কলাম্বিয়ার বিক্ষোভকারীরা সময়সীমা লঙ্ঘন করে অ্যাকাডেমিক ভবনে অবস্থান নিয়েছে
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অ্যাকাডেমিক ভবনের দখল নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়টির হ্যামিল্টন হলে অবস্থান নেওয়ার মধ্য দিয়ে ভবনটি দখলে নেন। খবর বিবিসির।
এর আগে নির্দেশ অমান্য করে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার দুপুর ২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। অন্যথায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি চালিয়ে যেতে থাকেন।
কলাম্বিয়া স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন (এসজেপি) এক এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ অমান্য করে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান। সেই সঙ্গে সংগঠটি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের 'শিবির রক্ষা' করারও আহ্বান জানায়।
পরে সংগঠনটি হ্যামিল্টন হল দখলে নেওয়ার কথা জানায়। বিক্ষোভকারীরা হলের জানালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর তারা বিভিন্ন আসবাবপত্র দিয়ে ভেতর থেকে হলটির দরজা বন্ধ করে দেয়।
কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি অ্যাপারথেইড ডাইভেস্ট (সিইউএডি) নামের আরেকটি সংগঠন জানিয়েছে যে তারা ভবনটি চলতি বছরের শুরুতে গাজায় মৃত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ছয় বছর বয়সী হিন্দ রজবের প্রতি সম্মানার্থে 'পুনরুদ্ধার' করেছে।
বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজের সাথে কথা বলার সময় জেসিকা শোয়ালব নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, বিক্ষোভকারীরা 'ব্যাগপত্র' নিয়ে হলটিতে প্রবেশে করেছে। মনে হচ্ছে তারা সেখানে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান করবে।
ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি চলছে। এর শুরুটা হয় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। গত সপ্তাহে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী গাজার প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে তারা ক্যাম্পাসে ভেতর তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন। দ্রুতই এ বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়সহ ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে বিক্ষোভের জেরে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীদের তাঁবু সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তারা মানেনি। তাদের ক্যাম্পে 'বেসবল আকারের পাথর' পাওয়া গেছে।
এদিকে রিচমন্ডের ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটির (ভিসিইউ) শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সোমবার তাদের সমাবেশে কাঁদানে গ্যাস ও পিপার স্প্রে ব্যবহার করেছে পুলিশ।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে যে শিক্ষার্থীদের বারবার চলে যেতে বলা হলেও তারা শোনেনি এবং তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থী নয় এমন অনেকেই ছিল।
অনুবাদ: রেদওয়ানুল হক