পর্যটক আকৃষ্ট করতে ফি অর্ধেক কমাল ভুটান
কোভিড বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার এক বছর পরেও পুরোপুরি গতি আসেনি ভুটানের পর্যটন খাতে। এবার এ খাত পুনরুদ্ধারের জন্য পর্যটকদের দৈনিক ফি অর্ধেক কমিয়ে ১০০ ডলার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।
দুই বছরের করোনা বিধিনিষেধ শেষে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভুটান বিদেশি পর্যটকদের একদিন থাকার জন্য 'সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ফি' ৬৫ ডলার থেকে বাড়িয়ে ২০০ ডলারে উন্নীত করে। এক্ষেত্রে তারা বলেছিল যে, পর্যটকদের কারণে সৃষ্ট কার্বন নিঃসরণ কমাতে এই এসডিএফ ফি ব্যবহৃত হবে।
শুক্রবার সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী সেপ্টেম্বর থেকে পর্যটকদের এক রাত থাকার নতুন এ ফি কার্যকর হবে, যা পরের চার বছর বহাল থাকবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, "কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে পর্যটন খাতের শক্তিশালী ভূমিকা বিবেচনায় নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।"
প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বিচ্ছিন্ন থাকা ভুটান ১৯৭৪ সালে প্রথমবারের মতো বিদেশি পর্যটকদের জন্য দরজা খুলে দেয়। ৩০০ পর্যটক দিয়ে প্রথম বছর শুরু করেছিল দেশটি, অথচ কোভিডের আগের বছর ২০১৯ সালে ভুটানে বিদেশি পর্যটক গিয়েছিলেন ৩১৫,৬০০ জন। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালের তুলনায় তা ১৫ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।
দক্ষিণ এশিয়ার এই ছোট্ট দেশটি দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাপক হারে পর্যটনকে নিরুৎসাহিত করে এসেছে এবং পর্বতচূড়ার পবিত্রতা রক্ষায় পর্বতারোহণ নিষিদ্ধও করেছে। আগের নির্ধারিত পর্যটক ফি'র কারণে পর্যটকদের আনাগোনাও কমে যাচ্ছিল, বরং ভুটানের চেয়ে নিকটবর্তী নেপালে পর্যটক যাচ্ছে বেশি।
এ অবস্থায় ভুটান তাদের তিন বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পর্যটন খাতের অবদান প্রায় ৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে উন্নীত করতে চাইছে।
ভুটানের পর্যটন বিভাগের মহাপরিচালক দর্জি ধ্রাধুল বলেন, পর্যটকদের ফি অর্ধেকে নামিয়ে আনায় আগামী সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর পর্যটনের ভরা মৌসুমে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে বলে প্রত্যাশা তার।
গত জুনে ভুটান সরকার পর্যটকদের ভুটানে থাকার সময়কাল এবং ফি বিষয়ক নিয়ম শিথিল করেছিল, কিন্তু তাতে পর্যটকদের সংখ্যা প্রত্যাশানুরূপভাবে বাড়েনি।
ধ্রাধুল বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজারের বেশি পর্যটক ভুটান ভ্রমণ করেছেন, কিন্তু এর মধ্যে ৪২ হাজারই ছিলেন ভারতীয় পর্যটক, যাদের কিনা একদিন থাকার জন্য মাত্র ১২০০ ভারতীয় রূপি (১৪.৫ ডলার) ফি দিতে হয়।
বর্তমানে ভুটানের পর্যটন খাতে দেশটির ৫০,০০০ নাগরিক কর্মরত রয়েছেন এবং কোভিড মহামারির আগে তিন বছরে এ খাত থেকে বার্ষিক আয় ছিল ৮৪ মিলিয়ন ডলার।