লন্ডন থেকে সিঙ্গাপুরগামী বোয়িং ৭৭৭ বিমানে তীব্র ঝাঁকুনি, একজনের মৃত্যু
লন্ডন থেকে সিঙ্গাপুরগামী সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তীব্র ঝাঁকুনিতে একজন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছে।
সিঙ্গাপুরগামী বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর বিমানের এসকিউ ৩২১ ফ্লাইটটি তীব্র ঝাঁকুনির কবলে পড়ায় স্থানীয় সময় ৩টা ৪৫ মিনিটে থাইল্যান্ডে রাজধানী ব্যাংককের সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডেটা অনুযায়ী, বিমানটি বঙ্গোপসাগর পাড়ি দেওয়ার পর কয়েক মিনিটের মধ্যে ৬ হাজার ফুট (২ হাজার মিটার) নিচে নেমে যায়।
বিমানসংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফ্লাইট এসকিউ ৩২১-এ মোট ২১১ জন যাত্রী এবং ১৮ জন ক্রু সদস্য ছিল।
বিবৃতিতে নিহত ব্যক্তির পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স।
তারা আরও জানায়, যাত্রীদের চিকিৎসা সহায়তার জন্য থাই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিণে কাজ করছে তারা এবং প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত সহায়তার জন্য একটি দলকে ব্যাংককে পাঠাচ্ছে।
থাই সরকার সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরে অ্যাম্বুলেন্স এবং জরুরি দল পাঠিয়েছে।
সিঙ্গাপুরের পরিবহনমন্ত্রী চি হং তাত জানিয়েছেন, সরকার হতাহত যাত্রী এবং তাদের পরিবারকে সহায়তা করবে।
তিনি এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, 'আমি লন্ডনের হিথ্রো থেকে দেশের উদ্দেশে যাত্রা করা সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এসকিউ৩২১-এ ঘটে যাওয়া ঘটনাটি শুনে গভীরভাবে দুঃখিত।'
এখন পর্যন্ত নিহত ব্যক্তির পরিচয় জানায়নি কর্তৃপক্ষ। ওই ফ্লাইটে মূলত ঠিক কী ঘটেছিল, তা এখনও স্পষ্ট জানা যায়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এক যাত্রী বলেন, বিমানটি হঠাৎ 'কাত হয়ে যেতে থাকে এবং ঝাঁকুনি শুরু হয়।'
২৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থী জাফরান আজমির বলেন, 'হঠাৎ করে খুব নাটকীয়ভাবে মোড় নেয় বিমানটি। সিটবেল্ট না পরা প্রত্যেকে সেসময় সিলিংয়ের সঙ্গে জোরে ধাক্কা খায়।'
তিনি বলেন, 'কারো কারো মাথা প্রচণ্ড জোরে ব্যাগেজ কেবিনের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সেগুলো ছিড়ে মাথা ভেতরে ঢুকে যায়।'
মেঘাচ্ছন্ন আকাশে ওড়ার সময় সাধারণত বিমানে ঝাঁকুনি হয়। তবে 'পরিষ্কার আবহাওয়ায়'-ও কখনো কখনো ঝাঁকুনি দেখা যায়, যা বিমানের রাডারে দেখা যায় না বা এর পূর্বাভাস দেওয়াও সম্ভব হয় না।
বিমানে ঝাঁকুনিতে আহত হওয়ার ঘটনা তুলনামূলকভাবে বিরল। লাখ লাখের মধ্যে অল্প কিছু ফ্লাইটে এমন ইতিহাস দেখা যায়।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ জন স্ট্রিকল্যান্ড বিবিসিকে বলেন, 'তবে কখনো কখনো তীব্র ঝাঁকুনি হতে পারে। এতে যাত্রীরা গুরুতর আহত হতে পারে বা প্রাণহানিও ঘটতে পারে।'
ফ্লাইট ক্রুদের ঝাঁকুনি মোকাবিলায় সাড়া দেওয়ার ব্যাপারেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'বিমান সংস্থাগুলো কিন্তু এমনি এমনিই দূর কিংবা স্বল্পপাল্লার সব ফ্লাইটেই যাত্রীদের সিটবেল্ট ঢিলা করে বেঁধে রাখার পরামর্শ দেয় না। এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে কৌশলটি কাজে লাগে।'
গবেষণায় জানা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভবিষ্যতে আকাশপথে বিমানের ফ্লাইট চলাচলে তীব্র ঝাঁকুনির শঙ্কা আরও বাড়বে।
ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি