বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ; গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধের দাবি
গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধের দাবিতে বিশ্বের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ হয়েছে। একইসাথে বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় ক্রমাগত বিমান হামলা করে যাচ্ছে ইসরায়েল। এতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪,৩৮০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
লন্ডন পুলিশের অনুমান মতে, শহরটিতে প্রায় ১ লাখ বিক্ষোভকারী ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে করা এই মিছিলে তাদের হাতে দেখা যায় ফিলিস্তিনের পতাকা। একইসাথে তারা 'গাজায় বোমা হামলা বন্ধ কর' বলে স্লোগানও দিতে থাকে।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনের সমর্থনে আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্ট ও ডাবলিনে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী জড়ো হতে দেখা যায়। তারা সকলেই ইসরায়েলের চলমান বোমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান জানান।
ফ্রান্সের মার্সেলিসহ বেশ কয়েকটি শহরে ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে রাস্তায় হাজার হাজার বিক্ষোভকারীদের দেখা যায়। তারা স্লোগান দিতে থাকে, "আমরা সকলে ফিলিস্তিনি।"
অন্যদিকে জার্মান পুলিশ জানায়, ফিলিস্তিনের পক্ষে অন্তত ৭ হাজার বিক্ষোভকারী দেশটির ডুসেলডর্ফ শহরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেছে।
ইতালির রোমে শত শত মানুষ ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে। আর স্পেনের বার্সেলোনায় হাজার হাজার মানুষ ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিল করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সরকার ইসরায়েলের আত্মরক্ষার কথা বলে তেল আবিবকে সমর্থন জানিয়েছে আসছে। কিন্তু টরোন্টোতে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। শহরটির কেন্দ্রস্থলে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনের সমর্থনে মিছিল করেছে।
আর নিউ ইয়র্কে যুদ্ধ বন্ধে শত শত মুসলিম, ইহুদি ও অন্যান্য গোষ্ঠীর বিক্ষোভকারীরা মার্কিন সিনেটর ক্রিস্টেন গিলিব্র্যান্ডের ম্যানহাটনের অফিসের সামনে মিছিল করেছে। অনেকেই আবার চিৎকার করে বলছে, "এখনই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা কর।" একইসাথে লস এঞ্জেলস ও ওয়াশিংটন ডিসিতেও ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে।
অন্যদিকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টায় মিশরের কায়রোতে গতকাল (শনিবার) একদিনের শান্তি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে গাজায় ইসরায়েলের বোমা বর্ষণের তীব্র নিন্দা জানায় আরব বিশ্বের নেতারা।
তবে এই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের কোনো জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিল না। যোগ দেয়নি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের কোনো প্রতিনিধিও। তাই চলমান সহিংসতা বন্ধে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর করাও সম্ভব হয়নি।
তবে সম্মেলন শুরুর কিছুক্ষণ আগে অবশ্য ত্রাণবাহী ২০ টি ট্রাক রাফাহ সীমান্ত খুলে গাজায় প্রবেশ করে। মিশর বেশ কয়েকদিন ধরেই ক্রসিংটির মাধ্যমে গাজায় মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। কেননা গাজার জন্য এটিই একমাত্র অ্যাক্সেস পয়েন্ট যা ইসরায়েল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়।
তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এতটা মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে এই প্রাথমিক সহায়তা 'সমুদ্রের মধ্যে একটি বিন্দুর সমান'। আর ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের নির্বাহী পরিচালক কিন্ডি ম্যাককেইন ২০ ট্রাক ত্রাণকে স্বাগত জানান তবে এতটুকু যথেষ্ট নয় বলে সতর্ক করেন তিনি।
ম্যাককেইন বলেন, গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ। খাবার, পানি, বিদ্যুৎ কিচ্ছু নেই। যা পরবর্তীতে আরো বিপর্যয়ের, অনাহারের এবং আরো বহু রোগের কারণ হতে পারে। আমাদের আরো ট্রাক প্রয়োজন। নিরাপদ এবং টেকসই উপায়ে সঠিক সুবিধাভোগীদের জন্য সাহায্য পৌঁছানো নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।