মগজখেকো অ্যামিবায় আক্রান্তের পরেও বিরলভাবে বেঁচে গেল ভারতীয় কিশোর
ভারতের আফনান জসীম মগজ খেকো অ্যামিবাতে আক্রান্ত হয়েছিল। তবে সৌভাগ্যবশত তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন; যা খুব কম মানুষেরই ভাগ্যে জোটে।
জসীম কেরালা রাজ্যের এক পুকুরে সাঁতার কাটতে গিয়ে গত জুন মাসে প্রাইমারি অ্যামোইবিক মেনিনগোয়েনসেফালাইটিস (পিএএম) রোগটিতে আক্রান্ত হয়। তবে তার বাবার বিচক্ষণতার জন্য ছেলেটি প্রাণে বেঁচে যায়।
চিকিৎসকেরা জানান, সম্ভবত নায়েগলিরা ফওলিরি নামের এক অ্যামিবা তার দেহে প্রবেশ করেছিল। এতে করে সৃষ্ট রোগের মৃত্যুঝুঁকি ৯৭ শতাংশ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফোর ডিজিজ এন্ড প্রিভেনশনের তথ্যমতে, ১৯৭১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে মাত্র আটজন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রাণে বেঁচেছেন। যারা মূলত অস্ট্রেলিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও পাকিস্তানের নাগরিক।
রোগটির ক্ষেত্রে লক্ষণগুলি দেখা দেওয়ার নয় ঘন্টা থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে সংক্রমণ নির্ণয় করতে হয়। যা রোগটি থেকে মুক্ত হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
চিকিৎসকেরা মনে করেন, সঠিক সময়ে চিকিৎসা রোগটি থেকে পরিত্রাণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে রোগটির লক্ষণ হিসেবে মাথাব্যথা, জ্বর, বমি বমি ভাব, বমি, খিঁচুনি ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়।
জসীমের চিকিৎসক ডাক্তার রউফ বলেন, "রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা নির্ণয় করা সম্ভব হয়েছিল।"
এক্ষেত্রে অবশ্য জসীমের বাবা বেশ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন। প্রথমত, সোশ্যাল মিডিয়ার ক্যাম্পেইনে তিনি এমন সব বিরল রোগের লক্ষণগুলো দেখেছিলেন। যার ফলে লক্ষণ দেখা দেওয়ার পরেই ছেলেকে তিনি দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। একইসাথে পুকুরে গোসল করার কথাও তিনি চিকিৎসকে জানিয়েছিল।
অ্যামিবাগুলো মিঠা পানির পুকুরেই থাকে; বিশেষ করে যখন তা গরম থাকে। সেগুলো অনুনাসিক পথের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে। রউফ বলেন, "পরজীবীটি তখন বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ নির্গত করে মস্তিষ্ককে ধ্বংস করে।"
চিকিৎসক রউফ আরও বলেন, "মানুষের পানিতে লাফ দেওয়া বা ডুব দেওয়া উচিত নয়। এতে অ্যামিবার শরীরে প্রবেশে করতে পারে। পানি দূষিত হলে অ্যামিবা আপনার নাক দিয়ে প্রবেশ করে।"
১৯৬৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০০টি পিএএম রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৩০ জনই ভারতীয়।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান