ভুটানের ‘ড্রাগন কুইন’ চারদিনের সফরে ঢাকায়
ভুটানের রানী জেটসুন পেমা। দেশটির রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের সঙ্গে চার দিনের সফরে সোমবার (২৫ মার্চ) তিনিও ঢাকায় এসেছেন।
রানী পেমা কেবল রাজবংশের সদস্যই নন, তার দেশে তিনি ড্রুক গিয়ালতসুয়েন বা ড্রাগন কুইন নামেও পরিচিত।
স্থানীয় ভাষায় ভুটানকে ড্রুকইউল বলা হয়ে থাকে, যার অর্থ 'দ্য ল্যান্ড অব থান্ডার ড্রাগন' বা বজ্র ড্রাগনের দেশ। আর দেশটির রানীকে বলা হয় ড্রুক গিয়ালতসুয়েন (ড্রাগন কুইন)। জেটসান পেমা দেশটির ৫ম রানী।
চলুন তার সম্পর্কে আরও কিছু জেনে নেওয়া যাক…
১৯৯০ সালের ৪ জুন ভুটানের এক অভিজাত পরিবারে জন্ম জেটসুন পেমার। তার বাবা ধন্দুপ গিয়ালতসেন ভুটানের ড্রুক এয়ারের পাইলট। মা অম সোনাম চোকির পরিবারেরও রাজপরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।
পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে পেমা দ্বিতীয়। তার পড়ালেখায় হাতেখড়ি থিম্পুর একটি স্কুলে। এরপর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পংয়ের সেন্ট জোসেপ'স কনভেন্ট থেকে আপার সেকেন্ডারি সম্পন্ন করেন তিনি। তারপর উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনে পাড়ি জমান। ভর্তি হন রিজেন্ট'স বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি মনোবিজ্ঞান ও শিল্প ইতিহাস বিষয়ও তার অধ্যয়ন করেন।
মাতৃভাষা জংখার পাশাপাশি ইংরেজি ও হিন্দিতেও সমান তালে পারদর্শী এই রানী।
আচার-ব্যবহারেও বেশ নম্র স্বভাবের তিনি। সবসময়ই তিনি তার লোকেদের কথাই ভাবতে ও তাদের জন্য কাজ করতে পছন্দ করেন।
রাজমর্যাদার ব্যক্তিত্ব হওয়া সত্ত্বেও পেমা সরল জীবনযাপনই বেশি পছন্দ করেন।
কিশোর বয়সে পেমা বাস্কেটবল দলের অধিনায়ক ছিলেন।
২০১১ সালের ১৩ অক্টোবর ২১ বছর বয়সে রাজা জিগমে খেসার নাগমিয়েল ওয়াংচুকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ভুটানের পুনাখা ডিস্ট্রিক্টে একটি বৌদ্ধ বিহারে ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ রীতিনীতি অনুযায়ী তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। বিয়ের সময় রানী পেমা ভুটানি নারীদের জাতীয় পোশাক কিরা পরেছিলেন, যা কাঁচা রেশম থেকে বোনা হয়েছিল।
বিয়ের পর এই দম্পতি হানিমুন করেছেন ভারতের রাজস্থানে। এরপর ছয়দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে জাপানেও গিয়েছিলেন তারা।
এই রাজদম্পতির ঘরে দুই সন্তান। জিগমে নাগমিয়েল ওয়াংচুক (৬) ও প্রিন্স দেশো উগিয়েন জিগমে ওয়াংচুক (২)।
রানী হিসেবে পেমা তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণ, নারী স্বাস্থ্য ও গ্রামীন অর্থনৈতিক প্রকল্পগুলো নিয়েও কাজ করছেন। সেই সঙ্গে ভুটান রেড ক্রস সোসাইটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
মাতৃস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসা জন্য হাসপাতালও করেছেন পেমা। ভুটানে গিয়ালতসুয়েন জেটসুনপেমা মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হসপিটালটিতে এ পরিষেবা দেওয়া হয়ে থাকে।