জাপানে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে কমছে প্রথম চুম্বনের অভিজ্ঞতা, জন্মহার নিয়ে উদ্বেগ
জাপানে একটি নতুন সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সি প্রতি চারজন কিশোরের মধ্যে মাত্র একজনেরই প্রথম চুমু নেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিশোরীদের মধ্যে এই হার আরও কম, মাত্র এক চতুর্থাংশের বেশি কিশোরী প্রথম চুমুর স্বাদ নিয়েছেন। খবর বিবিসি'র।
১৯৭৪ সাল থেকে জাপানে এই সমীক্ষা শুরু হয়েছিল, এবং এবারের ফলাফল সবচেয়ে কম, যা দেশটির জন্মহার নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।
জাপান সেক্স এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন পরিচালিত এ সমীক্ষায় ১২ হাজার ৫৬২ জন ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করেন। প্রতি ছয় বছর অন্তর এই সমীক্ষা চালানো হয়। ২০০৫ সাল পর্যন্ত প্রায় অর্ধেক ছেলে মেয়ের প্রথম চুমুর অভিজ্ঞতা থাকলেও, এরপর থেকে তা ব্যাপক হারে কমতে থাকে।
সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে, কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে যৌন সম্পর্কের হারও কমেছে। ২০১৭ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে, উচ্চ বিদ্যালয়ের ছেলেদের মধ্যে যারা যৌন সম্পর্ক করেছে, তাদের সংখ্যা ৩ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ১২ শতাংশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। কিশোরীদের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ কমে হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর জন্য কোভিড-১৯ মহামারি দায়ী হতে পারে। মুসাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী ইউসুকে হায়াশির মতে, কোভিডের সময় স্কুল বন্ধ থাকা এবং শারীরিক যোগাযোগের ওপর বিধিনিষেধের কারণে অনেক কিশোর-কিশোরী যৌনতা সম্পর্কে আগ্রহ হারিয়েছে।
এদিকে, আরেকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, জাপানের প্রায় অর্ধেক বিবাহিত দম্পতি যৌন সম্পর্কহীন। এই তথ্যগুলো জাপানের নিম্ন জন্মহার নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
কিছু গবেষক আশঙ্কা করছেন যে, বর্তমানে ১২৫ মিলিয়ন জনসংখ্যা থাকা জাপানের জনসংখ্যা শতাব্দীর শেষ নাগাদ ৫৩ মিলিয়নের নিচে নেমে আসতে পারে।
অন্যান্য কারণ হিসেবে জীবনযাত্রার খরচ বৃদ্ধি, শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং জন্মনিরোধক ব্যবস্থার সহজলভ্যতার মতো বিষয়গুলোও উল্লেখ করা হয়েছে, যার কারণে নারীরা সন্তান নেয়ার আগ্রহ হারাচ্ছেন।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন