ওপেনহাইমারকে ভারতের নাগরিকত্বের প্রস্তাব দিয়েছিলেন জওহরলাল নেহেরু!
ক্রিস্টোফার নোলানের সর্বশেষ চলচ্চিত্রের বিষয়বস্তু রবার্ট জে ওপেনহfইমার ছিলেন একজন মার্কিন পদার্থবিদ, যাকে 'পারমাণবিক বোমার জনক' বলা হয়। ছবিটি মুক্তির সাথে সাথে এই বিজ্ঞানীর জীবন নিয়ে নতুন করে মানষের মনে আগ্রহ জন্ম নিয়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বই-তে দাবি করা হয়েছে , ওপেনহাইমারকে ভারতে আগমন ও এখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
ভারতীয় পদার্থবিদ হোমি জাহাঙ্গীর ভব-এর জীবনী 'হোমি জে ভব: আ লাইফ'- এ এই দাবি করেছেন লেখক বখতেয়ার কে দাদাভয়। বইটিতে ওপেনহাইমার ও ভবর বন্ধুত্ব সম্পর্কের বর্ণনা আছে।
বইয়ের বর্ণনা অনুযায়ী, 'সমস্ত সম্ভাবনা মতে, যুদ্ধ (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ) শেষ হওয়ার পর ওপেনহাইমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় ভবর। এবং তারা দুইজন বন্ধু হয়ে ওঠেন। ভবর মতো ওপেনহাইমারও সংস্কৃতি মনা ছিলেন বলে এটা অবাক করার মতো কোন বিষয় নয়। তিনি (ওপেনহাইমার) সংস্কৃত ভাষা শেখেন এবং ল্যাটিন ও গ্রিক ভাষাতেও দক্ষ ছিলেন।'
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে তার তৈরি পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের পর ওপেনহাইমার তীব্র হতাশায় ভুগতে থাকেন। যদিও বোমা তৈরির সময় তার এমন নৈতিক দ্বিধা ছিল না। তিনি নিজের সহকর্মীদের আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, আমরা কেবল নিজেদের কাজ করছি। অস্ত্রটি কীভাবে ব্যবহার করা উচিত সে সম্পর্কে সিদ্ধান্তের জন্য আমরা দায়ী নই।
কিন্তু বোমা বিস্ফোরণের পর আরো অস্ত্র, বিশেষত হাইড্রোজেন বোমা তৈরির বিপক্ষে যুক্তি দেখান ওপেনহাইমার।
তার এমন মত পরিবর্তনের কারণে ১৯৫৪ সালে ওপেনহাইমার মার্কিন সরকারের তদন্তের মুখে পড়েন। বিবিসি জানায়, এসময় তার নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করা হয়। তিনি আর কোন নীতিগত সিদ্ধান্তে জড়িত হতে পারেননি। ওপেনহাইমার ও তার স্ত্রী ক্যাথরিন সাম্যবাদী ছিলেন বলেও অভিযোগ ছিল।
এমন দৃশ্যপটে, বইয়ের বর্ণনা অনুযায়ী, ভবর পীড়াপীড়িতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু ওপেনহাইমারকে ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
বখতিয়ার দাদাভয় এই ঘটনা বর্ণনায় লেখেন, '১৯৫৪ সালে যখন ওপেনহাইমার তার নিরাপত্তা ছাড়পত্র হারিয়েছিলেন তখন সম্ভবত ভবর হস্তক্ষেপে জওহরলাল নেহরু তাকে একাধিকবার ভারত সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং এমনকি যদি তিনি ইচ্ছা করেন তবে স্থায়ী অভিবাসীও হতে পারতেন।'
টাইমস অব ইন্ডিয়ার মতে, তবে এই পদার্থবিদ আমন্ত্রণে সাড়া দেননি। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে সব অভিযোগ থেকে রেহাই পাওয়ার আগ পর্যন্ত দেশত্যাগ করা উচিত হবে না বলে মনে করেছিলেন তিনি।
বইটিতেও একই ধরনের কথা উল্লেখ করা হয়। দাদাভয় লেখেন, 'তিনি (ওপেনহাইমার) আশঙ্কা করছিলেন, ভারতে যাওয়ার আবেদন কেবল বাতিলই করা হবে না; বরং তাকে ঘিরে আরো বেশি সন্দেহ তৈরি হবে।'