ইউক্রেনের ইইউর ৫০ বিলিয়ন ইউরোর সাহায্যও আটকে গেল হাঙ্গেরির আপত্তিতে
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষ থেকে ইউক্রেনের জন্য ৫০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা আটকে দিয়েছে হাঙ্গেরি। খবর বিবিসির।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউক্রেন ও মলদোভাকে জোটের সদস্য করার বিষয়ে আলোচনার পর হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্তর অরবান আপত্তি জানালে ইইউর এই পদক্ষেপ আটকে যায়।
ইইউ নেতারা বলেছেন, আগামী বছরের শুরুর দিকে এই সহায়তা নিয়ে আবার আলোচনা শুরু হবে।
ইউক্রেন রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখতে ইইউ ও মার্কিন অর্থায়নের ওপর নির্ভরশীল।
রাশিয়ার সাথে হাঙ্গেরির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। দেশটি দীর্ঘদিন ধরে ইউক্রেনকে জোটের সদস্য করার বিষয়ে বিরোধিতা জানিয়ে আসলেও সহায়তার বিষয়ে আগে কখনোই ভেটো দেয়নি।
ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত এই আলোচনার একপর্যায়ে অরবান সভা থেকে উঠে গেলেও সংস্থাটির বাকি ২৬টি সদস্য রাষ্ট্র আলোচনা চালিয়ে যান এবং ইউক্রেনকে সহায়তার বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছান।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেলের এক মুখপাত্র জানান, চুক্তিটি সর্বসম্মত হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি সদস্যপদের আলোচনার বিষয়ে ইইউর সিদ্ধান্তকে 'বিজয়' বলে স্বাগত জানিয়েছেন।
অরবানের অবস্থানের বিষয়ে ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট বলেন, 'আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনের অর্থ ফুরিয়ে যাচ্ছে না।তাই আমাদের কাছে এখনও কিছু সময় আছে।'
তিনি আরো বলেন, 'আমরা ২৬টি দেশের সঙ্গে একমত হয়েছি। হাঙ্গেরি এখনও এতে রাজি হয়নি। আমি মোটামুটি আত্মবিশ্বাসী যে আমরা আগামী বছরের শুরুর দিকে এ বিষয়ে কটি চুক্তিতে পৌঁছাব। আমরা জানুয়ারির শেষের দিকের কথা চিন্তা করছি।'
এদিকে ইউক্রেনও মরিয়া হয়ে ৬১ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন প্রতিরক্ষা সহায়তা প্যাকেজের অনুমোদন চাইছে। তবে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের মধ্যে বড় মতবিরোধের কারণে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র।
শীতের শুরুতে রাশিয়ার বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ স্থগিত হয়ে যায়। আশঙ্কা রয়েছে এই মুহূর্তে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আক্রমণ তীব্র করতে পারে রাশিয়া।
গত সপ্তাহে জেলেনস্কির স্ত্রী ওলেনা বিবিসির একটি সাক্ষাত্কারে সতর্ক করে বলেছিলেন যে পশ্চিমা দেশগুলোর আর্থিক সহায়তা অব্যাহত না রাখলে ইউক্রেনীয়রা 'মরণ বিপদের' মধ্যে পড়বে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া আক্রমণ শুরু করলে ইউক্রেন ও তার প্রতিবেশি মলদোভা ইইউর সদস্যপদের জন্য আবেদন করে। গত জুনে দুটি দেশকেই প্রার্থীর মর্যাদা দেওয়া হয়।
অরবানের যুক্তি হলো- যেহেতু ইউক্রেন ইইউর সদস্য নয়, তাই দেশটি জোটের পক্ষ থেকে এই বিপুল সহায়তা পেতে পারে না।
অরবানের এই সিদ্ধান্তের পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাসিমির পুতিন ইউক্রেনের প্রতি উপহাসের সাথে দাবি করে বলেছেন, ইউক্রেনের জন্য পশ্চিমা সহায়তা ফুরিয়ে আসছে।