২০২৩ সালে নাইজেরিয়ার সরকারি কর্মকর্তারা ১৩০ কোটি ডলার ঘুস নিয়েছেন: জরিপ
সরকারি সেবা দেওয়ার জন্য ঘুস নিচ্ছেন নাইজেরিয়ার সরকারি কর্মকর্তারা। শহরের কেন্দ্রীয়ঞ্চলের চেয়ে গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দাদের বেশি ঘুস দিতে হচ্ছে। দেশটির ন্যাশনাল ব্যুরো অভ স্ট্যাটিস্টিকস-এর (এনবিএস) সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
এনবিএসের তথ্য বলছে, গত বছর আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল দেশ নাইজেরিয়ার মানুষ নগদ অর্থে প্রায় ১৩০ কোটি বা ১.৩ বিলিয়ন ডলার—স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় ৭২১ বিলিয়ন নাইরা—ঘুস দিতে বাধ্য হয়েছেন। ঘুসের এ অঙ্ক দেশটির জিডিপির প্রায় ০.৩৫ শতাংশের সমান।
বৃহস্পতিবার এনবিএসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শহরের চাইতে গ্রামাঞ্চলে সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুস নেওয়ার হার ও প্রবণতা বেশি। ২০২৩ সালে শহরাঞ্চলের মানুষের গড় ঘুস দেওয়ার পরিমাণ ছিল ৪.৫, আর গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দাদের গড় ঘুস দেওয়ার পরিমাণ ছিল ৫.৮।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সবচেয়ে বেশি ঘুস নিয়েছেন প্রসিকিউটর, জমি নবন্ধন কর্মকর্তা, এবং কাস্টম ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। তবে সবচেয়ে বেশি ঘুস পেয়েছেন বিচারক ও ম্যাজিস্ট্রেটরা।
নাইজেরিয়ার নতুন সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও সরকারি কর্মকর্তারা সরকারের অর্থ নিজেরাই আত্মসাতের জন্য কুখ্যাত। দায়িত্ব পালনের জন্য তারা প্রায়ই ঘুস দাবি করেন।
এ কারণে নাইজেরিয়া নিয়মিতই সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় থাকে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচকে ১৮০ দেশের মধ্যে নাইজেরিয়ার অবস্থান ১৪৫তম।
মুদ্রা সংস্কার ও জ্বালানিতে ভর্তুকি আংশিক তুলে নেওয়ার কারণে নাইজেরিয়ার জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। ব্যয়বৃদ্ধির চাপে ২৩ শতাংশ নাইজেরিয়ান ঘুস দিতে রাজি হননি বলে জানিয়েছে এনবিএস।
অর্থনৈতিক সংকটের জেরে নাইজেরিয়ার অবস্থা এতই খারাপ যে মানুষ খাবারের জন্য গুদাম লুট করতে বাধ্য হয়েছে। খাবারের জন্য পদপিষ্ট হয়েও মারা গেছে অনেকে।
সমীক্ষায় উঠে এসেছে, নাইজেরিয়ানরা দুর্নীতির চেয়ে অর্থনৈতিক সমস্যা নিয়ে বেশি চিন্তিত। নাইজেরিয়ানদের উদ্বেগের তালিকায় প্রথম তিনটি স্থান দখল করে রেখেছে অর্থনৈতিক সংকট, অনিরাপত্তা ও বেকারত্ব। দুর্নীতি আছে চতুর্থ অবস্থানে।
২০২৩ সালে নাইজেরিয়ায় বেসরকারি খাতে ঘুস প্রদান দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। তারপরও দুর্নীতিতে সরকারি খাতই এগিয়ে রয়েছে আফ্রিকার দেশটিতে।