গাজায় গণহত্যা চালিয়েছে ইসরায়েল: অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অভিযোগ করেছে যে, গাজা যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েল এই অভিযোগ তীব্রভাবে অস্বীকার করেছে।
লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন ঘটনা এবং ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে।
১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশন অনুযায়ী, গণহত্যা হলো এমন কর্মকাণ্ড যা কোনো জাতীয়, জাতিগত, বর্ণগত বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে করা হয়। এই কনভেনশন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদিদের গণহত্যার প্রেক্ষিতে প্রণীত হয়েছিল।
ইসরায়েল বারবার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বলেছে যে তারা আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলছে এবং ৭ অক্টোবর, ২০২৩-এ হামাসের আক্রমণের পরে আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওরেন মারমোরস্টেইন এক্স-এ বলেন, 'অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আবারও সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে।'
অ্যামনেস্টির ইসরায়েলি শাখা এই সিদ্ধান্ত থেকে নিজেদের দূরে রেখেছে এবং বলেছে যে তারা এই গবেষণায় কোনো অংশ নেয়নি এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ বিশ্বাস করে না। তবে তারা দীর্ঘ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজায় ধ্বংস ও হত্যাকাণ্ড ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে এবং সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত দাবি করেছে।
অ্যামনেস্টির এই অভিযোগের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একমত নয়। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, গাজায় গণহত্যার অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ে বেশ কয়েকটি বিচারিক প্রক্রিয়া চলছে।
ইসরায়েল গাজায় বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করে ১৪ মাস আগে, যখন হামাসের নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলি এলাকায় আক্রমণ চালিয়ে ১,২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫০ জনকে গাজায় জিম্মি করে নিয়ে যায়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে।
ফিলিস্তিনি ও জাতিসংঘ কর্মকর্তারা বলছেন, গাজার ভেতরে কোনো নিরাপদ স্থান অবশিষ্ট নেই। গাজা উপত্যকার ছোট এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রায় ২৩ লাখ মানুষের অধিকাংশই বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।