ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির ‘হোম অ্যালোন’ মিম নিয়ে ইলন মাস্ক ও ট্রাম্প জুনিয়রের রসিকতা
জনপ্রিয় শিশুতোষ চলচ্চিত্র 'হোম অ্যালোন'-এর কেভিন ম্যাকঅ্যালিস্টারের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির তুলনা করে একটি মিম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আর মজা পেয়ে নিজেদের এক্স প্রোফাইলে শেয়ার দিয়েছেন ইলন মাস্ক এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের বড় ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র।
মিমটির ১৯৯২ সালের কমেডি চলচ্চিত্র 'হোম অ্যালোন ২'-এর একটি বিখ্যাত দৃশ্য থেকে নেওয়া। সেই দৃশ্যে নিউ ইয়র্কের প্লাজা হোটেলে চলচ্চিত্রটির প্রধান চরিত্র কেভিনকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা যায়। সেসময় হোটেলটির মালিক ছিলেন ট্রাম্প।
মিমটির উপরের অংশে ট্রাম্পের সেই দৃশ্যটি দেখানো হয়েছে। আর নিচের ছবিতে দেখানো হয়েছে সম্প্রতি ট্রাম্প ও জেলেনস্তির একটি বৈঠকের দৃশ্য। যদিও ছবিটি সম্পাদনা করে করা হয়েছে। ছবিতে জেলেনস্কিকে কেভিনের মতো টুপি পরা অবস্থায় দেখানো হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র গতকাল মঙ্গলবার মিমটি 'এক্স' প্ল্যাটফর্মে (পূর্বে টুইটার) পুনরায় পোস্ট করেন এবং হাসির ইমোজি যোগ করেন। এর পরপরই ইলন মাস্কও একই রকম প্রতিক্রিয়া জানান।
এ ধরনের রসিকতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে, কিছু মানুষ এটিকে মজার হিসেবে নিয়েছে, আবার অনেকে বিষয়টিকে রাজনৈতিক সংবেদনশীলতার দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করেছেন।
সম্প্রতি প্যারিস সফরে সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নটর ডেম ক্যাথেড্রালের পুনরায় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
অনুষ্ঠানের পরপরই ট্রাম্প, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁ এবং জেলেনস্কির মধ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি নটর ডেমের পুনর্নির্মাণের ঐতিহাসিক মুহূর্ত উদ্যাপনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং ইউক্রেনের চলমান সংকট নিয়ে আলোচনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে।
বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, এই বৈঠকে ইউক্রেনের সংকট নিরসনে সম্ভাব্য পদক্ষেপ এবং পশ্চিমা শক্তিগুলোর সাথে সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ এই উদ্যোগে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেন।
এ ধরনের কূটনৈতিক আলোচনা ইউক্রেন সংকটের ভবিষ্যৎ সমাধানে একটি নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলো বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে অনিচ্ছুক ছিলেন এবং শেষ মুহূর্তে এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেন।
বৈঠকটি প্রায় ৪৫ মিনিট স্থায়ী হয়েছিল, যেখানে ইউক্রেনের সংকট এবং "শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য যৌথ পদক্ষেপ" নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে বৈঠক শেষে ট্রাম্পের উপদেষ্টা রজার স্টোন জেলেনস্কির পোশাক নিয়ে সমালোচনা করেন।
যেখানে ম্যাখোঁ এবং ট্রাম্প ফর্মাল স্যুট পরিধান করেছিলেন, সেখানে জেলেনস্কি একটি কালো সোয়েটশার্ট, ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর প্রতীক সহ স্ল্যাকস প্যান্ট, সামরিক স্টাইলের জ্যাকেট এবং ব্রাউন কমব্যাট বুট পরেছিলেন।
গত মাসে, এলন মাস্ক জেলেনস্কির অবিশ্বাস্য হাস্যরসের অনুভূতি নিয়ে ঠাট্টা করেন, যখন ইউক্রেনের নেতা একটি রেডিও সাক্ষাৎকারে দাবি করেছিলেন যে তার দেশ "স্বাধীন" এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাকে আলোচনার টেবিলে আনার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে পারবে না।
২০২২ সাল থেকে, ইউক্রেন সরকার তার সংস্থাগুলি চালু রাখতে এবং কর্মচারীদের বেতন দিতে বিদেশি সাহায্যের উপর নির্ভরশীল। দেশের সামরিক বাহিনীও প্রায় সম্পূর্ণভাবে বিদেশি তহবিলের উপর নির্ভরশীল।