রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে চীনের মধ্যস্থতা চায় ইউক্রেন
চলমান রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতা করতে চীনের সহায়তা চেয়েছে ইউক্রেন। গত বুধবার (২৪ জুলাই) বেইজিং সফরের সময় ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে রাশিয়ার সাথে যুদ্ধের কূটনৈতিক সমাধানে কিয়েভের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ ব্যক্ত করেন এবং চীনকে প্রক্রিয়ায় আরও সক্রিয়ভাবে জড়িত করার ইঙ্গিত দেন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করার পর এবারই প্রথম যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতা করতে চীনের সহায়তা চেয়েছে কিয়েভ। এদিকে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসার উদ্দেশ্যে নিজেদের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন তৈরির জন্য কিয়েভের জোর প্রয়াসের মধ্যেই বেইজিং সফর করলেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে আলোচনাকে 'গভীর' আখ্যায়িত করে দিমিত্র কুলেবা সাংবাদিকদের জানান বলেন, "রাশিয়া আলোচনায় বসতে আন্তরিকতা দেখালে ইউক্রেনের তাতে কোনো আপত্তি থাকবে না। কিন্তু রাশিয়ার এখন পর্যন্ত এমন কোনো আন্তরিকতা প্রকাশ করেনি।'
এদিকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধে মস্কো-কিয়েভ সরাসরি আলোচনা শুরুর 'সব শর্ত' এখনো পূরণ না হওয়ায় আলোচনার সময় আসেনি।
কিয়েভের প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যেসব দাবি জানিয়েছেন তা হলো: কিয়েভ চারটি অধিকৃত অঞ্চল আত্মসমর্পণ করবে, কখনই ন্যাটোতে যোগদান করবে না এবং যুদ্ধবিরতি ও আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে সামরিক শক্তি কমিয়ে আনবে।
ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গত মাসে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী ৮০টির বেশি দেশ শান্তি আলোচনার ভিত্তি হিসেবে রাশিয়ার প্রতি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করার দাবি জানিয়েছিল।
চলতি বছর আরেকটি শান্তি সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিভিন্ন দেশের কাছে নিজেদের খাদ্যনিরাপত্তা, জ্বালানির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবন্দি বিনিময়ের সাফল্যের কথাও প্রচার করছে ইউক্রেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে সম্ভাব্য ভোটাভুটিতে নিজেদের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন বাড়াতে এসব তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে কিয়েভ।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, স্থায়ী শান্তির জন্য পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করতে তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করবেন। ইউক্রেনে সামরিক সাহায্য পাঠানোর বিরোধিতাকারী ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি পুনরায় নির্বাচিত হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধ শেষ করবেন।
ভলোদিমির জেলেনস্কির এমন মনোভাবকে স্বাগত জানিয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, "আমরা এখনও বুঝে উঠতে পারিনি বাক্যগুলোর পিছনে ঠিক কী উদ্দেশ্য আছে; কী সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার কথা বলা হচ্ছে।"