এবার পাঠ্যসূচী থেকে কবি আল্লামা ইকবালের অধ্যায় বাদ দিচ্ছে দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়!
দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের পাঠ্যসূচী থেকে পাকিস্তানের জাতীয় কবি আল্লামা ইকবাল (মুহাম্মদ ইকবাল) এর অধ্যায় বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (২৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খবর এনডিটিভির।
পাঠ্যসূচী থেকে অধ্যায় বাতিলের এ সিদ্ধান্তটি চূড়ান্তভাবে গ্রহণের জন্য খুব শীঘ্রই এটি এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলে তোলা হবে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) এর সংশ্লিষ্ট অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।
এতদিন বিশ্ববিদ্যালয়টির রাষ্ট্রবিজ্ঞান অন্তর্ভুক্ত ব্যাচেলর অফ আর্টস প্রোগ্রামের সপ্তম সেমিস্টারে 'মডার্ন ইন্ডিয়ান পলিটিকাল থট' নামের কোর্সে আল্লামা ইকবাল সম্পর্কে পড়ানো হতো। বর্তমানে কোর্সটিতে মোট ১২টি ইউনিট রয়েছে। যার মধ্যে বাতিলের জন্য প্রস্তাবিত ইউনিটটির নাম 'ইকবাল: কমিউনিটি'।
মূলত বিখ্যাত ভারতীয় চিন্তাবিদদের বৈচিত্র্যময় ও সমৃদ্ধ রাজনৈতিক দর্শন সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের পরিচিত করানোই এ কোর্সটির উদ্দেশ্য। এ কোর্সটিতে আল্লামা ইকবাল ছাড়াও রামমোহন রায়, স্বামী বিবেকানন্দ, মহাত্মা গান্ধী, ভীমরাও আম্বেদকর ও পণ্ডিত রামাবাইকে নিয়ে অধ্যায় রয়েছে।
এ বিষয়ে দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের এক সদস্য বলেন, "রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সিলেবাস পরিবর্তনের একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর এই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই আল্লামা ইকবালের একটি অধ্যায় সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।"
অন্যদিকে কবি আল্লামা ইকবালকে 'ধর্মান্ধ ধর্মতাত্ত্বিক পণ্ডিত' হিসেবে আখ্যা দিয়ে ভারত ভাগের পেছনে তাকে দায়ী করেন এবিভিপি। সংগঠনটির প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, "মুহাম্মদ ইকবালকে পাকিস্তানের আধ্যাত্মিক জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তিনি জিন্নাহকে মুসলিম লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সহযোগিতা করেছেন। ভারত ভাগের ক্ষেত্রে মুহাম্মদ ইকবাল জিন্নাহর মতোই দায়ী।"
আল্লামা ইকবাল একাধারে একজন কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও মনীষী। ১৮৭৭ সালে তিনি অবিভক্ত ভারতবর্ষের শিয়ালকোটে জন্মগ্রহণ করেন।
সমাজ, রাষ্ট্র, বিজ্ঞান, ধর্ম, শিল্পবিজ্ঞানসহ নানা ক্ষেত্রে আল্লামা ইকবালের অবদান রয়েছে। ভারতে ব্যাপক জনপ্রিয় দেশাত্মবোধক কবিতা 'সারে জাহাঁ সে আচ্ছা' তারই লেখা।