শস্যচুক্তি স্থগিত করলো রাশিয়া, সেতুতে হামলার সঙ্গে সম্পর্ক নেই দাবি
ক্রিমিয়ান সেতুতে হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শস্যচুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় কৃষ্ণ সাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানির জন্য এই চুক্তি করা হয়।
রাশিয়াকে অধিভুক্ত অঞ্চল ক্রিমিয়ার সাথে সংযুক্তকারী ১৯ কিলোমিটার সড়ক ও রেল সেতুতে সোমবার (১৭ জুলাই) ভোরের কিছুক্ষণ আগে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে এক দম্পতি নিহত ও তাদের মেয়ে আহত হয়। ইউক্রেনে যুদ্ধরত রুশ সেনাদের যাতায়াতের জন্য অন্যতম প্রধান সড়ক এটি। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ব্যক্তিগত আগ্রহের প্রকল্প ছিল এই সেতু। বিস্ফোরণকে সন্ত্রাসী হামলা বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া ।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, শস্যচুক্তি স্থগিতের সাথে সেতুতে হামলার কোন সম্পর্ক নেই। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, আজ (সোমবার) থেকেই শস্যচুক্তি স্থগিত কার্যকর হবে।
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, এই চুক্তিতে থাকা রাশিয়া সম্পর্কিত অংশগুলো এখনো পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, মস্কো এই চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর বিরুদ্ধে। এই সিদ্ধান্তটি তুরস্ক, ইউক্রেন এবং জাতিসংঘকে অবহিত করা হয়েছে।
রাশিয়া এবং ইউক্রেন হল বিশ্বের দুই শীর্ষ কৃষি পণ্য উৎপাদনকারী দেশ। গম, বার্লি, ভুট্টা, রেপসিড, রেপসিড তেল, সূর্যমুখী বীজ এবং সূর্যমুখী তেলের প্রধান রপ্তানিকারক তারা। এ ছাড়া সারের বাজারেও রাশিয়ার আধিপত্য আছে।
শস্যচুক্তি
গত সপ্তাহে পুতিন জানান, রাশিয়ার সাথে সম্পর্কিত চুক্তির অংশগুলো বাস্তবায়িত হয়নি। তাই তিনি এতে রুশ অংশগ্রহণ স্থগিত করার কথা ভাবছেন এবং শর্ত পূরণ হলে রাশিয়া চুক্তিতে ফিরে আসবে।
রাশিয়াকে কৃষ্ণ সাগর চুক্তিতে সম্মত করতে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে একটি তিন বছরের চুক্তিও হয়েছিল। যার অধীনে জাতিসংঘ রাশিয়াকে তার খাদ্য এবং সার বিদেশি বাজারে রপ্তানি করতে সহায়তা করতে সম্মত হয়।
যদিও রাশিয়ার খাদ্য ও সারের উপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে মস্কো বলছে, অর্থপ্রদান, সরবরাহ এবং বীমার ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণে রপ্তানিতে সমস্যা হচ্ছে।
রাশিয়া গত বছরে তিনবার কৃষ্ণ সাগর চুক্তি বাড়ানোর জন্য সম্মত হয়। তবে অক্টোবরে ক্রিমিয়ায় রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার প্রতিক্রিয়ায় কিছু সময়ের জন্য চুক্তি স্থগিত রাখে।
গত সপ্তাহে পুতিন বলেন, চুুক্তি থেকে আমরা সরে আসতে পারি। যদি সবাই আবারো বলে যে, আমাদেরকে দেওয়া সব প্রতিশ্রুতি পূরণ করা করা হবে। তাহলে সে প্রতিশ্রুতি পূরণ করুক। আমরা অবিলম্বে চু্ক্তিতে ফিরব।
রাশিয়া অভিযোগ তোলে যে, দরিদ্র দেশগুলোতে পর্যাপ্ত শস্য পৌঁছেনি। এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘের বক্তব্য হলো, চু্ক্তির মাধ্যমে শস্য রপ্তানিতে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম ২০ শতাংশের বেশি কমেছে। এতে (দরিদ্র) দেশগুলো উপকৃত হয়েছে।