ইয়েমেনে হুথিদের অবস্থানে হামলা চালাল যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন
লোহিত সাগরে জাহাজে হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে আকাশ ও সমুদ্রপথে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন।
ইয়েমেনের প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়টার্সকে দেশজুড়ে বিস্ফোরণের কথা নিশ্চিত করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে সতর্ক করেছেন যে প্রয়োজনে তিনি আরও পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবেন না।
তিনি বলেন, "এই হামলা একটি স্পষ্ট বার্তা যে যুক্তরাষ্ট্র এবং আমাদের অংশীদাররা আমাদের কর্মকর্তাদের ওপর আক্রমণ সহ্য করবে না।"
ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, "প্রাথমিকভাবে যা বোঝা যাচ্ছে তা হলো লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হুথিদের হামলার সক্ষমতা বাধাগ্রস্থ করা সম্ভব হয়েছে।'
ইরান-সমর্থিত হুথিরা বলেছে, লোহিত সাগরে তাদের এই হামলার উদ্দেশ্য ফিলিস্তিনি এবং গাজার ইসলামপন্থী দল হামাসের প্রতি সমর্থন দেখানো।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ড্রোন, ব্যালিস্টিক এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, কোস্টাল রাডার এবং বিমান নজরদারিসহ হুথির সামরিক সক্ষমতাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।
একজন হুথি কর্মকর্তা সাদা ও ধামার শহরের পাশাপাশি রাজধানী সানায় "হামলার" কথা নিশ্চিত করেছেন। তিনি এটিকে "আমেরিকান-জিওনিস্ট-ব্রিটিশ আগ্রাসন" বলে অভিহিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়টার্সকে জানিয়েছে, সানা বিমানবন্দর সংলগ্ন একটি সামরিক ঘাঁটি, তাইজ বিমানবন্দরের কাছে একটি সামরিক স্থান, হোদেইদাহের একটি হুথি নৌ ঘাঁটি এবং হাজ্জাহ গভর্নরেটের সামরিক স্থানগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।
হামলা বাড়ার আশংকা
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা ও নেদারল্যান্ডস এ অভিযানকে সমর্থন দিয়েছে। তারা এটিকে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর অবাধ চলাচল স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার একটি আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে উপস্থাপনের কথাও জানিয়েছে।
এদিকে ওয়াশিংটন বলেছে, তাদের উত্তেজনা বাড়ানোর কোনো উদ্দেশ্য নেই। তবে হুথিরা বলেছে, তারা যেকোনো হামলার প্রতিশোধ নিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
লন্ডনের কিংস কলেজের আন্দ্রেয়াস ক্রিগ বলেছেন, "উদ্বেগ হলো এটি বাড়তে পারে।" সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতকেও সংঘর্ষের দিকে টানা হতে পারে এমন ঝুঁকির বিষয়েও সতর্ক করেছেন তিনি।
হামলার পর এক বিবৃতিতে সৌদি আরব হামলা বা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র লোহিত সাগরে হুথি হামলায় সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার জন্য ইরানকে সামরিক সক্ষমতা ও বুদ্ধি দিয়ে সহযোগিতার অভিযোগও করেছে।