ভোটে কারচুপি স্বীকার করে আসন ছাড়লেন জামায়াত নেতা, বললেন ওই আসনে জিতেছেন ইমরানের প্রার্থী
পাকিস্তানের নির্বাচনে করাচি থেকে সিন্ধের প্রাদেশিক পরিষদের এক আসনে জিতেছিলেন জামায়াত-এ-ইসলামি (জেআই) করাচির আমির হাফিজ নাঈম-উর-রহমান। কিন্তু সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নাঈম সেই ফল ফিরিয়ে দিয়ে বলেছেন, আসলে তিনি নন, ওই আসনে জিতিচেন ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ-সমর্থিত (পিটিআই) স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফ বারী।
করাচিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নাঈম বলেন, ওই আসনে প্রকৃতপক্ষে পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থী সাইফ বারী জয়ী হয়েছেন, তিনি কোনো 'দানের' আসন চান না।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) ফল অনুসারে, ওই আসনে নাঈম ২৬ হাজার ২৯৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
নাঈম জানান, তিনি করাচির ওই আসন ফিরিয়ে দিচ্ছেন, কিন্তু ভোট কারচুপির ফলে তার দল যেসব আসনে হেরেছে, তার বিরুদ্ধ আইনি ও রাজনৈতিক লড়াই চালিয়ে যাবেন।
'ভুয়া ম্যান্ডেটের মাধ্যমে আপনারা মানুষের মন বদলাতে পারবেন না,' বলেন তিনি।
৮ ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে নাঈম করাচি সেন্ট্রালের সিন্ধ পরিষদের পিএস-১২৯ আসনে জয়লাভ করেন। কিন্তু ওই আসনে তিনি নন, পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থী জিতেছেন বলে জানান নাঈম।
'আমি কোনো দানের আসন চাই না। ওটার ওপর যার অধিকার আছে, তাকেই দেওয়া উচিত,' সংবাদ সম্মেলনে বলেন তিনি।
এই জেআই নেতা বলেন, তার টিমের হিসাব অনুযায়ী, ওই আসনে পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফ বারী জিতেছেন। ইসিপি বারীর ভোট '৩১ হাজার থেকে কমিয়ে ১১ হাজার' দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ইসিবির তথ্যানুযায়ী, ওই আসনে বারী ১১ হাজার ৩৫৭ ভোট পেয়েছেন।
নাঈম বলেন, পিটিআইয়ের প্রার্থী বেশি ভোট পেয়েছেন, তাই তিনি পিটিআইয়ের বিজয় ও ম্যান্ডেট মেনে নিচ্ছেন। ওই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিজয় মেনে নেওয়ার মতো যথেষ্ট আত্মমর্যাদাও তার আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এই জেআই নেতা আরও ঘোষণা দেন, ওই আসনের এমপিএ হিসেবে তিনি শপথ গ্রহণ করবেন না।
নাঈম বলেন, পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) ফর্ম ৪৫ অনুসারে, পিএস-১২৯ আসনে জয়ী হয়েছেন পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থী সাইফ বারী; তাই তারই ওই আসনে শপথ গ্রহণ করা উচিত।
জেআই নেতা নাঈম বলেন, ইসিপির ফর্ম ৪৭ অনুসারে, তিনি ২৬ হাজার ভোট পেয়েছেন; আর ফর্ম ৪৫ অনুসারে পেয়েছেন ৩০ হাজার ৪৬৪ ভোট।
'জয়ী হওয়া আসনগুলো' ফিরে পেতে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে জেআই করাচির প্রধান বলেন, জয়ী হওয়া আসনেও তার ভোট দেখানো হয়েছে ২৬ হাজার, যেখানে তিনি পেয়েছিলেন ৩০ হাজার ভোট্র।
ফর্ম ৪৫ অনুসারে নির্বাচনের ফল দেওয়ার দাবি জানিয়ে নাঈম বলেন, যেসব আসনে তার দল জিতেছে, সেগুলো তারা চান।
এই জেআই নেতা দাবি করেন, তার এই আসন ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তটি পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের গালে চপেটাঘাত।
তিনি বলেন, তাদের বিপুলসংখ্যক পোলিং এজেন্টকে ফর্ম ৪৫ দেওয়া হয়নি, আর সবচেয়ে জঘন্য কারচুপি করা হয়েছে ফর্ম ৪৭-এর মাধ্যমে।