তীরে ভিড়তে না দেয়ায় ইন্দোনেশিয়া উপকূলে ভেসে আছেন ১৪০ রোহিঙ্গা, ৩ জনের মৃত্যু
কক্সবাজার থেকে প্রায় ১৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী সমুদ্রপথে ইন্দোনেশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের উপকূলে নামতে না দেয়ায় এখনও দেশটির উত্তরের আচেহ প্রদেশের উপকূল থেকে প্রায় ১ মাইল দূরে একটি কাঠের নৌকায় ভেসে আছেন তারা। এরই মধ্যে যাত্রাপথে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নীল রঙের নৌকাটি গত শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) থেকে উপকূলে ভাসমান রয়েছে। প্রায় ১৪০ জন দুর্বল ও ক্ষুধার্ত রোহিঙ্গাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। দুই সপ্তাহ আগে তারা কক্সবাজার থেকে যাত্রা শুরু করে। যাত্রাপথে তিনজন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া, স্বাস্থ্য অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১১ জন রোহিঙ্গাকে রোববারের পর থেকে (২০ অক্টোবর) স্থানীয় একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দক্ষিণ আচেহ মাছ ধরার সম্প্রদায়ের প্রধান মুহাম্মদ জাবাল বলেন, "আমাদের জেলে সম্প্রদায়, তাদেরকে অবতরণ করতে দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। অন্যান্য স্থানে যা ঘটেছে তার কারণে তারা [রোহিঙ্গারা] স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে।"
স্থানীয় বন্দরে একটি বড় ব্যানারে লেখা ছিল, "দক্ষিণ আচেহ রিজেন্সির জনগণ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আগমন প্রত্যাখ্যান করছে।"
আচেহ পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৯ অক্টোবর কক্সবাজার থেকে মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে দলটি। নৌকার কিছু যাত্রী অন্যান্য দেশে যাওয়ার জন্যও অর্থ দিয়েছিলেন বলে জানা যায়।
জাবাল জানিয়েছেন, স্থানীয় বাসিন্দারা শরণার্থী দলটিকে খাদ্য সরবরাহ করেছে এবং জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) থেকেও তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, নৌকাটি যখন বাংলাদেশ ছেড়ে আসে তখন এটিতে ২১৬ জন আরোহী ছিলেন এবং তাদের মধ্যে ৫০ জন ইন্দোনেশিয়ার রিয়াউ প্রদেশে নেমে গেছেন বলে জানা গেছে।
মানব পাচারের অভিযোগে আচেহ পুলিশ তিনজন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মিয়ানমারে সামরিক অভিযানের পর বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে এবং তারা বর্তমানে কক্সবাজারের জনাকীর্ণ শরণার্থী শিবিরগুলোতে বসবাস করছে। বর্তমানে শিবিরগুলোতে প্রায় ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা অবস্থান করছে, যাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম কারণ সেখানে তাদের নাগরিকত্বসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন