গাজায় স্থল অভিযান: ইসরাইলের জন্য কেবলই দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠবে!
ইসরাইলি সেনা প্রকৌশলী ২৬ বছর বয়সী আইয়াল গাজায় প্রথম ঢোকার দুঃস্বপ্ন এখনো ভোলেননি। গাজায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বানানো সুড়ঙ্গ ধ্বংস করার জন্য তার বাহিনীকে পাঠিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। গাজায় সুড়ঙ্গ-জাল গড়ে তুলেছে হামাস। যোদ্ধাদের ওৎ পেতে থাকা এবং সুযোগ পেলেই ইসরাইলি ভূখণ্ডে হামলা চালাতে এ সব সুড়ঙ্গ পথ তৈরি করা হয়। অবরুদ্ধ অঞ্চলের জন্য পণ্যও আনা হয় এ পথে।
এ নিয়ে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে 'এভরি থিং ইউ ক্যান ইমাজিন অ্যান্ড ওয়ার্স অ্যাওয়েটস ইসরাইলি আর্মি ইন গাজা' নিবন্ধ লিখেছেন দৈনিকটির সাইবার নিরাপত্তা সাংবাদিক মেহুল শ্রীবাস্তবা। এর আগে তিনি বিদেশ সংবাদদাতা হিসেবে ইস্তাম্বুল এবং জেরুজালেমেও দায়িত্ব পালন করেন।
নয় বছর বাদে এবারে গোটা হামাস গোষ্ঠীকে ধ্বংস করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তার সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আইয়ালের বাহিনীকে গাজায় পাঠানোর প্রস্তুতি জোরেশোরে চলছে। (হয়ত এ লেখা আপনি যখন পড়ছেন তখন গাজায় ঢোকার নানামুখী রক্তাক্ত আগ্রাসনে নেমেছে ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ নামে পরিচিত ইসরাইলি বাহিনী।) আইয়াল হাড়ে হাড়েই জানে তার এবং তার সহসেনাদের জন্য সামনের দিনগুলোতে কী ভয়াবহ সময় বিকট হা করে অপেক্ষা করছে।
গাজায় ঢোকার কথা বলতে যেয়ে তিনি বলেন যে কাজটা হবে দুঃস্বপ্ন। তবে এখানে দুঃস্বপ্নের সাথে পার্থক্য হলো ঘুম ভাঙ্গলে খোয়াব মিলিয়ে যায়। কিন্তু এটা হলো বাস্তব।
ফিলিস্তিনি অবরুদ্ধ এ ভূখণ্ড ২০০৭ থেকে নিয়ন্ত্রণ করছে হামাস। তিনি বলেন, গাজায় যা কিছু পাওয়া যাবে ধরতে গেলে দেখা যাবে ওটা আসলে পেতে রাখা বোমা। সেখানে যে মানুষের দেখা পাওয়া যাবে সেই হয়ত 'সন্ত্রাসী'। (ইসরাইল বিরোধী গেরিলা যোদ্ধাদের এ ভাষায় অভিহিত করে। ১৯৭১'এ বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের যেমন বলা হতো দুষ্কৃতকারী!)।
কখনো কখনো পাল্টা জবাব দেওয়ার আগেই ইসরাইলি সেনাদের চেয়ে হামাস সদস্যরা দ্রুততর ছুটতে পারবে। অমন পরিস্থিতিতে নিজের বেঁচে থাকার পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে প্রশিক্ষণের ওপর।
৭ অক্টোবর আল কুদস তুফান নামের হঠাৎ চালানো হামাসের অভিযানে অন্তত ১২০০ ইসরাইলি সেনা এবং সাধারন মানুষ নিহত হয়েছে। সামরিক –বেসামরিক মিলিয়ে আটক হয়েছে অন্তত একশ ইসরাইলি। নজিরহীন এই অভিযানের জবাবে হামাসের শেকড় উপড়ে ফেলতে ঘনবসতিপূর্ণ গাজায় এবারে আগ্রাসনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইল।
গাজার ভূখণ্ডে আগ্রাসন চালাতে গেলে ইসরাইলি বাহিনীকে কী অবস্থায় পড়তে হতে পারে তা নিয়ে কথা বলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইহুদ ওলমার্ট। তিনি বলেন, এই অভিযানের বিষয় যা কিছু ভাবতে এবং কল্পনা করতে পারেন তার সবই হবে ভয়াবহ রকমের খারাপ। ইহুদ ওলমার্ট নিজেই ২০০৮'এ গাজায় অপারেশন কাস্ট ল্যান্ড নামের অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন। তৎকালীন নিজ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই তিনি যে উপরের কথাগুলো বলেছেন তা ধরেই নেওয়া যায়। তিনি আরো বলেন, এমন অভিযান মোটেও ইসরাইল বা গাজাবাসী উভয়ের কারো জন্যেই সহজ বা ভালো কিছু হবে না।
দুনিয়া জুড়ে নানা গাল-গল্প সৃষ্টিকারী, বহু চলচ্চিত্রের মসলার যোগানদার ইসরাইলি গুপ্তচর ও গোয়েন্দা বাহিনীগুলোর করুণ ব্যর্থতাই প্রকাশ পেয়েছে ৭ তারিখের হামাসের অভিযানে। এ বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করে ওলমার্ট আরো বলেন, ইসরাইলি বাহিনী হয়ত নিজেদের অজান্তেই অজানা নতুন ধরনের বন্দুকবাজ যোদ্ধা বা নতুন প্রযুক্তির আরো ক্ষমতা সম্পন্ন এবং বড়সড় রকেট হামলা বা ট্যাংক বিধ্বংসী রকেটের আওতায় যেয়ে পড়বে। (তারা এরকম কিছুর সাথে আগেই পরিচিত হয়েছে বা ঠেকানোর কিংবা আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ পেয়েছে তা বলা যাবে না।)
অতীতে ইসরাইল নিজ বাহিনীকে সীমিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য পাঠিয়েছে গাজায়। ধরুন, তাদেরকে গাজার বিশেষ এলাকায় সুড়ঙ্গ-জাল ধ্বংস করার দায়িত্ব দেওয়া হতো। কিন্তু এবারে নেতানিয়াহু হামাসের বিরুদ্ধে পুরোপুরি বিজয় অর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। সামরিক দিক থেকে নগর-যুদ্ধের এ অভিযান অতি জটিল। পদে পদে নানা সমস্যায় ভরপুর। অভিযান সফল করতে কতো দিন লাগবে এবং এ লক্ষ্য অর্জনে ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলিদের কী পরিমাণে রক্ত-মূল্য দিতে হবে তা কেউ জানেন না। বা আঁচও করা যাচ্ছে না।
২০১৪'এর ইসরাইলি হামলার পরও হামাসের তৎপরতায় ভাটা পড়েনি। বরং সামরিক সক্ষমতা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। রকেট প্রযুক্তি যথেষ্ট শক্তিশালী হয়েছে। লাখো রকেট মজুদ আছে। ড্রোন ব্যবহারে ঈর্ষণীয় দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে। প্যারাগ্লাইডার দিয়ে ছত্রী সেনা নামিয়েছে। মোট কথা হামাসের চেয়ে কয়েকশগুণ দক্ষ সেনাদল হিসেবে দাবিদার এক বাহিনীকে এক কথায় ভড়কে দিয়েছে।
