি বড় উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি আরব। হুথি বিদ্রোহীদের সাথে স্থায়ী যুদ্ধ-বিরতির আলোচনায় অংশ নিতে ইয়েমেনের রাজধানী সানায় পৌঁছেছে সৌদি সরকারের একটি প্রতিনিধি দল। খবর বিবিসির।
আলোচনায় মধ্যস্ততাকারী কূটনীতিক দলও ওমান থেকে সানায় পৌঁছেছে।
২০১৫ সালে সানার নিয়ন্ত্রণ নেয় হুথি বিদ্রোহীরা, বর্তমানে তারাই শহরটি নিয়ন্ত্রণ করছে। হুথিদের হাতে সানার পতনের পরই সৌদি-নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনে আগ্রাসন চালায়। তারপর থেকেই যুদ্ধ চলতে থাকে, সৌদি জোটের আক্রমণে নিহত হয়েছেন লাখ লাখ ইয়েমেনি, অনাহারে মারা গেছে বহু শিশু। যুদ্ধবিধ্বস্ত দারিদ্রপীড়িত দেশটির ৮০ শতাংশ মানুষ বর্তমানে জীবনধারণের জন্য সহায়তার ওপর নির্ভর করে।
শান্তি আলোচনার বিষয়ে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি, তবে হুথিদের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সৌদি এবং ওমানি প্রতিনিধিরা সানায় পৌঁছেছেন।
এরমধ্যে একটি ছবিও ফাঁস হয়েছে, ছবিতে হুথি নেতা মোহাম্মদ আলী আল-হুথিকে একজন সৌদি কর্মকর্তার সাথে করমর্দন করতে দেখা যায়, তবে ছবির ওই কর্মকর্তার চেহারা অস্পষ্ট রাখা হয়েছে।
এই প্রচেষ্টাকে যুদ্ধ-বিরতি অর্জন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় উভয়পক্ষের আগ্রহের নিদর্শন হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
বিবিসি জানায়, এবিষয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য না করলেও, বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া সংবাদ বলছে, চলতি মাসের শেষেই একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
যদিও চুক্তির শর্তগুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়নি।
চুক্তির শর্তগুলোর বিষয়ে নাম না প্রকাশের শর্তে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এরমধ্যে ইয়েমেনের সরকারি কর্মকর্তাদের বেতনভাতা দেওয়ার অঙ্গীকার, সকল বিমান ও সমুদ্র বন্দর চালু করার বিষয়টি থাকবে। তার পাশাপাশি যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেন পুনর্গঠন, সকল বিদেশি সেনা প্রত্যাহার এবং রাজনৈতিক রুপান্তরের মতো কিছু উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যও থাকবে। অতীতে এসব বিষয় নিয়ে বিরোধই শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে বাধা হিসেবে কাজ করেছে।
বস্তুত, জাতিসংঘের গৃহীত শান্তি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি এই প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে, গত বছর যার ফলে একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতিও কার্যকর হয়।
যুদ্ধবিরতি চলাকালেই দ্বিপাক্ষিক আস্থা বৃদ্ধির বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।