দুইদিন ধরে পুরো বিদ্যুৎহীন কিউবা
কিউবায় বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা তৃতীয়বারের মতো ব্যাহত হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে কিউবার কর্তৃপক্ষ এ খবর জানায়। সেখানে গত শুক্রবার থেকে লাখ লাখ মানুষ অন্ধকারে ডুবে আছে। বৈদ্যুতিক পরিষেবা পুনঃস্থাপন সরকারের কার্যকারিতা নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠেছে।
দ্বীপের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ার পর কিউবার জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড গত শুক্রবার মধ্যরাতে প্রথমবার ভেঙে পড়ে। রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবার সকালে গ্রিড আবারও বন্ধ হয়ে যায়।
গতকাল সন্ধ্যার আগেই জানানো হয়েছিল, বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধারে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু পরে ঘোষণা আসে গ্রিড তৃতীয়বারের মতো ভেঙে পড়েছে।
হাভানা ইলেকট্রিক কোম্পানি শনিবার রাতে টেলিগ্রামে জানায়, গতকাল রাত ১০টা ২৫ মিনিটে জাতীয় ইলেকট্রো-এনার্জেটিক সিস্টেম পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
তবে পরে টেলিগ্রাম থেকে পোস্টটি সরিয়ে ফেলা হয়। পোস্টটি কেন সরানো হয়েছে তার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে আজ রবিবার সকালে লাখ লাখ মানুষ তখনও বিদ্যুৎহীন অবস্থায় ছিলেন।
হাভানা ইলেকট্রিকের পোস্টের কিছুক্ষণ পর কিউবার জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানায়, তারা বিদ্যুৎ পুনরায় চালু করার চেষ্টা করছে, তবে তারা আরও জানায়, 'পশ্চিমের সাব-সিস্টেমে' আরেকটি বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মন্ত্রণালয় তাদের এক্স প্লাটফর্মে জানিয়েছে, "বিদ্যুৎ ব্যবস্থার পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া আরও জটিল হয়ে পড়ছে।
তৃতীয়বার গ্রিড ধসে পড়ায়, সরকারের জন্য এটি একটি বড় বিপর্যয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, জনগণ ইতোমধ্যেই খাদ্য, ওষুধ এবং জ্বালানির গুরুতর সংকটের কারণে ক্লান্ত।
এরই মধ্যে রয়টার্সের প্রতিবেদক বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধারের দাবিতে দুটি ছোট প্রতিবাদ দেখেছেন। এর একটি দেখেছেন মারিয়ানাওতে এবং অন্যটি হাভানার কয়াত্রো কামিনোস এলাকায়। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আরও বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদের খবর পাওয়া গেছে। কিন্তু রয়টার্স সেগুলোর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
বিদ্যুৎ না থাকায় কিউবার ইন্টারনেটে ট্র্যাফিক গতকাল শনিবার ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে। কারণ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে অধিকাংশ দ্বীপবাসী ফোন চার্জ করতে পারছে না। এর ফলে অনেকেই অনলাইনে আসতে পারছেন না।
শনিবার দিন নেটব্লকস জানায়, "দ্বীপে দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে কিউবার অনেকাংশ অফলাইন রয়েছে।"
তবে এ ধসের আগে, এমন গুরুতর বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে জ্বালানি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে গত শুক্রবার কিউবার কমিউনিস্ট সরকার কম-প্রয়োজনীয় কর্মীদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে এবং স্কুল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
কয়েক সপ্তাহ যাবত বিদ্যুতের ঘাটতি, বিশেষ করে দিনে ১০ থেকে ২০ ঘণ্টার মতো বিদ্যুৎ না থাকায় সরকারকে দায়ী করা হচ্ছে। এ সবকিছুর পিছনে অবশ্য দেশের কাঠামোগত অবক্ষয়, জ্বালানি সংকট এবং বাড়তি চাহিদা দায়ী।
তবে এ পরিস্থিতির জন্য কিউবা যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকেও দায়ী করছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা জ্বালানি ও তেল উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে বলে দাবি করে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।