'গাজা মেট্রো নামে পরিচিত শত শত কিলোমিটার গোপন সুড়ঙ্গ গড়ে তুলেছে। ভূগর্ভস্থ এ পথে যোদ্ধাদের এবং অস্ত্র-শস্ত্রকে লোকচক্ষুর অগোচরে আনা নেওয়ার কাজটি এ গোপন পথে সারা হয়। এ ছাড়া, নগর-গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণও চলে এখানে।
৭ তারিখের আগে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী মনে করতো, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে গড়ে তোলা স্পর্শক বা সেন্সরগুলোর মাধ্যমে তারা হামাস যোদ্ধাদের গোপন চলাফেরার ওপর পাকাপাকি নজরদারি করছে। বা তাদের সম্পর্ক জানতে পারছে। এ ছাড়া সুড়ঙ্গ পথে যেন ইসরাইলে ভেতরে হানা দেওয়া না যায় সে লক্ষ্যে যথেষ্ট প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা গেছে। ৭ তারিখে বুঝতে পারল, সেই পুরানো কথায় বলা যায়, সকলি গরল ভেল। তাসের ঘর।
গাজা সীমান্তে এখন তিন লাখ ইসরাইলি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ইসরাইলি বিমান বাহিনী রাতদিন গাজার বোমা ফেলছে। বলা হচ্ছে, হামাসকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে। ১৯৮২ সালের পর আর এরকম আগ্রাসন চালায়নি ইসরাইল। সে বছর লেবাননে আগ্রাসন চালিয়ে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের উৎখাত এবং বৈরুত একটি বন্ধু প্রতিম সরকার গঠনের চেষ্টা করেছিল তেল আবিব।
ইসরাইলি সেনা মুখপাত্র মেজর নির দিনার গাজায় আসন্ন অভিযান সম্পর্কে বলেন, হামাস খুব ভালো প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু সে কথা আমরা জানি। ইসরাইলও তার অস্ত্র-শস্ত্রের উন্নয়ন ঘটিয়েছে। উন্নয়ন ঘটিয়েছে রণ-পদ্ধতির। দ্বিমুখী মনস্তাত্ত্বিক লড়াই বলতে পারেন একে। আমরা জানি যে তারা আসন্ন অভিযানের বিষয় জানে। তারাও জানে যে আমরা তাদের সম্পর্কে জানি।
২০১৪'এর আগ্রাসনে অন্তত ৬৬ ইসরাইলি সেনা ও ছয় বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছ। অন্যদিকে ফিলিস্তিনে ১৪৮৯ নিরীহ বেসামরিক মানুষসহ অন্তত ২১৩৩ নিহত হয়ে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া হামাসের পক্ষেই গেছে। হামাসকে এ অসম যুদ্ধে বিজয়ী হিসেবে গণ্য করা হয়। নিজ ক্ষমতাবলয় অক্ষুণ্ণ রাখতে পারে হামাস।
হামাসের সাথে আসন্ন লড়াইয়ের বিষয়ে এরই মধ্যে নেতানিয়াহু স্বীকার করেন যে,এটি হবে দীর্ঘস্থায়ী এবং বেদনাদায়ক। মধ্যপ্রাচ্যের সব চেয়ে সক্ষম, শক্তিশালী এবং দক্ষতার দাবিদার ইসরাইলি বাহিনীকে মোকাবেলা করতে হবে হামাসের পোড় খাওয়া নগর-যুদ্ধের রণকৌশলকে। ইসরাইলি প্রযুক্তিগত প্রাধান্যকে বানচাল করতে নিচু প্রযুক্তি লাগসই ব্যবস্থা আশ্রয় নেবে হামাস। পাশাপাশি