যুক্তরাজ্যে নতুন করে দাঙ্গা, অন্তত ৪০০ গ্রেফতার
গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের সাউথপোর্টে ছুরি হামলায় তিন শিশু হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে দেশটির বিভিন্ন শহরে অভিবাসনবিরোধী উগ্র ডানপন্থী বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এসব সহিংস বিক্ষোভের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবারও বিক্ষোভ ও সহিংসতা অব্যাহত ছিল। খবর বিবিসির।
সোমবার রাতে বেলফাস্ট, ডার্লিংটন ও প্লাইমাউথে পুলিশের ওপর হামলার পর যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন অংশে দাঙ্গা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। দক্ষিণ বেলফাস্টে একটি সুপারমার্কেটের কাছে পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ও পেট্রোল বোমা ছুঁড়েছে বিক্ষোভকারীরা। সান্ডারল্যান্ড, বেলফাস্ট, কার্ডিফ, লিভারপুল, ম্যানচেস্টারসহ বিভিন্ন শহরেও বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে তারা সার্বক্ষণিক কাজ করছে।
ইংল্যান্ডের বিভিন্ন অংশে দাঙ্গার ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের সোমবার লিভারপুল, সাউথ টাইনসাইড এবং হালসহ বিভিন্ন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের সাউথপোর্টে শিশুদের নাচের ক্লাসে ছুরি হামলায় তিন শিশু নিহত হওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন ব্যক্তি একজন 'উগ্র ইসলামপন্থি অভিবাসী'— অনলাইনে দ্রুত এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ার পরই বিভিন্ন শহরে শত শত অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভকারীরা দাঙ্গায় জড়ায়।
ল্যাঙ্কাশায়ারের ব্যাঙ্কসের বাসিন্দা অ্যাক্সেল মুগানওয়া রুদাকুবানার বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা, ১০টি হত্যাচেষ্টা এবং একটি ছুরি রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে।
সপ্তাহান্তে প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার এই দাঙ্গাকে 'উগ্র ডানপন্থী গুন্ডামি' এবং সহিংসতা মোকাবেলায় আরও কঠোর হওয়ার কথা জানিয়েছেন। এরপরে প্লাইমাউথেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ডেভন ও কর্নওয়াল পুলিশ জানিয়েছে, উগ্র ডানপন্থিদের বিক্ষোভ ও পাল্টা বিক্ষোভ মোকাবেলায় সোমবার গিল্ডহল এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
সুপারিনটেনডেন্ট রাস দাওয়ে বলেন, 'জনশৃঙ্খলা ভঙ্গ ও হামলার পরিসরের জন্য' বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কেউ অপরাধ করলে বা জনবিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তাকে 'দৃঢ়ভাবে মোকাবেলা করা হবে'।
দাঙ্গার মুখে গ্রীষ্মকালীন অবকাশ থেকে পার্লামেন্ট প্রত্যাহারের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রধানমন্ত্রী। গত সপ্তাহান্তে বেলফাস্টে সহিংস বিক্ষোভের পরে উত্তর আয়ারল্যান্ডের অ্যাসেম্বলিকে স্টরমন্টে ডেকে আনা হয়েছে।
এদিকে,ম স্যার কেয়ার এক্স-এ একটি ভিডিও পোস্ট করে বলেছেন যে এই অস্থিরতা কোনো প্রতিবাদ নয়, এটি খাঁটি সহিংসতা। তিনি বলেন, 'মসজিদ বা মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর হামলা আমরা বরদাশত করব না'।
জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, 'সব সম্প্রদায়ের ওপর হামলা নিয়ে আপনার কি উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত নয়?
মেট্রোপলিটন পুলিশের সন্ত্রাস দমন বিভাগের সাবেক প্রধান নেইল বসু বিবিসিকে বলেন, গত সপ্তাহের কিছু দাঙ্গা সীমা অতিক্রম করে সন্ত্রাসে পরিণত হয়েছে।