তৃতীয় মেয়াদে শপথ নিলেন মোদি, মন্ত্রিসভায় ৭২ মন্ত্রী, নতুন ৯ মুখ
নতুন জোট সরকারের ৭২ জন মন্ত্রীর সঙ্গে রবিবার (৯ জুন) সন্ধ্যায় তৃতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদি। এদের মধ্যে ৩০ জন পূর্ণমন্ত্রী, ৫ জন স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং ৩৬ জন প্রতিমন্ত্রী।
আজ রবিবার (৯ জুন) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাকে শপথবাক্য পাঠ করান। এর মধ্য দিয়ে সাবেক কংগ্রেস নেতা জওহরলাল নেহরুর পর টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার নজির গড়লেন মোদি।
তবে স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তৃতীয় মেয়াদে জোট সরকারের নেতৃত্ব দেবেন ৭৩ বছর বয়সী মোদি।
তৃতীয় নরেন্দ্র মোদি সরকারে মোট ৭২ জন মন্ত্রী থাকছেন। বিজেপির পাশাপাশি এনডিএ জোটের ১১টি দলের নেতাদেরও মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়েছে। যে দলের মধ্যে আছে নীতীশ কুমারের জেডিইউ (জনতা দল ইউনাইটেড), চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি (তেলুগু দেশম পার্টি), এলজেপি, (লোক জনশক্তি পার্টি - রামবিলাস), রাষ্ট্রীয় লোক দল, জেডিএস।
মোদির মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে রবিবার শপথ নেওয়া ৩০ জন পূর্ণমন্ত্রীর মধ্যে বিজেপির ২৫ জন। এরা হলেন: গুজরাট থেকে নির্বাচিত রাজ্যসভা সাংসদ এস জয়শঙ্কর, সাকিন তামিলনাড়ুর নির্মলা সীতারামন, হিমাচল প্রদেশের নেতা দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা, রাজস্থানের অশ্বিনী বৈষ্ণো, পাঞ্জাবের হরদীপ সিংহ পুরী, উত্তরপ্রদেশের রাজনাথ সিংহ, গুজরাটের অমিত শাহ, মনসুখ মাণ্ডবীয়, সিআর পাটিল, মহারাষ্ট্রের নিতিন গডকড়ী, পীযূষ গয়াল, আসামের সর্বানন্দ সোনোয়াল, কর্নাটকের প্রহ্লাদ জোশী, হরিয়ানার মনোহরলাল খট্টর, ওড়িশায় ধর্মেন্দ্র প্রধান, জুয়েল ওরাওঁ, মধ্যপ্রদেশের বীরেন্দ্র কুমার, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, শিবরাজ সিংহ চৌহান, রাজস্থানের ভূপেন্দ্র যাদব, গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত, বিহারের গিরিরাজ সিংহ, ঝাড়খণ্ডের অন্নপূর্ণা দেবী এবং তেলঙ্গানার জি কিষাণ রেড্ডি।
সহযোগী দলের পাঁচ পূর্ণমন্ত্রীর তালিকায় রয়েছেন: তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)-র কিঞ্জারাপু রামমোহন নায়ডু, জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ)-এর রাজীবরঞ্জন (লল্লন) সিংহ, জনতা দল সেক্যুলার (জেডিএস)-এর এইচডি কুমারস্বামী, লোক জনশক্তি পার্টি রামবিলাস (এলজেপি)-এর চিরাগ পাসোয়ান, হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চা (হাম)-র জিতনরাম মাঝিঁ।
সহযোগী দলের ছয়জন প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে রয়েছেন: শিবসেনার প্রতাপরাও যাদব, রাষ্ট্রীয় লোকদল (আরএলডি)-এর জয়ন্ত চৌধুরী, রিপাবলিকান পার্টি অব ইন্ডিয়া অঠওয়ালে (আরপিআই-এ)-র রামদাস অঠওয়ালে, জেডিইউর রামনাথ ঠাকুর, আপনা দল (সোনেলাল)-এর অনুপ্রিয়া পটেল, টিডিপির চন্দ্রশেখর পেম্মাসানি।
বিজেপি থেকে প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন ৩৫ জন। এরা হলেন: পশ্চিমবঙ্গের শান্তনু ঠাকুর, সুকান্ত মজুমদার, জম্মু ও কাশ্মীরের জিতেন্দ্র সিংহ, রাজস্থানের অর্জুন রাম মেঘওয়াল, ভগীরথ চৌধরি, মহারাষ্ট্রের মুরলীধর মোহল, উত্তরপ্রদেশের জিতিন প্রসাদ, পঙ্কজ চৌধরি, এসপি সিংহ বঘেল, কীর্তিবর্ধন সিংহ, বিএল বর্মা, কমলেশ পাসোয়ান, গোয়ার শ্রীপদ নায়েক, দিল্লির হর্ষ মলহোত্র, অন্ধ্রপ্রদেশের ভূপতিরাজু শ্রীনিবাস বর্মা, ছত্তীসগড়ের তোখন শাহু, হরিয়ানার কৃষ্ণপাল গুজ্জর, রাও ইন্দ্রজিৎ সিংহ, আসামের পবিত্র মার্গেরিটা, বিহারের নিত্যানন্দ রাই, সতীশচন্দ্র দুবে।
বিজেপির প্রতিমন্ত্রীদের তালিকায় আরও রয়েছেন: কর্নাটকের ভি সোমান্না, শোভা কারান্ডলাজে, কেরালার সুরেশ গোপী, তামিলনাড়ুর এল মুরুগান, উত্তরাখণ্ডের অজয় টামটা, মহারাষ্ট্রের রক্ষা খড়সে, তেলঙ্গানার বান্দি সঞ্জয় কুমার, ঝাড়খণ্ডের সঞ্জয় শেঠ, মধ্যপ্রদেশের দুর্গাদাস উইকে ও সাবিত্রী ঠাকুর, গুজরাটের নিমুবেন বাহ্মনিয়া।
পাঞ্জাবের রভনীত সিংহ বিট্টু এবং কেরারার জর্জ কুরিয়েন সংসদের কোনো কক্ষের সদস্য না হয়েও মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন।
ভারতের মোট ২৪টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে মন্ত্রীদের বেছে নেওয়া হয়েছে। শুধু রাজ্য নয়, বিভিন্ন অঞ্চলের উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কোনো রাজ্যের একটি অংশ থেকেই শুধু মন্ত্রী করা হয়নি। বিভিন্ন অঞ্চলের জনপ্রতিনিধিদের মন্ত্রী করা হয়েছে।
সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকেও মন্ত্রী করা হয়েছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) সম্প্রদায় থেকে ২৭ জনকে মন্ত্রী করা হয়েছে। তফসিলি সম্প্রদায়ের ১০ জন প্রতিনিধি মন্ত্রী হলেন। তফসিলি সম্প্রদায়ের মন্ত্রী হলেন পাঁচজন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকে পাঁচজনকে মন্ত্রী করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৮ জন কোনও না কোনও মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন।
ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি