বহু ভারতীয় মিলিয়নিয়ার যে দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন
এ বছর প্রায় ৪ হাজার ৩০০ ভারতীয় মিলিয়নিয়ার দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি জমাতে পারে। এদের মধ্যে একটি বড় অংশের পছন্দের গন্তব্য সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)।
আন্তর্জাতিক ইনভেস্টমেন্ট মাইগ্রেশন অ্যাডভাইজরি প্রতিষ্ঠান হেনলি অ্যান্ড পার্টনারস- এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
গত বছর এই প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ওই বছর পাঁচ হাজার ১০০ জনের মতো ভারতীয় মিলিয়নিয়ার বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে।
বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ ভারত। মিলিয়নিয়ার মাইগ্রেশনে চীন ও যুক্তরাজ্যের পরই ভারতের অবস্থান। বিশ্বের সর্বাধিক জনসংখ্যার দেশ হলেও, দেশটির মিলিয়নিয়ারদের দেশত্যাগ করার হার চীনের তুলনায় ৩০ শতাংশের কম।
প্রতিবেদনটিতে বলা হচ্ছে, প্রতি বছর হাজার হাজার মিলিয়নিয়ার ভারত থেকে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। এদের অনেকেরই গন্তব্য ইউএই। তবে এত সংখ্যক মিলিয়নিয়ার দেশ ছাড়ালেও উদ্বিগ্ন হওয়ার তেমন কোনো কারণ নেই। কারণ গত এক দশকে দেশটির ৮৫ শতাংশ সম্পদ বেড়েছে এবং দেশছাড়া মানুষের তুলনায় অনেক বেশি নব্য ধনী উঠে এসেছেন।
এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশত্যাগী মিলিয়নিয়ারদের অনেকে ভারতে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখার পাশাপাশি ভারতকেই নিজেদের 'সেকেন্ড হোম' হিসেবে বিবেচনা করে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগ উপদেষ্টা খাত
ভারতের বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানগুলো সক্রিয়ভাবে ইউএইতে সিমলেস বিনিয়োগ অ্যাডভাইজরি পরিষেবা সরবরাহ করে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে: নুভামা প্রাইভেট এবং এলজিটি ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট। এ দুটি প্রতিষ্ঠানই ভারতীয় ক্লায়েন্টদের সহায়তা করার জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। এছাড়া অন্যান্য ব্যাংকও ইউএইতে তাদের উপস্থিতি বাড়াচ্ছে।
হেনলি রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এছাড়া কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাংক এবং ৩৬০ ওয়ান ওয়েলথ সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে ভারতীয় পরিবারগুলোর সম্পদ ব্যবস্থাপনার কাজ করছে।
মিলিয়নিয়ার অভিবাসনের গুরুত্ব
২০২৪ সালে সারা বিশ্বের প্রায় এক লাখ ২৮ হাজারের মতো মিলিয়নিয়ার বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গন্তব্য হিসেবে এসব মানুষের শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউএই।
দেশত্যাগ করা এসব মিলিয়নিয়ার তাদের সম্পদ স্থানান্তরেরর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে অবদান রাখে। ইকুইটির মাধ্যমে ওইসব বিনিয়োগ পুঁজি বাজারকে চাঙা করে।
মিলিয়নিয়ারদের তৈরি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বহু মানুষ উচ্চ বেতনের চাকরির সুযোগ পায়। যার ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণি এর ফলে লাভবান হয়। উদাহরণ হিসেবে মাইক্রোসফট, অ্যাপল ও টেসলার মতো প্রতিষ্ঠানের কথা বলা যায়, এসব প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে তাদের প্রভাব তৈরি করেছে।
একজন ব্যক্তির কাছে ১০ লাখ বা তার বেশি পরিমাণ ডলার থাকলে তাকে মিলিয়নিয়ার বা কোটিপতি বলা হয়।
অভিবাসনের কারণসমূহ
উচ্চ আয়কারী পরিবারগুলো নানা কারণে স্থানান্তরিত হন। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কারণ হলো- নিরাপত্তা, আর্থিক বিবেচনায়, করের সুবিধা, অবসর গ্রহণের পরের সুবিধা, ব্যবসায়ের সুযোগ, অনুকূল জীবনধারা, শিশুদের শিক্ষার সুযোগ, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এবং সামগ্রিক জীবনমান।
ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি