ফের অশান্ত মণিপুর: কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে চলমান অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে কুকি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে মেইতেই নাগরিক সমাজ। সেইসঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিতে ২৪ ঘণ্টা সময়ও বেঁধে দিয়েছেন তারা। খবর এনডিটিভির।
এর আগে সংকট সমাধানের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) বিধায়কদের (এমএলএ) নিয়ে নিজ বাড়িতে বৈঠক ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। তবে কোনো কারণ ছাড়াই ১১ জন বিধায়ক বৈঠকে সেই অনুপস্থিত ছিলেন বলে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, বৈঠক বেশ কিছু প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মণিপুরে আবারও এএফএসপিএ বা 'আর্মড ফোর্সেস (স্পেশাল পাওয়ার্স) অ্যাক্ট' আরোপ করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে কেন্দ্রের একটি পর্যালোচনা চাওয়া এবং সাতদিনের মধ্যে জিরিবাম হত্যাকাণ্ডের জন্য অভিযুক্ত কুকি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে একটি গণ অভিযান পরিচালনা।
এছাড়াও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলা জাতীয় তদন্ত সংস্থার কাছেও হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছেন বিধায়করা। তারা এও বলছেন, হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী কুকি বিদ্রোহীদের একটি 'বেআইনি সংগঠনের' সদস্য হিসেবে ঘোষণা করা উচিত।
এদিকে মেইতেই নাগরিক সমাজের সম্মিলিত এক সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংকে কুকি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে। সেইসঙ্গে বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবগুলোও প্রত্যাখ্যান করেছেন তারা।
এ বিষয়ে কোঅরডিনেটিং কমিটি অন মণিপুর ইন্টিগ্রিটির মুখপাত্র খুরাইজাম আথোবা বলেন, 'তারা (সরকার) জিরিবামে ছয় নারী ও শিশু হত্যার জন্য দায়ী কুকিদের বিরুদ্ধে অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ কিন্তু আমরা বলে আসছি যে গত বছরের মে মাস থেকে শুধু জিরিবামে নয়, মণিপুরের আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় এ ধরনের অপরাধ হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার বা বিধায়কদের আবার জনগণের সঙ্গে পরামর্শের প্রয়োজন নেই। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমরা সরকারের গৃহীত প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা এবং এর চেয়ে ভালো প্রস্তাব খুঁজে বের করার দাবি জানাচ্ছি।
গত সপ্তাহে জিরিবাম জেলায় হামলা চালায় কুকি বিদ্রোহীরা। তারা ছয় গ্রামবাসীকে ধরে নিয়ে যায়। গত শনিবার জিরিবাম নদী থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। প্রতিবাদে বহু ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়েছে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কার্যালয়েও। হামলার চেষ্টা করা হয় মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের বাড়িতেও। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিপূর্বে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। এরপর মোতায়েন করা হয় আরও ৫০ কোম্পানি সেন্ট্রাল পুলিশ ফোর্স।