ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত বন্ধে সৌদি আরবের প্রিন্স সালমান কী করছেন?
ইসরায়েল ও গাজায় সহিংসতার মাঝেই সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস টেলিফোনে কথা বলেছেন। দুই নেতার আলোচনায় গাজায় সামরিক অবস্থা, বেসামরিক নাগরিকদের পরিস্থিতি এবং সর্বোপরি উক্ত অঞ্চলের অবনতিশীল সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সৌদির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আজ (মঙ্গলবার) এ তথ্য জানিয়েছে। ফোনকলে প্রিন্স সালমান আশ্বস্ত করেন যে, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে সৌদি আরব সমস্ত আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক পক্ষের সাথে যোগাযোগ করছে। চলমান সংঘাত বন্ধে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি।
একইসাথে প্রিন্স সালমান উভয় পক্ষকেই আন্তর্জাতিক মানবিক সব আইন মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছেন। এছাড়াও বেসামরিক নাগরিকদের যাতে লক্ষ্যবস্তু না করা হয়, সেটিরও অনুরোধ করেছেন।
মাহমুদ আব্বাসকে মোহাম্মদ বিন সালমান আরও জানান, ফিলিস্তিনি জনগণের একটি যথোপযুক্ত জীবনযাপনের বৈধ অধিকার অর্জন, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার অর্জন ও ন্যায়সংগত, স্থায়ী শান্তি অর্জনের জন্য সবসময় পাশে থাকবে রিয়াদ।
ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট আব্বাস সৌদি প্রিন্স সালমানকে আলোচনা শেষে ধন্যবাদ জানান। একইসাথে ফিলিস্তিনি জনগণ এবং তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবির পক্ষে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টার জন্য তার প্রশংসা করেন।
গত শনিবার সকালে গত কয়েক বছরের মধ্যে ইসরায়েলে সবচেয়ে বড় আক্রমণ চালায় হামাস। এ আক্রমণে মাত্র ২০ মিনিটের ব্যবধানে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থান ও অবকাঠামো লক্ষ্য করে ৫ হাজার রকেট ছোড়ে বলে জানিয়েছে হামাস।
হামাসের আক্রমণে অন্তত ৮০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আড়াই হাজারের বেশি ইসরায়েলি।
এই হামলা সম্পর্কে হামাসের উপ-প্রধান সালেহ আল-আরোরি জানান, তাদের এ লড়াইয়ের উদ্দেশ্য স্বাধীনতা অর্জন। বিজয়, মুক্তি ও স্বাধীনতা না আসা পর্যন্ত হামাস লড়াই চালিয়ে যাবে।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরাকে আল-আরোরি বলেন, "এটা কোনো (চোরাগোপ্তা) অপারেশন নয়। আমরা সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করেছি। আমার লড়াই চালিয়ে যেতে এবং লড়াইয়ের পরিধি বাড়াতে চাই। আমাদের প্রধান লক্ষ্য একটা: আমাদের স্বাধীনতা এবং আমাদের পবিত্র স্থানগুলোর স্বাধীনতা।"
অন্যদিকে ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় অন্তত ৫০০ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া কয়েক ডজন আহত ফিলিস্তিনির অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হবে বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
হামাসের আকস্মিক হামলার পর জনগণের উদ্দেশে দেওয়া বিবৃতিতে হামাসকে 'নজিরবিহীন মূল্য' চুকাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, "ইসরায়েলের জনগণ, আমরা যুদ্ধের মধ্যে রয়েছি (উই আর অ্যাট ওয়ার)। ...আজ সকালে ইসরায়েল রাষ্ট্র ও এর জনগণের বিরুদ্ধে খুনে হামলা চালিয়েছে হামাস।"
হামাসের হামলার কয়েক ঘণ্টা পর নেতানিয়াহুর এই ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়। তিনি বলেন, "পাশাপাশি আমি সর্বোচ্চ সংখ্যায় রিজার্ভ সেনাদের সমবেত করার নির্দেশ দিয়েছি। যাতে এমন বড় ও তীব্র পাল্টা হামলা চালানো যায়, শত্রুপক্ষ আগে কখনোই যেমন হামলার সম্মুখীন হয়নি।"