ভারতীয় টাইকুন, যিনি ৬০ ডলারে ব্যবসা শুরু করে ৫ বিলিয়নের মালিক
হিতেশ চিমনলাল দোশি ১৯৮৫ সালে এক আত্মীয়ের কাছ থেকে ৫ হাজার রুপি (৬০ ডলার) ঋণ নিয়ে ভারতের জ্বালানি সেক্টরে কাজ শুরু করেন। প্রায় ৪০ বছর পর তিনি ভারতের নবায়নযোগ্য শক্তির বৃহত্তম কোম্পানিগুলির মধ্যে একটি ওয়ারি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন৷ গত সোমবার মুম্বাইতে আইপিও সেক্টরে গ্রুপটির সোলার সেল তৈরিকারক কোম্পানি ওয়ারী এনার্জিস লিমিটেডও যুক্ত হয়েছে। একইসাথে দোশি ও তার পরিবার বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।
সম্প্রতি ওয়ারি এনার্জির শেয়ারের মূল্য ৫৬ ভাগ বেড়েছে। এক্ষেত্রে ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্স অনুসারে, বর্তমানে দোশি পরিবারের নেট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৫.২ বিলিয়ন। যা তালিকায় তাদের পূর্ববর্তী সম্পদের প্রায় দ্বিগুণ।
৫৭ বছর বয়সী দোশী ওয়ারি এনার্জির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। আর তার দুই ভাই ও ভাগ্নে গ্রুপের বোর্ড পরিচালক। এছাড়াও পরিবারটি ইঞ্জিনিয়ারিং শাখা ওয়ারী রিনিউয়েবল টেকনোলজিস লিমিটেড এবং এনার্জি স্টোরেজ কোম্পানি ওয়ারী টেকনোলজিস লিমিটেডের বৃহত্তম শেয়ারহোল্ডার।
ওয়ারি এনার্জিস ভারতের বৃহত্তম সৌর মডিউল প্রস্তুতকারক; যার সক্ষমতা ১২ হাজার মেগাওয়াট। কোম্পানিটির বেশিরভাগ আয় আসে তা যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি থেকে। এক্ষেত্রে চীনের সৌর কোষের উপর দেশটির শুল্কের কারণে গত কয়েক বছরে তা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মহারাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করা দোশি ১৯৮৫ সালে মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রী চিনাই কলেজ অফ কমার্স অ্যান্ড ইকোনমিক্সে ভর্তি হন। সেখানে থাকাকালীন দোশি হার্ডওয়্যার, ইলেকট্রনিক্স ইত্যাদির ব্যবসা শুরু করতে একজন আত্মীয়ের কাছ থেকে ৫ হাজার রুপি (৬০ ডলার) ধার নিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি ইকোনমিক টাইমসকে বলেন, এই ব্যবসার লাভ থেকে তিনি নিজের খরচ যোগাতেন ও কলেজের ফি পরিশোধ করতেন।
স্নাতক শেষ হওয়ার পর দোশি একটি ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাংক থেকে দেড় লাখ রুপি ধার নিয়েছিলেন। যেটি গ্যাস স্টেশনের সরঞ্জাম ও শিল্প ভালভ তৈরি করতো। সময়ের পরিক্রমায় তিনি পানির পাম্প, হিটার, কুকার ইত্যাদির মতো বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের ব্যবসায় সম্ভাবনা দেখেছিলেন।
দোশি সবচেয়ে বড় অর্ডার পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে। ২০০৭ সালে জার্মানিতে একটি ট্রেড এক্সিবিউশনে যাওয়ার পর তিনি সৌর শক্তির সম্ভাবনা দেখে অভিভূত হয়েছিলেন। এই কারণেই তিনি খাতটিতে ব্যবসা করতে অনুপ্রাণিত হন।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ফেডারেল ও রাজ্য সরকার জ্বালানি অবকাঠামো ও নীতিগত দিক থেকে সংস্কার আনছে। এর ফলে দোশির জ্বালানি প্রতিষ্ঠানও লাভবান হচ্ছে।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান