ঊর্ধ্বতনের পছন্দের কর্মী না হয়েও চাকরিতে কীভাবে সফল হবেন?
কর্মক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতনের পক্ষপাতিত্বের ফলে ভুক্তভোগী হওয়ার কথা প্রায়শই শোনা যায়। তবে খুব কম কর্মীই এ নিয়ে কথা বলেন। এক্ষেত্রে সমস্যাটির মুখোমুখি হলে কর্মীদের কাজের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয় এবং টিম আকারে কাজে করে সন্তুষ্ট হতে পারে না।
একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, কর্মীদের কাজ শুরু করার আগেই অর্ধেকের বেশি ঊর্ধ্বতন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তারা কার প্রশংসা করবেন আর কার প্রশংসা করবেন না!
এক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়ই ঊর্ধ্বতনের পূর্বনির্ধারিত পছন্দের কর্মী পদোন্নতি পায়। এক্ষেত্রে অভিযোগ করা হয় যে, পদোন্নতি পাওয়া কর্মীদের একটি বড় অংশ মূলত ঊর্ধ্বতনের পক্ষপাতিত্বের কারণে তা লাভ করেছে।
হোম অফিস করার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার কারণে পদোন্নতি লাভ যেন আরও বেশি কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ ঊর্ধ্বতনেরা এমন কর্মীদের বেশি পছন্দ করেন যাদের তারা প্রায়শই চোখের সামনে কাজ করতে দেখেন।
এ সমস্যার কারণে কর্মক্ষেত্রে আপনি একা বোধ করতে পারেন। তাছাড়াও পক্ষপাতিত্ব করার কারণে ঠিক কী করলে আপনার ঊর্ধ্বতন আপনাকে বা আপনার কাজকে পছন্দ করবেন এটিও আপনি বুঝে উঠতে পারেন না। এক্ষেত্রে কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে।
অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করুন: আপনি যদি অন্যদের মতো একইরকম সুযোগ না পান তবে মন খারাপ হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু এর কারণে নিজেকে আপনার সেরা কাজ করতে বাধা দেবেন না। নিজের অনুভূতি বুঝতে ও তা গ্রহণের চেষ্টা করুন।
মনে রাখবেন, এমনও হতে পারে যে, আপনি আসল কারণটি জানেন না কেন আপনার ঊর্ধ্বতন এমন আচরণ করেন। সুতরাং এটিকে ব্যক্তিগতভাবে না নেওয়ার চেষ্টা করুন। আপনার ঊর্ধ্বতন হয়ত বুঝতেও পারছেন না যে, তিনি এমন করছেন।
দেখুন ও শিখুন: আপনার ঊর্ধ্বতন কী পছন্দ করেন এবং কীভাবে যোগাযোগ করেন সেদিকে মনোযোগ দিন। এই বিষয়গুলোতে আগ্রহ দেখানোর চেষ্টা করুন; পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করুন। এছাড়াও আপনার ঊর্ধ্বতন কাজের ক্ষেত্রে কী আশা করছেন, কী পছন্দ-অপছন্দ করছেন তা জানার চেষ্টা করুন। আপনি কীভাবে সাহায্য করতে পারেন সে সম্পর্কে চিন্তা করুন।
ঊর্ধ্বতনের সাথে কথা বলুন: আপনার ঊর্ধ্বতন আপনাকে পছন্দ করেন না মনে হয়ে থাকলেও তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করুন। যেকোনো ক্ষেত্রেই যোগাযোগ করাটা গুরুত্বপূর্ণ। তারা আপনার কাছ থেকে কী আশা করেন এবং আপনি কীভাবে আপনার কাজে উন্নতি করতে পারেন সে সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসা করুন। আপনি কী শিখতে চান বা কী করতে চান সে বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতেও ভুলবেন না।
আপনার কাজ দেখান: এমন চিন্তা থেকে বেড়িয়ে আসুন যে, আপনার ঊর্ধ্বতন আপনার বা আপনার কাজের বিষয়ে সবকিছু জানেন। আপনার অর্জন সম্পর্কে বলুন এবং কীভাবে টিমে অবদান রাখছেন তা প্রকাশ করুন। এটি বড়াই করা নয় বরং এটি আপনার কঠোর পরিশ্রমের মূল্যকে নিশ্চিত করে।
নেটওয়ার্ক তৈরি করুন: শুধু ঊর্ধ্বতনের সাথে নয়, কোম্পানির অন্যান্য ব্যক্তিদের সাথেও নেটওয়ার্ক তৈরির চেষ্টা করুন। আপনার আগ্রহ রয়েছে এমন কাজে যোগ দিন এবং নতুন মানুষদের সাথে দেখা করুন। তাদের সাথে কথা বলুন। একটি ভালো নেটওয়ার্ক থাকা আপনাকে ভালো অনুভব করতে এবং কর্মক্ষেত্রে নতুন সুযোগ খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।
আপনার ঊর্ধ্বতন পক্ষপাতিত্ব করলে এসব অনুসরণ করা যদিও একটু কঠিন। কিন্তু হাল ছেড়ে দেবেন না। বিষয়গুলোতে উন্নতির চেষ্টা চালিয়ে যান। কিন্তু যদি কোনো ফলাফল না-ই আসে তবে ঐ চাকরি ছেড়ে নিজের যোগ্যতায় এগিয়ে যান। মনে রাখবেন, এক্ষেত্রে আপনি এই যাত্রায় অনেক কিছু শিখেছেন এবং নেটওয়ার্ক তৈরি করেছেন যা ভবিষ্যতে কাজে দেবে।
অনুবাদ: সৈয়দা শেহরিন