ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ অব্যাহত থাকলে নতুন ফ্রন্টে যুদ্ধের সম্ভাবনা আছে: ইরান ও হিজবুল্লাহ
গাজা উপত্যকাকে অবরুদ্ধ করে রাখলে যুদ্ধের নতুন ফ্রন্ট খোলার সম্ভবনা রয়েছে বলে সতর্ক করেছে ইরান।
লেবাবন সফরকালে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেছেন, 'গাজায় চলমান আগ্রাসন, যুদ্ধাপরাধ ও অবরোধের পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধের নতুন ফ্রন্ট খোলার বাস্তবিক সম্ভাবনা আছে।' তার এ বক্তব্য হামাস-ইসরায়েল সংঘাতকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আরও জোরালো হলো।
বৃহস্পতিবার লেবাননে এসেই তেহরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ'র নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করেন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান।
তিনি আরও জানান, গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আমি লেবাননের কর্তৃপক্ষের (সরকারের) সাথেও আলাপ করব। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের প্রতি ইরান তার রাজনৈতিক ও গণমাধ্যম সমর্থন দৃঢ়ভাবে অব্যাহত রেখেছে।'
তেহরানের এই বার্তার পর হিজবুল্লাহ বলেছে, তারাও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়তে প্রস্তুত রয়েছে।
হিজবুল্লাহ পরিচালিত লেবাননের আল-মানার টেলিভিশন চ্যানেল হামাসের উপ-মহাপরিচালক শেখ নাইম কাশেমকে উদ্ধৃত করে। তিনি বলেছেন, 'সঠিক সময়ে যেকোনো ধরনের অ্যাকশন নিতে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।'
হিজবুল্লাহ'র প্রধান হাসান নসরুল্লাহ'র সাথেও বৈঠক করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠকের বিষয়ে হিজবুল্লাহ'র বিবৃতিতে বলা হয়, 'ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহ ও চলমান ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপটে উভয় পক্ষের অবস্থান ও যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে– সেবিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।'
বৈরুতের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা দ্বিতীয় ফ্রন্ট খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেছেন, 'গাজা ও ফিলিস্তিনের ওপর মানবিক ত্রাণ সাহায্য পৌঁছানোর অবরোধ ও যুদ্ধাপরাধ এভাবে চলতে থাকলে– অন্যান্য প্রতিরোধ শক্তিগুলোর এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সব রকমের সম্ভাবনা রয়েছে।'
গাজায় পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করাসহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করাকে ইসরায়েলি যুদ্ধাপরাধের দৃষ্টান্ত হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।
যদিও গত শনিবার (৭ অক্টোবর) ইসরায়েলে হামাসের হামলায় কোনভাবে জড়িত ছিল না বলে জানিয়েছে ইরান ও হিজবুল্লাহ।
এদিকে ইসরায়েলকে সিদ্ধান্ত বদলানোর আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিশ্বসংস্থাটির একজন মুখপাত্র বলেছেন, গাজা থেকে নাগরিকদের পালানোর এই ঘটনা 'ইতোমধ্যেই ট্রাজেডিতে রূপ নেওয়া ঘটনাকে একটি চরম বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে পরিণত করবে।'
জাতিসংঘের এ আহ্বানের আগে, ইসরায়েলের কট্টর সমর্থক ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র তেল আবিবকে হামাসের বিরুদ্ধে পাল্টা-আঘাত হানার ক্ষেত্রে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানায়।
রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ের মাধ্যমে গাজার লাখ লাখ মানুষকে নিরাপদ অবস্থানে যাওয়ার সুযোগ দিতে পারতো মিশর। কিন্তু, স্বৈরশাসক আব্দেল ফাত্তাহ এল-সিসির সরকার তা না করার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে। মানবিক সংস্থাগুলোর আবেদনকে তারা নাকচ করে দিয়েছে। ইসরায়েলের দোসর প্রেসিডেন্ট সিসি 'ফিলিস্তিনিদের তাদের মাটি আঁকড়ে ধরে' রাখার মতোন অমানবিক পরামর্শ দিয়েছেন।