জার্মানিতে গাঁজা বৈধ: ফুলেফেঁপে ওঠার পথে দেশটির গাঁজা শিল্প
ইউরোপের দেশ জার্মানি গাঁজা বৈধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কয়েক মাস আগে। ফলে দেশটিতে গাঁজার বীজ, বাগান তৈরির উপকরণ, সার ইত্যাদির সরবরাহকারীরা উপকৃত হবেন বলে ডয়েচে ভেলেকে (ডিডব্লিউ) জানিয়েছেন জার্মান ক্যানাবিস বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের ড্রিক হাইটপ্রিম।
এপ্রিল থেকে গাঁজাকে আংশিকভাবে বৈধ করেছে দেশটি। ফলে ব্যক্তিগত ব্যবহারে একজন ব্যক্তি তিনটি পর্যন্ত গাঁজার চারা লাগাতে পারবেন। যারা চাষ করতে পারবেন না বা ইচ্ছুক নন, কিন্তু বৈধভাবে গাঁজার নাগাল পেতে চান, তারা গাঁজাসংশ্লিষ্ট সামাজিক ক্লাবগুলোতে যোগ দিতে পারবেন ১ জুলাই থেকে।
হর্টিকালচারের বিভিন্ন উপকরণ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কম্পো গাঁজাচাষীদের কথা মাথায় রেখে নতুন পণ্য সরবরাহ শুরুর পর এটির ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠেছে। গাঁজা চাষের জন্য বিশেষ মাটি ও সার বিক্রি কোম্পানিটির প্রত্যাশার তুলনায় অনেক বেশি ছাড়িয়ে গেছে।
অবশ্য গাঁজার বীজ বিক্রি নিয়ে জার্মানদের মধ্যে এখনো কিছু আইনি ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে অনেকেই বিদেশি সিডব্যাংকগুলোর দিকে ঝুঁকছেন। এরকম একটি সিডব্যাংক বার্সেলোনাভিত্তিক রয়্যাল কুইন সিডস।
জার্মানিতে গাঁজা আংশিক বৈধ হওয়ার পর 'আমরা একদিনে ১০ হাজার ২৩১টি অর্ডার পেয়েছি,' ডিডব্লিউকে বলেন রয়্যাল কুইন সিডসের প্রেসিডেন্ট সাঁই রামসাহাই।
তবে বর্তমানে দৈনিক তিন থেকে চার হাজার অর্ডার আসছে বলে জানান তিনি। এপ্রিলে প্রতিষ্ঠানটির অনলাইন ব্যবসার রেভিনিউ ছিল ছয় মিলিয়ন ইউরো।
গাঁজার বীজ বিক্রি করা আরেকটি বড় প্রতিষ্ঠান নেদারল্যান্ডভিত্তিক জ্যামনেসিয়া। এটিরও জার্মান ক্রেতার সংখ্যা সম্প্রতি বেড়ে গিয়েছে। কোম্পানিটির মহাব্যবস্থাপক নিক এভ ডিডব্লিউকে বলেন, সাধারণত চাষের মৌসুমে বীজের চাহিদা ৩০ শতাংশ বাড়লেও এ বছর গাঁজার বীজের চাহিদা ১৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে।
জার্মানিতে গাঁজার ব্যক্তিগত ব্যবহারের চেয়ে চিকিৎসাক্ষেত্রে ব্যবহার আরও বেশি বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বৈধকরণের ফলে এখন থেকে রোগীরা আগের চেয়ে সহজেই তাদের প্রেসক্রিপশনে গাঁজা পাবেন। এর আগে গার্হস্থ্য পদ্ধতিতে ঔষধের জন্য গাঁজার বাণিজ্যিক উৎপাদন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হলেও বৈধকরণের পর এ অবস্থারও পরিবর্তন হতে যাচ্ছে।
শীর্ষস্থানীয় মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেট-এর একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে, 'গার্হস্থ্য পদ্ধতিতে গাঁজা উৎপাদন ও বিতরণের জন্য [জার্মানিতে] নতুন লাইসেন্স দেওয়া হবে। ফলে গাঁজার বাজার আরও উন্মুক্ত হবে, প্রতিযোগিতা বাড়বে। এতে এ শিল্প আরও শক্তিশালী হতে পারে।'
বর্তমানে জার্মানিতে কেবল একটি কোম্পানির চিকিৎসার জন্য গাঁজা চাষের লাইসেন্স রয়েছে। ডিমক্যান নামক এ প্রতিষ্ঠানটি নতুন আইনের পর উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। এটি বার্ষিক ৬০০ কেজি উৎপাদন থেকে বাড়িয়ে দুই টন করতে চায় বলে একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন।