ডেমোক্রেটরা যেভাবে বাইডেনকে বাদ দিতে পারে
আতঙ্কিত ডেমোক্র্যাটরা ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বাদ দেওয়ার দাবি তুলেছেন। কিন্তু প্রথম পদক্ষেপটা তাদের বাইডেনকেই নিতে দিতে হবে।
মার্কিন গণমাধ্যম 'সিএনএন'-এ বাইডেনের বাজে বিতর্ক শেষ হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই উপস্থাপকরা প্রকাশ্যে বাইডেনের জায়গায় অন্য প্রার্থীর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ক্ষুব্ধ ডেমোক্র্যাটদের জন্য সুসংবাদ হলো নভেম্বরের আগে অন্য প্রার্থীকে বাইডেনের জায়গায় বাছাই করার একটি উপায় রয়েছে।
কোনো প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করলে সম্মেলনে নতুন প্রার্থী মনোনয়নের জন্য দলীয় প্রক্রিয়ায় একটি ব্যবস্থা রয়েছে।তবে কয়েক দশক ধরে এ উপায় কাজে লাগানোর কথা কেউ ভাবেইনি।
ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির নিয়ম অনুযায়ী, দলের অন্য নেতারা বাইডেনকে প্রার্থীতা থেকে বাদ দিতে পারে এমন কোনো নিয়ম নেই। তারা কাউকে বাইডেনের স্থলাভিষিক্ত করতে হলে তা কনভেনশন ফ্লোরে মনোনয়ন প্রক্রিয়া উন্মুক্ত করার মাধ্যমে করতে হবে।
এ প্রক্রিয়াটি হলো: প্রথমে বাইডেনকে তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে হবে। এরপর তার জায়গায় অন্য কাউকে বাছাইয়ে একটি উন্মুক্ত প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
এবারের 'প্রাইমারি'তে প্রায় চার হাজার ডেলিগেটের মধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন বাইডেন। তবে সেসময় যারা বাইডেনকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাদের অনেকেও এই বিতর্কের পর নড়েচড়ে বসেছেন।কারণ বাইডেনকে ভোট দেওয়ার কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা তাদের নেই।
তবে তারা যদি বাইডেনকে মনোনয়ন প্রত্যাহারে চাপ দিতে চায়, তাহলে কমপক্ষে তাদের অর্ধেককে নিজেদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করতে হবে এবং তাকে (বাইডেন) প্রত্যাখ্যান করতে হবে।
তার স্থলাভিষিক্ত প্রার্থী হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, গভস,গ্যাভিন নিউসম, গ্রেচেন হুইটমার এবং জেবি প্রিটজকারসহ আরও অনেকের নাম বিবেচিত হতে পারে।
তবে শুধু অঙ্গিকারবদ্ধ প্রতিনিধিরাই এই প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখেন না। ২০১৬ সালের বিতর্কিত 'প্রাইমারি'র পর থেকে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি 'সুপারডেলিগেটদের' (নির্বাচিত কর্মকর্তা ও দলীয় নেতারা; যারা যাকে খুশি ভোট দিতে পারেন) বেশিরভাগ ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে। প্রথম ব্যালটে কোনো প্রার্থী সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধি না পেলে এই সুপারডেলিগেটরা ভোট দিতে পারবেন।
একটি উন্মুক্ত ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সম্মেলন ৭০০জনের বেশি দলীয় সদস্যকে নতুন প্রার্থী বাছাইয়ের মূল ভূমিকা পালনের সুযোগ দেবে।
তবে এখানে বাইডেনের ইচ্ছাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। তিনি তার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করে পুরো প্রক্রিয়াটিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে পারেন।
যদি কমলা হ্যারিস মনোনয়ন পানও, তাহলে তার নিজেরও একজন ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর প্রয়োজন হবে। এ নিয়েও জল কম ঘোলা হবে না।
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই বাইডেন ও তার দল জোর দিয়ে আসছে যে তিনি পুনর্র্নিবাচনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আর আমেরিকান সামোয়া বাদে বাইডেন সব প্রাইমারি ও ককাসে জয়ী হয়েছেন ৮৫ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে।
কিন্তু বিতর্কের খারাপ পারফরম্যান্সের প্রচণ্ড চাপ এবং ভোটের সংখ্যায় আরও ঝিমিয়ে পড়া সবকিছু বদলে দিতে পারে।
ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি