পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার মন্ত্রীকে জেলখানায় যেসব শ্রম দিতে হবে
হাই-প্রোফাইল কারাবন্দি হলেও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশিকেও অন্যদের মতোই কারাগারে শ্রম দিতে হবে।
এর আগে, ইসলামাবাদের একটি দুর্নীতি বিরোধী আদালত রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইনে করা কূটনৈতিক তারবার্তা (সাইফার) ফাঁসের মামলায় এই দুই নেতাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে রয়েছেন তারা। সেখানেই বিশেষ আদালত বসিয়ে গোপন তথ্য ফাঁস মামলার কার্যক্রম চলছিল।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউন পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ৭১ বছর বয়সী ইমরান খান এবং ৬৭ বছর বয়সী কুরেশিকে হাই প্রোফাইল বন্দি হিসেবে পৃথক কক্ষে রাখা হয়েছে।
খান তার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং কুরেশি দলের ভাইস চেয়ারম্যান।
সূত্রের খবর, জেল ম্যানুয়াল অনুযায়ী দু'জনকে দু'জনের জেল ইউনিফর্ম দেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য মামলায় ইমরানের বিচার চলমান থাকায় কারাগারের ইউনিফর্ম পরা তার জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়নি।
লিখিত আদেশ অনুসারে, দুই বন্দিকে কম্পাউন্ডের ভিতরে তাদের জন্য নির্ধারিত কাজ করতে হবে।
সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, হাই প্রোফাইল বন্দি হিসেবে সাধারণ বন্দিদের মতো কারাগারের কারখানা, রান্নাঘর, হাসপাতাল, বাগান ইত্যাদিতে তাদের কাজ করতে দেওয়া হবে না।
তাই রক্ষণাবেক্ষণের কাজ বা জেল প্রশাসনের দেওয়া অন্য কাজ করবেন তারা।
উভয় বন্দী তাদের নিজস্ব খাবার রান্না করে খেতে পারবেন। জেলের ম্যানুয়াল অনুযায়ী তৈরি খাবারও খেতে পারবেন তারা।
একইভাবে, তোশাখানা (উপহার সংগ্রহস্থল এবং ইদ্দাত মামলা) দোষী সাব্যস্ত হওয়া খানের স্ত্রী বুশরা বিবিকে কারাগারে না রেখে বানিগালার বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। এটিকে সাব-জেল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে ২৪ ঘণ্টা দুই শিফটে পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
এই বাড়িতে একজন নারী সহকারী সুপারিনটেনডেন্টের নেতৃত্বে একজন নারী পুলিশ কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।
বানিগালা বাসভবনের বাইরে আদিয়ালা কারাগারের পুরুষ কর্মকর্তাদের মোতায়েন করা হয়েছে এবং ইসলামাবাদ পুলিশ এর চারপাশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।
সূত্রের খবর, ৪৯ বছরের প্রাক্তন ফার্স্ট লেডিকে জেল ম্যানুয়াল অনুযায়ী সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার ও রাতের খাবার দিচ্ছে কারা প্রশাসন।
তবে তারা আরও জানান, বুশরা নিয়মিত কারাগারে না থাকায় সাব-কারাগারের বন্দি হিসেবে তাকে ব্যায়াম করার মেশিনের সুবিধা দেওয়া যায়নি।
সূত্রের খবর, যেহেতু দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই ইমরান খান ও কুরেশিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছিল, তাই সেই সময়ও তাদের শাস্তির মেয়াদের সঙ্গে হিসাব করা হবে।
এর দুদিন আগে 'অ-ইসলামিক নিকাহ' বা ইদ্দত মামলায় ইমরান খান ও তার স্ত্রীকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
গত সপ্তাহে তোশাখানা মামলায় পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া সাইফার মামলায় খান ও কুরেশিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
খান ও কুরেশিকে পাঁচ বছরের জন্য রাজনীতি থেকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সাইফার মামলাটি একটি কাগজের টুকরো সম্পর্কিত, যা একটি কূটনৈতিক তারবার্তা বলে দাবি করা হয়।
এ মামলার অভিযোগে ছিল, ওয়াশিংটনে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের পাঠানো একটি গোপন তারবার্তা প্রকাশ্যে ফাঁস করে দিয়েছেন ইমরান খান।
অভিযোগ রয়েছে, ওই গোপন কূটনৈতিক তারবার্তাটি ইমরান খানের হাতে তুলে দেন সাবেক মুখ্য সচিব আজম খান। পরে তারবার্তাটি কোথায় রেখেছেন, ভুলে গেছেন বলে তাকে ইমরান খান জানান এবং বারবার অনুরোধের পরও সেটা আর ফেরত দেননি।