'অ্যাসাঞ্জ জেলে মারা গেলে পিকাসো আর ওয়ারহলের ছবি এসিড দিয়ে ঝলসে দেব': আন্দ্রেই মোলোডকিন
ফ্রান্সের একজন শিল্পী জানিয়েছেন, উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ জেলে মারা গেলে তিনি এসিড দিয়ে চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসো, অ্যান্ডি ওয়ারহোল এবং অন্যদের আঁকা ছবি ধ্বংস করে দিবেন।
ফ্রান্সের দক্ষিণের একজন শিল্পী আন্দ্রেই মোলোডকিন দান থেকে পাওয়া ৪৫ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের বিখ্যাত চিত্রশিল্পীদের আঁকা চিত্রকর্মগুলো ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেছেন।
মোলোডকিন বলেছেন, তিনি চিত্রকর্মগুলো দুটো ব্যারেলের সাথে যুক্ত একটি ২৯ টন ওজনের সিন্দুকের মধ্যে রেখেছেন। একটি ব্যারেলে অ্যাসিড পাউডার আছে এবং অন্যটিতে আছে অনুঘটক (যা রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতি বৃদ্ধি করে)।
স্কাই নিউজের তথ্য অনুসারে, 'ডেড ম্যানস সুইচ' নামের এই সিন্দুকের ভিতর দুটো ব্যারেল একসাথে পাম্প করা হলে যে বিক্রিয়া হবে তা সবগুলো চিত্রকর্ম সহজেই নষ্ট করে দেওয়ার মত শক্তিশালী।
উদ্যোগটিকে সমর্থন জানিয়েছেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের স্ত্রী স্টেলা।
স্কাই নিউজকে মোলোডকিন বলেছেন, "আমরা এখন যেই বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি সেই সময়ে একজন ব্যক্তির জীবন ধ্বংস করার থেকে শিল্প ধ্বংস করাকে অনেক বেশি গর্হিত অপরাধ ধরা হয়।"
তিনি আরো বলেন, "জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ জেলে আছেন মানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা এবং তথ্যের স্বাধীনতাকে আরো বেশি দমন করা হচ্ছে। আমি এখন তীব্রভাবে এটি উপলব্ধি করতে পারছি।"
জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যের জেলে বন্দি আছেন। তিনি বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় চলমান আপিলের ফলাফলের অপেক্ষায় আছেন। তাঁকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যাবাসন করা হলে তিনি গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হবেন। এ মাসের শেষ দিকে চূড়ান্ত আপিলের শুনানি হবে।
গণমাধ্যম সংস্থা উইকিলিকস আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধ নিয়ে হাজার হাজার ফাঁস হওয়া নথি প্রকাশ করেছিল। সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা অ্যাসাঞ্জকে সাবেক মার্কিন সেনা গোয়েন্দা বিশ্লেষক চেলসি ম্যানিংয়ের সাথে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
২০১৮ সালে আনা এই ফেডারেল অভিযোগে বলা হয়েছিল, অ্যাসাঞ্জ এবং ম্যানিং বেআইনিভাবে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা নথি সংগ্রহ প্রকাশ করে যার থেকে "যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি হতে পারে অথবা বিদেশি রাষ্ট্র এই তথ্য নিজেদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করতে পারে।"
অ্যাসাঞ্জ কোনো ধরনের বেআইনি কাজ করার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
মোলোডকিন জানিয়েছেন, সিন্দুকটি একটি ২৪-ঘন্টা টাইমারের সাথে যুক্ত থাকবে এবং এটিতে প্রতিদিন নতুন করে সময় ঠিক করতে হবে। যদি তা না করা হয় তাহলে ব্যারেল দুটো থেকে এসিড এবং অনুঘটক বের হয়ে আসবে এবং চিত্রকর্মগুলোকে নষ্ট করবে।
তিনি বলেন, তার স্টুডিওতে থাকা সিন্দুকটি শুক্রবার সিল করে যাদুঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
মানবাধিকার আইনজীবীরা এবং নিউ ইয়র্ক টাইমস সংবাদপত্রের সম্পাদকীয় বোর্ড যুক্তি দিয়েছে, অ্যাসাঞ্জের বিচার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের স্ত্রী স্টেলা অ্যাসাঞ্জ স্কাই নিউজকে জিজ্ঞাসা করেছেন, "কোনটি বড় ট্যাবু— শিল্পকে ধ্বংস করা নাকি মানুষের জীবন ধ্বংস করা?"
ইংরেজী থেকে অনুবাদ: তাসবিবুল গনি নিলয়