খবর লিখে দেওয়ার জন্য পরীক্ষামূলকভাবে এআই টুল নিয়ে এল গুগল
গুগল পরীক্ষামূলকভাবে একটি পণ্য নিয়ে এসেছে যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্ত ব্যবহার করে খবর লিখতে পারে।
গুগল এই টুল দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট ও দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর মতো সংবাদ সংস্থার কাছে বিক্রির চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে অবগত তিনজন ব্যক্তি তথ্যটি দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসকে নিশ্চিত করেছেন।
ওই তিন ব্যক্তি নাম না প্রকাশের শর্তে জানিয়েছেন, আপাতত এ টুলের নাম রাখা হয়েছে 'জেনেসিস'। তারা জানান, টুলটি যেকোনো বিষয়ে তথ্য নিয়ে—যেমন কোনো চলতি ঘটনার বিস্তারিত তথ্য—সংবাদ কনটেন্ট তৈরি, অর্থাৎ সংবাদ নিবন্ধ লিখতে পারে।
একজন সূত্র বলেছেন, গুগল মনে করে, জেনেসিস সাংবাদিকদের জন্য একধরনের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করতে পারবে। এর সুবাদে কিছু কাজ অটোমেশনের আওতায় আনা যাবে। এতে অনেকের সময় বাঁচবে।
গুগলের প্রচারণা দেখা কয়েকজন নির্বাহী একে বিচলিত করে তোলার মতো ঘটনা হিসেবে অভিহিত করেছেন।
গুগলে মুখপাত্র জেন ক্রিডার এক বিবৃতিতে বলেছেন, সংবাদ প্রকাশক, বিশেষ করে ছোট প্রকাশকদের সঙ্গে সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে তাদের সংবাদকর্মে সহায়তা করার জন্য এআইচালিত টুল দেবে গুগল।
তিনি আরও বলে, রিপোর্টিংয়ে সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জায়গা নেওয়া এসব টুলের উদ্দেশ্য নয়—এবং সেটা করাও অসম্ভব। এসব টুল সংবাদ নিবন্ধ তৈরি বা ফ্যাক্ট-চেকিংও করবে না। এই টুলগুলো নানা ধরনের শিরোনাম সাজিয়ে দেবে, একটি লেখাকে নানা স্টাইলে পুনর্লিখন করে দেবে।
সাংবাদিকতার অধ্যাপক জেফ জার্ভিস বলেন, গুগলের নতুন এই টুলের সুবিধা-অসুবিধা দুটোই আছে।
জার্ভিস বলেন, 'এই প্রযুক্তি যদি সঠিক তথ্য নির্ভরযোগ্যভাবে দিতে পারে, তাহলে সাংবাদিকদের এই টুল ব্যবহার করা উচিত।'
তবে সূক্ষ্ম দ্যোতনা ও সাংস্কৃতিক ব্যাখ্যা প্রয়োজন, এমন সব বিষয় নিয়ে লেখার জন্য যদি সাংবাদিক ও সংবাদ সংস্থাগুলো এই টুলের অপব্যবহার করে, তাহলে তা এ টুলের তো বটেই, সংশ্লিষ্ট সংবাদ সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলবে।
বার্তাকক্ষে এআই টুল ব্যবহার করবে কি না, তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে সংবাদ সংস্থাগুলো টানাপোড়েনে ভুগছে। এর মাঝেই গুগলের এই নতুন টুল উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দেবে নিশ্চিতভাবে। দশকের পর দশক ধরে যেসব সাংবাদিকরা নিজেদের লেখা নিজেরাই লিখেছেন, তাদের মধ্যেও উদ্বেগ ছড়াবে এ টুল।
এদিকে প্রকাশক ও অন্যান্য ক্রিয়েটররা তাদের কয়েক দশকের পরিশ্রমে তৈরি লেখা ও কনটেন্ট দিয়ে নিজেদের এআই সিস্টেমকে প্রশিক্ষিত করার জন্য গুগলসহ অন্য বড় এআই কোম্পানিগুলোর সমালোচনা করেছে। কারণ এসব লেখা ও কনটেন্ট ব্যবহারের জন্য গুগল ও এআই কোম্পানিগুলো প্রকাশক ও কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের কোনো আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়নি।