ফ্রান্সে সরকারি স্কুলে মেয়েদের আবায়া পরা নিষিদ্ধ
ফ্রান্সের সরকারি স্কুলগুলোতে মেয়েদের আবায়া পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির শিক্ষামন্ত্রী। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর নতুন শিক্ষাবর্ষ আরম্ভ হওয়ার দিন থেকেই কার্যকর হবে এ নিষেধাজ্ঞা। খবর বিবিসির।
ফ্রান্সে সরকারি স্কুল এবং সরকারি ভবনগুলোতে ধর্মীয় প্রতীক বা নিদর্শন ব্যবহারের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে; এটি ফ্রান্সের ধর্মনিরপেক্ষতার আইন ভঙ্গ করে বলে তাদের যুক্তি।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সাল থেকেই দেশটিতে সরকারি স্কুলে মাথায় স্কার্ফ পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ফ্রান্সের টিএফওয়ান টিভিকে দেশটির শিক্ষামন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আতাল বলেন, "যখন আপনি একটা শ্রেণীকক্ষে ঢুকবেন, তখন কোনো শিক্ষার্থীর দিকে তাকিয়েই তার ধর্ম শনাক্ত করার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয়। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, স্কুলে আর আবায়া পরা যাবে না।"
ফ্রান্সে স্কুলগুলোতে আবায়া পরা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্কের পর এ সিদ্ধান্ত নিলেন দেশটির শিক্ষামন্ত্রী।
সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রান্সের স্কুলগুলোতে আবায়া বা বোরকা পরা শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভেদ দেখা দিয়েছে। ডানপন্থী দলগুলো স্কুলে এই পোশাক নিষিদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিলেও, বামপন্থী দলগুলো মুসলিম নারী ও মেয়েদের অধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "ধর্মনিরপেক্ষতা মানে হলো স্কুলের মাধ্যমে নিজেকে মুক্ত করার স্বাধীনতা। তিনি আবায়াকে একটি 'ধর্মীয় নিদর্শন' বলে উল্লেখ করেন।
তিনি জানান, গ্রীষ্মের ছুটির পর স্কুল পুনরায় খোলার আগেই জাতীয় পর্যায়ে সবার কাছে তিনি নতুন নিয়মটি আরও স্পষ্ট করবেন।
২০১০ সালে ফ্রান্সে পুরো মুখ ঢেকে রাখা নিকাব পরা নিষিদ্ধ করা হয়। ওই সময়ও সরকারের এমন সিদ্ধান্তে দেশটির ৫ মিলিয়নের মুসলিম সম্প্রদায় ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছিল ।
উনিশ শতক থেকেই ফ্রান্সে স্কুলগুলোতে ধর্মীয় নিদর্শন ব্যবহারের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। স্কুলে শিক্ষার্থীদের ক্যাথলিক প্রভাবমুক্ত রাখতে খ্রিস্টানদের ধর্মীয় প্রতীক বড় ক্রুশ পরাও নিষিদ্ধ রয়েছে।
আবায়া নিষিদ্ধের এ সিদ্ধান্ত শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে গ্যাব্রিয়েল আতালের নেওয়া প্রথম কোনো বড় নীতিমালা বিষয়ক সিদ্ধান্ত। ৩৪ বছর বয়সে তিনি ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন।
তবে অনেক মুসলিম এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিত্ব করা জাতীয় সংস্থা সিএফসিএম বলেছে, শুধুমাত্র পোশাকই 'ধর্মীয় চিহ্ন' নয়।