বিরোধিতার মধ্যেই জর্ডানে অনুমোদন পেল 'দমনমূলক' সাইবার ক্রাইম আইন
জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ গত শনিবার (১২ আগস্ট) 'বিতর্কিত' সাইবার ক্রাইম বিলটি অনুমোদন করেছেন। ফলে আইনটি রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র আই রাইয়ে প্রকাশের এক মাস পর থেকে দেশটিতে কার্যকর হবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার জর্ডানের সিনেটে সংশোধনের পর বিলটি পাশ করা হয়। তারও আগে গত মাসে দেশটির নিন্মকক্ষে বিলটি অনুমোদন করা হয়।
তবে বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতা ও মানবধিকার গোষ্ঠীগুলো ইতোমধ্যেই বিলটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের আশঙ্কা, আইনটি ব্যবহার করে অনলাইনে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ দমন করা সম্ভব হবে।
দেশটির নতুন সাইবার ক্রাইম আইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ঘিরে যে পোস্ট, সেগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনৈতিকতার উসকানি, ধর্মের প্রতি অবজ্ঞা, জাতীয় ঐক্যকে ক্ষুণ্ণ করার মতো বিষয়গুলো নিয়ে পোস্ট করাকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
এছাড়াও অনলাইনে পুলিশ সদস্যদের নাম বা ছবি প্রকাশ করে অভিযোগ কিংবা অনলাইনে পরিচয় গোপন রাখার মতো কার্যক্রমকে বেআইনি হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
পার্লামেন্টে ভোটাভুটির আগে অবশ্য হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ মোট ১৪ টি মানবধিকার গোষ্ঠী যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে আইনটিকে ড্রাকোনিয়ান (দমনমূলক) আইন বলে অভিহিত করেছে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, অস্পষ্ট ধারাগুলোর কারণে মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার প্রয়োগ করা ব্যক্তিদের শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে করে বিচারকরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নাগরিকদের দোষী সাব্যস্ত করতে বাধ্য হবেন।
এমনকি জর্ডানের অন্যতম মিত্র ও বৃহত্তম দাতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও আইনটির সমালোচনা করেছে। অবশ্য গত কয়েক বছর থেকেই জর্ডানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক নজরদারি চলছে। গত ডিসেম্বরে শ্রমিক বিক্ষোভের লাইভ ভিডিও শেয়ার করায় টিকটক বন্ধ করে দেয় সরকার।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ২০২২ সালের রিপোর্টে বলা হয়, জর্ডান সরকার ক্রমবর্ধমানভাবে প্রতিবাদকারী এবং সাংবাদিকদের হয়রানি করছে। শান্তিপূর্ণ বিরোধী দলকে দমন করতে এবং সমালোচনামূলক কণ্ঠকে রুখে দিতে তারা পদ্ধতিগতভাবে কাজ করছে।