তৃতীয় মেয়াদে মোদির ‘৪০০-পার’ আটকে গেল ‘ইনডিয়া ওয়ালে’
ভারতের লোকসভা নির্বাচন শেষে আজ মঙ্গলবার শুরু হয়েছে ফল ঘোষণা। দেশটির এই সাধারণ নির্বাচনে 'আবকি বার ৪০০ পার' অর্থাৎ চারশ'র বেশি আসনে জয়ের বিষয়ে প্রত্যয়ী ছিল বিজেপি। কিন্তু এপর্যন্ত ঘোষিত ব্যালট বলছে, বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ ২৯৪ আসনে এগিয়ে রয়েছে, আর প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে 'ইন্ডিয়া' জোট পেয়েছে ২৩১ আসন।
ভারতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজন ২৭২ আসন। সে হিসাবে, জোট হিসেবে এনডিএ সরকার গঠন করতে পারবে। কিন্তু, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় আর সরকার গঠন হচ্ছে না বিজেপির। এপর্যন্ত ঘোষিত ফলে তারা ২৪১টি আসন পেয়েছে। গত নির্বাচনে বিজেপি একাই ৩০৩টি আসন পেয়েছিল।
নির্বাচনী ফল ঘোষণা চলমান আছে, এরমধ্যে এনডিএ জোট ৩০০'র কাছাকাছি আসন পেতে চলেছে এটি প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু, বিজেপির জন্য বড় দুঃসংবাদ হলো গত দুই লোকসভায় দলের একক যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল– এবার তা থাকছে না। ফলে জোটের দুই শরীক দল – অন্ধ্র প্রদেশে চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি এবং বিহারে মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের জনতা দল-ইউনাইটেড (জেডি–ইউ) এর ওপর আরো নির্ভরশীলতা বাড়বে বিজেপির।
বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভে ব্যর্থ হওয়ায় এরমধ্যেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নাইডু ও নীতিশকে জোট গঠনের আলোচনা করতে ফোন দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
গত ১ জুন শেষ হয় ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এরপরে বুথফেরত জরিপগুলোর ঘোষিত ফলাফলে বিজেপি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় জিতবে এমন আভাস দেওয়া হয়। কিন্তু, আনুষ্ঠানিক ফলাফলে ভবি উলটে গেছে। প্রত্যাশার চেয়েও ভালো করেছে 'ইন্ডিয়া' জোট। এমনকী কিছু জায়গায় আকস্মিক পরাজয়ের ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি।
যেমন নিজেদের শক্ত ঘাঁটি উত্তর প্রদেশে বিজেপি সুবিধে করতে পারেনি অনেক আসনে। যেখানে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে গেছে সমাজবাদী পার্টি। মহারাষ্ট্রেও এনসিপির দলচ্যুত অংশ এবং শিব সেনার সাথে গাটছড়া বেধেও কূল রক্ষা হয়নি। সে তুলনায়, এই রাজ্যের বিরোধীদের এমভিএ জোটই আসন সংখ্যায় এগিয়ে আছে। দলভেঙে যারা বিজেপির সাথে যোগ দিয়েছে– তাঁদের চেয়ে ভালোই করেছে উদ্ধব ঠাকরে এবং শরদ পাওয়ারের নেতৃত্বাধীন এ জোট।
অন্যদিকে, গত দুটি লোকসভা নির্বাচনে বাজে ফল করা কংগ্রেস যেন এবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এপর্যন্ত একক দল হিসাবে তাঁদের আসন সংখ্যা ১০০টির কাছাকাছি। ফল ঘোষণায় এই ধারা বজায় থাকলে– ভারতের সবচেয়ে পুরোনো এই রাজনৈতিক দলের জন্য তা হবে নবজীবন লাভের ঘটনা। ভারতের আঞ্চলিক দলগুলোও ভোটের ময়দানে চমক দেখিয়েছে এবং প্রধান প্রধান কিছু রাজ্যে বিজেপিকেই চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছে।
এরমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের নাম করতেই হয়। রাজ্যের ২৯টি আসন পেয়েছে তৃণমূল। গত লোকসভার চেয়ে আরো ৭টি আসনে জয় পেয়েছে মমতা ব্যানার্জির দল। অন্যদিকে ১২টি আসন পেয়েছে বিজেপি। হাতছাড়া হয়েছে ৬টি আসন।
অনুবাদ: নূর মাজিদ