মৃত্যুর ফেরিওয়ালা ওয়াগনার-প্রধান প্রিগোজিন যখন শিশুসাহিত্যিক!
রাশিয়ার কুখ্যাত ভাড়াটে সৈনিকের দল ওয়াগনার গ্রুপ। দলটির প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। এখন মৃত্যুর ফেরিওয়ালা হলেও, তিনি শিশুসাহিত্যিকও ছিলেন একসময়।
প্রায় ২০ বছর আগে ইয়েভগেনি প্রিগোজিন একটি শিশুকাহিনি লিখেছিলেন। 'ইন্দ্রাগুজিক' নামের এ বইয়ে এক ছোট্ট ছেলে ও শিশু বোনের কাহিনি বলা হয়েছে। গল্পের ওই ভাইবোন থাকে থিয়েটারের বিশাল এক ঝাড়বাতিতে।
আনুষ্ঠানিকভাবে 'ইন্দ্রাগুজিক'-এর লেখক প্রিগোজিনের দুই সন্তান পলিনা ও পাভেল। বইটি ২ হাজার কপি ছাপানো হয়েছিল। ভূমিকায় অবশ্য বলা হয়েছে, ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে মিলে প্রিগোজিনও বইটি লিখেছেন।
দ্য মস্কো টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, 'ইন্দ্রাগুজিক'-এর কাহিনি 'ছোট মানুষদের' ঘিরে। এরা থাকে সাধারণ মানুষদের সঙ্গেই, মঞ্চের ঝাড়বাতিতে।
একসময় বইটির প্রধান চরিত্র ইন্দ্রাগুজিক ঝাড়বাতি থেকে পড়ে পথ হারিয়ে ফেলে। তার বাড়ি ফেরার অভিযানকে ঘিরেই এ বইয়ের কাহিনি।
৯০ পৃষ্ঠার বইটিতে অনেকগুলো চমৎকার অলংকরণ রয়েছে। অলংকরণ-শিল্পী হিসেবে প্রিগোজিনের নাম দেওয়া হয়েছে।
পরে এ গল্পে দেখা যায়, ইন্দ্রাগুজিক ও তার পরিবার যে ঝাড়বাতিতে থাকে সেটি আসলে জাদুর ঝাড়বাতি। এই ঝাড়বাতি জাদুবলে ছোট মানুষদের সাধারণ মানুষের আকৃতি দিতে পারে।
তারা কোথা থেকে এসেছে, তা জানতে ইন্দ্রাগুজিক ও তার বন্ধুরা তাদের জন্মভূমি ইন্দ্রোগুজিয়ায় সফর করে। সেখানে তারা রাজার সঙ্গে দেখা করে।
রাজাকে সাহায্য করতে ইন্দ্রাগুজিক ও তার বন্ধুরা ঝাড়বাতি দিয়ে তাকে বড় বানিয়ে দেয়—কিন্তু হিসাবের ভুলে রাজা দৈত্যের মতো বড় হয়ে যায়।
রাজা তখন আবার তাকে ছোট করে দিতে অনুরোধ জানিয়ে বলে, 'আমার প্রজারা এত ছোট হলে আমি শাসনকাজ চালাব কী করে? আমি তো ভুলে ওদের মেরেই ফেলতে পারি। দয়া করে আমাকে আগের সেই ছোট্ট রাজা বানিয়ে দাও। একজন ছোট্ট রাজাই কেবল ইন্দ্রাগুজিকদের শাসন করতে পারে।'
বইয়ের শেষে ইন্দ্রাগুজিকের অনেক অ্যাডভেঞ্চারকে 'মজার ও অদ্ভুত' বলে উল্লেখ করা হয়।
বইটির ভূমিকায় বলা হয়েছে, 'ইন্দ্রাগুজিক'-এর চরিত্রগুলোর নাম দিয়েছে পলিনা ও পাভেল।
'ইন্দ্রাগুজিক' প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। ওই সময় প্রিগোজিন সেন্ট পিটার্সবার্গে সফল রেস্তোরাঁ ব্যবসা চালাচ্ছিলেন।
ধারণা করা হয়, 'ইন্দ্রাগুজিক' কখনও বিক্রির জন্য বাজারে ছাড়া হয়নি। বইটি প্রিগোজিনের বন্ধুবান্ধব ও ব্যবসা-সহযোগীদের উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল।
'ইন্দ্রাগুজিক'-এর দুই সহলেখক, অর্থাৎ প্রিগোজিনের ছেলেমেয়েও বাবার পথেই হেঁটেছে বলে জানা গেছে। প্রিগোজিন বলেছেন, তারা ছেলে পাভেল (২৭) ওয়াগনার গ্রুপের হয়ে সিরিয়া ও পূর্ব ইউক্রেন দুই জায়গায়ই যুদ্ধ করেছেন।
প্রিগোজিনের মেয়ে পলিনা (৩০) সেন্ট পিটার্সবার্গে একটি বিলাসবহুল হোটেলের মালিক বলে জানা গেছে।