ওঁত পেতে থাকা বন্দুকবাজ মোতায়েন করে ঘাটিগুলোকে শক্তিশালী করা আছে। গাজায় মাটির তলে গড়ে তোলা সুড়ঙ্গ-জালের দৌলতে কৌশলগত সুবিধাগুলো থাকবে হামাসের পক্ষে । একই সাথে এ পরিস্থিতি স্থল অভিযান চালানোর বেলায় ইসরাইলকে জটিলতা উপহার দিবে। ইসরাইলি বাহিনীর সাবেক কর্নেল শিমন আরাদ স্বীকার করেন, এ কারণে এর আগে গাজার ভেতরে ঢুকে স্থল অভিযান চালাতে আগ্রহী হয়নি তেল আবিব।
এমনকি ২০২১'এর ১১ দিনের লড়াইতেও ইসরাইলি বাহিনী গাজা থেকে দূরেই থেকেছে। এই রণকৌশল শাপে বর হয়েছে হামাসের জন্য। সমর বিশ্লেষকরা একে বলেন, অ্যান্টি-এক্সিস অ্যান্ড এরিয়া ডিনাইল বা এ২/এডি। অর্থাৎ শত্রুকে নিজ এলাকায় ঢোকা থেকে বিরত রাখা এবং ওই এলাকার মধ্যে শত্রুর গতিবিধির স্বাধীনতা সীমিত করে দেওয়া।
ইসরাইলি বাহিনী অন্যদিকে প্রয়োগ করবে কথিত বিজয়ের তত্ত্ব বা ডকট্রিন অব ভিক্টরি। এ অনুযায়ী, পূর্ব নির্ধারিত অনেকগুলো লক্ষ্যে দ্রুত আঘাত হানবে ইসরাইলি বিমান বাহিনী।
এটি আমরা এরই মধ্যে দেখতে পাচ্ছি। ইসরাইলি জঙ্গি বিমানগুলো গাজার নির্বিচারে অবিরাম বোমা বর্ষণ করে চলেছে। কেবল মাত্র জ্বালানি নেওয়ার প্রয়োজনে হামলায় বিরতি দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সময়ই উড়ন্ত অবস্থায় জ্বালানি ভরছে ইসরাইলি জঙ্গি বিমানগুলো।
হামাসের পুনরায় একত্রিত হওয়ার তৎপরতাকে নস্যাৎ করাই এমন অভিযানের সারকথা। এ ছাড়া, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হামলার গতি কমানোর রাজনৈতিক চাপ দেওয়া আগেভাগে বেশির ভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চাচ্ছে ইসরাইল। মার্কিন সামরিক একাডেমির মডার্ন ওয়ার ইন্সটিটিউটের নগর-যুদ্ধ বিষয়ক সাবেক প্রধান মেজর জন স্পেন্সার বলেন, খুবই রক্তক্ষয়ী হবে এ অভিযান। নগর-যুদ্ধের প্রকৃতি মর্জি মাফিক বদলানো যায় না। ব্যাপক পরিমাণে ক্ষয়-ক্ষতি ঘটতে চলেছে।
নগর-যুদ্ধের প্রশিক্ষণে ইসরাইল সব সময়ই ব্যাপক তৎপর। দক্ষিণ ইসরাইলের বালাদিয়াতে পাঁচ হাজার একর জুড়ে এ রকম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। ২০০৫'এ গড়া কেন্দ্রটিতে মধ্যপ্রাচ্যের স্বাভাবিক নগর কাঠামো নির্মাণের অনুকরণ করা হয়েছে। কয়েকটি মসজিদসহ একটি গির্জা এবং ছয়শ দালান-কোঠা রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে গলি-ঘুপচি।
দরজা ভেঙ্গে বাড়িতে ঢুকতে হলে সামরিক কৌশল হিসেবে ইসরাইল পাশের দেয়াল ভেঙ্গে ঢোকে। এতে দরজায় বোমার ফাঁদ বসানো থাকলে তা এড়ানো যায়। এ ছাড়া, যুদ্ধ এলাকায় পথ পরিষ্কার করতে সশস্ত্র এবং তিনতলা সমান উঁচু বুলডেজার নামায়।
'আরবান ওয়ার ইন দ্যা টুয়েনটি ফাস্ট সেঞ্চুরি'র লেখক এবং এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অ্যান্থনি কিং বলেন, বিমান শক্তির স্তর গড়ে তোলার কৌশল নিতে পারে ইসরাইল। এ স্তরের সর্ব নিচে থাকবে মাইক্রো ড্রোন বা খুদে উড়োযান এবং অ্যাটাক হেলিকপ্টার বহর। নজরদারির এবং আত্মঘাতী ড্রোন। তারপর থাকবে জঙ্গি বিমান বহর। সবচেয়ে উঁচুতে থাকবে কৌশলগত নজরদারির বিমান। এ সব স্তরের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রাখা হবে।
তিনি আরো বলেন, এরপর আমরা হয়ত দেখতে পাবো সাঁজোয়া বহর গাজার রাস্তায় দিয়ে ছুটছে এবং গোলন্দাজ বাহিনী কামান দেগে পথ করছে। পুরোটাই আগাগোড়া ধ্বংসাত্বক হবে বলে জানান তিনি।
তার আগেও কাহিনি আছে। গাজায় হামাসের শক্তিশালী ঘাটিগুলো পর্যন্ত যেতে হলে কয়েক দফা প্রতিরক্ষা ব্যূহ ভেদ করতে হবে ইসরাইলকে। এ ব্যূহতে থাকবে মাইন, ওৎ পেতে থাকা যোদ্ধা এবং মর্টার হামলার লক্ষ্যকেন্দ্র। ইসরাইলি সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা নাদাভ মোরাগ এ তথ্য দেন।
গাজার শহরগুলোর উপকণ্ঠে ইসরাইলকে স্বাগত জানানোর জন্য ভারি মর্টার, মেশিনগান, ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র, বন্দুকবাজ এবং সম্ভবত আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীরা অপেক্ষা করছে। এ সব ভেদ করে এগোতে গেলে কঠোর লড়াই চালাতে হবে। হয়ত ইসরাইল ব্যবহার করবে স্পনজ বোমা। এ জাতের রাসায়নিক বোমা ছোটখাটো ঢোকার পথকে বন্ধ করে দেয়। এমন বোমা ব্যবহারে সুড়ঙ্গ ধ্বংস হয় না। বা প্রতি সুড়ঙ্গের ভেতরে থাকা শক্রকে বের করে আনার দরকার পড়ে না বলে জানান স্পেন্সার। সুড়ঙ্গে ঢোকার বা বের হওয়া মুখগুলো আটক যায়।
নগর-যুদ্ধ প্রকৃতিগত ভাবেই ধ্বংসাত্মক। ফালুজায় এটি প্রত্যক্ষ করেছে আমেরিকা। একইভাবে মারিউপোলসহ ইউক্রেনের শহরগুলোতে এটি টের পেয়েছে রাশিয়া।
হামাসকে নির্মূল করা এবং আটক ইসরাইলিদের উদ্ধার করার কাজ সত্যিই জটিল যুদ্ধগুলোর মধ্যে জটিলতম। কেউ কেই এখনি বলছেন, ইসরাইলি বাহিনী এক অসম্ভব অভিযানে নামতে যাচ্ছে।
নেতানিয়াহু এবং ইসরাইলি সেনাবাহিনীর প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে সাবেক ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী ওলমার্ট বলেন, তারা একটি নৈতিক সমস্যার মুখে পড়েছে। হামাসকে আক্রমণ করতে বিমান শক্তি ব্যবহার করা হলে হতহতের ঝুঁকি বাড়বে। অন্যদিকে স্থল অভিযান শুরু করা হলে সুনির্দিষ্ট ভাবে লক্ষ্যে হয়ত আঘাত হানা যাবে। কিন্তু তাতে ইসরাইলি সেনারা পড়বে ঝুঁকিতে। আর ইসরাইলি জনমত সম্পর্কে যা বুঝি তা হলো তেল আবিবকে কম ঝুঁকি নেওয়ার জন্যেই চাপ দেবে ইসরাইলের মানুষ।
- সূত্র: ফিন্যান্সিয়াল টাইমস