বাইডেনে ভরসা পাচ্ছেন না ডেমোক্র্যাটদের অর্থ দাতারা, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান
নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে নাস্তানাবুদ হওয়ার পর থেকেই একের পর এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে জো বাইডেনকে।
নিজ দল ডেমোক্রেট-এর সদস্য এবং সমর্থকদের অনেকেই ইতোমধ্যে নির্বাচনে বাইডেনের অংশগ্রহণকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তাকে সরে দাঁড়াতে বলেছেন।
এরই মধ্যে ডেমোক্র্যাটদের কয়েকজন বিত্তশালী অর্থ দাতা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য বাইডেনের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন। এমনকি তারা প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেছেন, বাইডেনের পরিবর্তে নতুন কাউকে প্রার্থীতা না দেয়া হলে তারা দলকে অর্থ দেয়াই বন্ধ করে দেবেন।
অ্যাবিগেল ডিজনি এবং অন্যরা সহ কিছু প্রভাবশালী অর্থ দাতা জো বাইডেনের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্বিবেচনা করছেন। ডিজনি বাইডেনকে ভালো মানুষ বললেও এবং দেশের জন্য তিনি যা করেছেন তা স্বীকার করা সত্ত্বেও, বাইডেনের ট্রাম্পকে পরাজিত করার ক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
একইভাবে জনহিতৈষী গিডিয়ন স্টেইন এবং ডেমন লিন্ডেলফের মতো হলিউড ব্যক্তিত্বরা ইঙ্গিত দিয়েছেন, বাইডেন সরে না গেলে তারা আর্থিক সহায়তা বন্ধ রাখতে পারেন।
গিডিয়ন স্টেইন নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, বাইডেন সরে না গেলে তার পরিবার নির্বাচনে প্রচারণা সহ প্রেসিডেন্ট নির্বাচণ নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোকে অনুদান হিসেবে ৩.৫ মিলিয়ন ডলার দেবে না।
হলিউডের প্রযোজক ডেমন লিন্ডেলফ, যিনি এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ডেমোক্র্যাটদের ১ লাখ ডলারের বেশি অনুদান দিয়েছেন তিনি ডেডলাইনে একটি প্রবন্ধে সহকর্মী অর্থ দাতাদেরকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী পদে পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত তহবিল দেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
ম্যাসাচুসেটস-ভিত্তিক ভারতীয়-আমেরিকান শিল্পপতি রমেশ কাপুর ১৯৮৮ সাল থেকে ডেমোক্র্যাটদের জন্য তহবিল সংগ্রহের কাজ করেছেন। তিনি বিবিসিকে তার মতামত জানাতে গিয়ে বলেছেন, বাইডেনের সরে গিয়ে অন্য কাউকে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ করে দেয়া উচিত।
কাপুরের মতো কিছু অর্থ দাতা বাইডেনকে নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেও, অন্যরা তাকে এখনো সমর্থন করছেন। একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ দাতা এ মাসের শেষের দিকে ভার্জিনিয়ায় বাইডেনের জন্য একটি তহবিল সংগ্রহের সাথে জড়িত থাকার পরিকল্পনা করছেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের পরই ৮১ বছর বয়সী বাইডেনকে ভোটের মাঠ ছাড়ার জন্য প্রচণ্ড চাপ তৈরি হয়েছে কারণ যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে বয়স্ক বাইডেনকে আর যোগ্য বলে বিবেচনা করছেন না বর সংখ্যক মানুষ। বিতর্ক অনুষ্ঠানেও বাইডেনের আচরণে বয়সের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে।
কিছু ডেমোক্রেটিক ভোটারও বাইডেনের লড়াইয়ের সক্ষমতার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। শুক্রবার প্রকাশিত ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক জরিপে দেখা যায়, ৮৬ শতাংশ ডেমক্র্যাট বাইডনকে সমর্থন দেবেন; অথচ ফেব্রুয়ারিতে এ হার ছিল ৯৩ শতাংশ।
বাইডেন স্বীকার করেছেন, বিতর্কের রাতে তিনি ভুল করেছেন। তবে নভেম্বরের অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তিনিই দলের নেতৃত্বে থাকবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
শুক্রবার (৫ জুলাই) এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, একমাত্র 'লর্ড অলমাইটি' তাকে নির্বাচনি লড়াই থেকে সরে দাঁড়াতে রাজি করাতে পারেন।
এ সময় বাইডেন প্রথম নির্বাচনি বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ধরাশয়ী হওয়ার জন্য ক্লান্তি ও 'বাজের রকমের ঠান্ডা' লাগাকে দায়ী করেন।