কেন কয়েক ডজন নেতা ইমরান খানের দল ত্যাগ করেছেন?
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেপ্তার ও তা নিয়ে সংঘর্ষের পর ইমরানের তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রায় দুই ডজনের বেশি নেতা দল ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন। খবর আল জাজিরা'র।
পিটিআই এ জন্য সরকারের নিরবচ্ছিন্ন হয়রানিকে দায়ী করেছে।
মঙ্গলবার (২৩ মে) পিটিআই ছেড়েছেন শিরীন মাজারি। খানের গ্রেপ্তারের জেরে হওয়া সংঘর্ষের পর ১২ মে সাবেক এ মানবাধিকার মন্ত্রী প্রথমবারের মতো আটক হন। এরপর আরও কয়েকবার তাকে আটক করা হয়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইসলামাবাদে নিজের বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ৫৭ বছর বয়সী এ রাজনীতিবিদ সামরিক স্থাপনার ওপর হামলাসহ সহিসংতার নিন্দা করে জানান, তিনি আর রাজনীতি করবেন না।
বেশকিছু রাজনীতিবিদ দল ছেড়ে যাওয়ার পর পিটিআই প্রধান এক টুইটে লেখেন: 'আমরা সবাই পাকিস্তানে জোরপূর্বক বিয়ের কথা শুনেছি। কিন্তু পিটিআই-এর জন্য নতুন একটি ঘটনার দেখা মিলছে, জোরপূর্বক ডিভোর্স।'
মঙ্গলবার ইসলামাবাদের এক আদালতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইমরান খান অভিযোগ করেন, তার দলের নেতাদেরকে দল ছাড়ার জন্য জোর করা হচ্ছে।
তবে এই জোর করার পেছনে কারা — সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।
'মানুষ দলত্যাগ করছেন না, তাদেরকে বন্দুকের মুখে দল ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। এ কৌশলে রাজনৈতিক দলকে ভাগ করা যায় না,' খান বলেন।
খানের একজন প্রধানতম সহযোগী শিবলি ফারাজ আল জাজিরাকে বলেন, কিছু 'ভালো লোক' দল ছেড়ে চলে যাওয়া দুঃখজনক বটে, তবে বিষয়টিকে তিনি আশীর্বাদ হিসেবেও দেখছেন।
'অনেকেই ছিলেন সুযোগসন্ধানী। তারা দলের সম্পদ নয় বরং বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন.' ফারাজ বলেন।
তিনি বলেন, এ দলত্যাগের কোনো প্রভাব আসন্ন সাধারণ ও প্রাদেশিক নির্বাচনে পিটিআই-এর ওপর পড়বে না। ফারাজ ইমরান খানকে পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা হিসেবে উল্লেখ করেন।
গত বছরের এপ্রিলে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পর ক্ষমতাচ্যুত হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এরপর থেকেই নির্বাচনের দাবিতে সারাদেশে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছেন তিনি।
পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশটির সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অতিমাত্রায় ভূমিকার ফলে নেতাদের রাজনৈতিক দল ছেড়ে যাওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়।
পাকিস্তানে সেনাবাহিনী প্রায় তিন দশকের মতো দেশ শাসন করেছে। এজন্য এটি সেখানে 'এস্টাবলিশমেন্ট' হিসেবেও একটি পরিচিতি দাঁড় করিয়ে ফেলেছে।