পাকিস্তানে আফগান সীমান্তের কাছে গুলিতে নিহত ৩৮
পাকিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ২০০ যাত্রীবাহী একটি গাড়িবহরে অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীর গুলিতে নারী ও শিশুসহ অন্তত ৩৮ জন নিহত হয়েছে।
উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে হাইওয়ের উপর এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের দাবি, ঘটনায় বেশ কিছু পুলিশকর্মীরও মৃত্যু হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রশাসন জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের হাইওয়ে দিয়ে শিয়া মুসলিমদের একটি কনভয় যাচ্ছিল। সে সময় তার উপর এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়া হয়। ঘটনায় অন্তত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ২০ জন। অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, ''যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা মানবতার শত্রু। অশান্তি সৃষ্টিকারী এই আক্রমণকারীদের কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।'' প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, যাদের উপর আক্রমণ চালানো হয়েছে, তারা সাধারণ শান্তিপ্রিয় জনতা।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং দ্রুত দোষাীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে একের পর এক সহিংসতার ঘটনা ঘটেই চলেছে। এর আগেও এভাবে গুলি চলার ঘটনা ঘটেছে সেখানে। ফলে ওই রাস্তায় সাধারণ মানুষের গাড়ির সামনে পুলিশের পাইলট দেওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এদিনও ওই শিয়া মুসলিমদের গাড়ির সঙ্গে পুলিশের পাইলট গাড়ি ছিল। আচমকাই রাস্তার দুইদিক থেকে মুশলধারে গুলিবৃষ্টি শুরু হয়। প্রায় মিনিটখানেক গুলি চালানো হয়। কনভয়ের গাড়িগুলি কার্যত ঝাঁঝরা হয়ে যায়। ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলেও স্থানীয় মানুষ জানিয়েছেন।
খাইবার পাখতুনখোয়ার কুররামে এই ঘটনা ঘটেছে। গত কয়েকমাসে শিয়া এবং সুন্নিদের মধ্যে সংঘর্ষে এখানে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পাকিস্তানে সুন্নি মুসলিমদের সংখ্যা বেশি। তবে কুররামে শিয়া মুসলিম সুন্নির চেয়ে বেশি। এই অঞ্চলের পাশেই আফগানিস্তান। যেখানে সুন্নি তালেবানরা সরকার চালাচ্ছে। ফলে খাইবার পাখতুনখোয়ায় তেহেরিক-ই-তালেবান এবং ইসলামিক স্টেটের দাপট আছে। তারা মনে করে সুন্নি মুসলিমরাই ইসলামের ধারক-বাহক। এনিয়েই শিয়াদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ।
গত মাসে এই রাস্তার উপরেই এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। তাতেও বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। যার জেরে দীর্ঘদিন ওই হাইওয়ে বন্ধ করে রাখা হয়। সম্প্রতি সিদ্ধান্ত হয়, পুলিশের পাইলট গাড়ি নিয়ে ওই এলাকা দিয়ে গাড়ির কনভয় যেতে পারবে। কিন্তু তাতেও রক্ষা হলো না। আবার গুলি চলল। প্রাণ গেল নিরাপরাধ সাধারণ মানুষের।