যুদ্ধাপরাধ হতে পারে এমন আদেশ সৈন্যদের প্রত্যাখ্যান করা উচিত: প্রাক্তন ইসরাইলি নিরাপত্তা উপদেষ্টা
চারজন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এবং দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এরান এতহিওন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর একজন দীর্ঘদিনের সমালোচক হিসেবে পরিচিত।
সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এরান এতহিওন সতর্ক করে বলেছেন, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) উত্তর গাজায় যুদ্ধাপরাধ করেছে। তিনি বলেছেন, সেনা কর্মকর্তা এবং সৈন্যদের অবৈধ আদেশ প্রত্যাখ্যান করা উচিত।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "তাদের আদেশ প্রত্যাখ্যান করা উচিত। যদি কোনও সৈন্য বা কর্মকর্তাকে এমন কিছু করতে বলা হয় যা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে সন্দেহজনক হতে পারে, তবে তাদের তা প্রত্যাখ্যান করা উচিত। আমি যদি একজন সৈন্য হতাম তবে এটাই করতাম। আমি মনে করি, যে কোনও ইসরায়েলি সৈন্যেরও তাই করা উচিত।"
জাবালিয়া থেকে বর্তমানে হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে যাচ্ছেন কারণ ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামাসের পুনরায় সংঘটিত হওয়ার চেষ্টা বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, এতহিওন জাবালিয়ার নাগরিকদের এবং তার দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। "বিপজ্জনকভাবে নিয়মগুলো লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এখানে প্রতিশোধ নেওয়ার এবং রাগের ব্যাপার রয়েছে," তিনি বলেন।
তিনি জানান, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পরে ইসরায়েলে প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হয় এবং ২০০ এর বেশি মানুষ অপহৃত হয়। তিনি বলেন, "প্রতিশোধের ইচ্ছাটা বোঝা যায়। এটি মানবিক, তবে আমরা গ্যাং নই, আমরা সন্ত্রাসী সংগঠন নই এবং আমরা কোনও মিলিশিয়া নই। আমরা একটি সার্বভৌম দেশ। আমাদের ইতিহাস আছে, আমাদের নীতি আছে, আমাদের মূল্যবোধ আছে এবং আমাদের আন্তর্জাতিক আইন এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের অধীনে কাজ করতে হবে যদি আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সদস্য হিসেবে থাকতে চাই, যা আমরা চাই।"
তিনি একজন সাবেক সেনা সদস্য হিসেবে বলেন, "আমি একজন উদ্বিগ্ন নাগরিক, যার উদ্দেশ্য নিজের আওয়াজ তোলা। তাই আমি এটা করছি। আমি নিশ্চিত করতে চাই, কোনও সৈন্য যাতে যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত না হয়।"
ইসরায়েল যুদ্ধকালীন কার্যক্রমের জন্য বাড়তি আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র হুমকি দিয়েছে, যদি ইসরায়েল গাজায় সাহায্য বাড়ানোর উদ্যোগ না নেয় তবে তারা অস্ত্রের চালান বন্ধ করবে।
জাতিসংঘ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বারবার ত্রাণ ও সাহায্য পরিবহনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনেছে; সর্বশেষ উত্তর গাজায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।
জাবালিয়া থেকে নাগরিকদের পালিয়ে যেতে বাধ্য করার জন্য সংকট সৃষ্টি করার জন্য একটি পরিকল্পিত নীতি বাস্তবায়ন করার অভিযোগ ধারাবাহিকভাবে অস্বীকার করেছে আইডিএফ । ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে হামাসের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ করেছে। পাশাপাশি স্কুল ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আক্রমণ চালানোর অভিযোগ এনেছে।
মে মাসে আইডিএফ জানিয়েছে, "হামাস গাজার জনগণের বিরুদ্ধে অত্যাচার করতে, তাদেরকে শোষণ করতে, তাদের সাহায্য চুরি করতে এবং যখন তাদের সড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন, তখন তাতে বাধা দিতে দ্বিধা করে না।"