গোলান মালভূমির দখল না নিতে ইসরায়েলকে সতর্ক করল রাশিয়া
সিরিয়ার "চলমান সংকটের সুযোগ নেওয়া" থেকে বিরত থাকার জন্য ইসরায়েলকে সতর্ক করেছেন রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। সম্প্রতি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সিরিয়ার ভূখণ্ডে অভিযান চালানোর পর তিনি এই মন্তব্য করেন।
এই মাসের শুরুর দিকে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম-এর (এইচটিএস) নেতৃত্বে সিরিয়ার বিরোধী বাহিনী আকস্মিক হামলা চালিয়ে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করে। পরিস্থিতির চাপে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ পদত্যাগ করেন এবং রাশিয়ায় আশ্রয় গ্রহণ করেন।
আসাদের সরকারের পতনের পর ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) সিরিয়া ও গোলান মালভূমির মধ্যে অবস্থিত বাফার জোনে [নিরপেক্ষ অঞ্চল] প্রবেশ করে। জাতিসংঘ এবং আরব রাষ্ট্রগুলোর তীব্র সমালোচনা সত্ত্বেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু রোববার (১৫ ডিসেম্বর) ঘোষণা দেন, তার মন্ত্রিসভা গোলান মালভূমিতে ইহুদি জনসংখ্যা বৃদ্ধির পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছে এবং সেখানে অনির্দিষ্টকালের জন্য "বাসস্থান স্থাপন" করবে।
সিরিয়ার ঘটনাপ্রবাহের পেছনে কোন বহিরাগত শক্তি কাজ করছে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রিয়াবকভ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি যেমন "স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান," তেমনি ইসরায়েলও এই পরিস্থিতির অন্যতম "সুবিধাভোগী"।
তিনি বলেন, "পশ্চিম জেরুজালেমের কিছু 'অতি উৎসাহী' ব্যক্তিকে আমি সতর্ক করে বলতে চাই, তারা যেন এই সুযোগের নেশায় মত্ত না হন।" তিনি জোর দিয়ে বলেন, "গোলান মালভূমি সংযুক্তকরণ নিয়ে বর্তমানে যেভাবে আলোচনা চলছে, তা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।"
রিয়াবকভ ইসরায়েলকে ১৯৭৪ সালের সিরিয়া-ইসরায়েল বিরতি চুক্তির পুরোপুরি বাস্তবায়নে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। এই চুক্তির আওতায় গোলান মালভূমিতে একটি বাফার জোন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।
ইসরায়েলি সরকার এর আগে দাবি করেছিল, আসাদ সরকারের পতনের পর ১৯৭৪ সালের বাফার জোন চুক্তি "ভেঙে পড়েছে"।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধান হারজি হালেভি বলেন, "সিরিয়ায় যা ঘটছে, তাতে ইসরায়েল কোনো হস্তক্ষেপ করছে না" এবং ইসরায়েলের "সিরিয়া শাসনের কোনো ইচ্ছা নেই।" তবে তিনি উল্লেখ করেন, "সিরিয়ার সেনাবাহিনী ভেঙে পড়ার পর সন্ত্রাসী উপাদান প্রবেশের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। তাই আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি, যেন চরমপন্থি সন্ত্রাসীরা আমাদের সীমান্তের কাছে ঘাঁটি না গাড়তে পারে।"
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানান, বাফার জোনে প্রবেশের উদ্দেশ্য একটি নতুন "নিরাপত্তা এলাকা" তৈরি করা। তিনি বলেন, এই এলাকা "ভারী কৌশলগত অস্ত্র এবং সন্ত্রাসী অবকাঠামো" থেকে মুক্ত রাখা হবে।