দলে দলে পালিয়েছে ফ্রান্সে প্রশিক্ষিত ইউক্রেনের বিশেষ ব্রিগেড, তদন্ত শুরু
ফ্রেঞ্চ অস্ত্র ব্যবহারে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত একটি ব্রিগেডের শত শত সৈন্য পালিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়ার পর তদন্ত শুরু করেছে ইউক্রেনের স্টেট ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ইন্টারফ্যাক্স-ইউক্রেনকে দেওয়া এক বিবৃতিতে সংস্থার মুখপাত্র তেতিয়ানা সাপিয়ান জানান, ১৫৫তম মেকানাইজড ব্রিগেডের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও সৈন্য পালানোর অভিযোগে ফৌজদারি তদন্ত শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, "তদন্ত চলছে। কোনো প্রাথমিক ফলাফলের বিষয়ে কথা বলার সময় এখনো আসেনি।"
'আনা অব কিয়েভ' নামে পরিচিত এই পদাতিক ব্রিগেডটি ১১শ শতকের কিয়েভের রাজকুমারীর [যিনি ফ্রান্সের রানি হয়েছিলেন] নামে নামকরণ করা হয়েছে। এতে প্রায় ৫ হাজার ৮০০ সৈন্য রয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ২ হাজার সৈন্য ২০২৪ সালে ফ্রান্সে কয়েক মাস ধরে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
ফ্রান্সে পদাতিক ব্রিগেডের সৈন্যরা বেশ উচ্চ প্রোফাইলে ছিলেন। ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ গত অক্টোবরের এক সফরে ১৫৫তম ব্রিগেডের কয়েকটি ব্যাটালিয়নের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করেছিলেন।
ফ্রান্স ১৫৫তম মেকানাইজড ব্রিগেডকে নিজস্ব অস্ত্রে সজ্জিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৮টি এএমএক্স-১০ সাঁজোয়া যান, ১৮টি সিজার হাউইটজার এবং ১২৮টি সাঁজোয়া বাহন। ইউনিটটি জার্মানির বিখ্যাত লিওপার্ড ২এ৪ যুদ্ধট্যাংকও ব্যবহার করে।
নভেম্বরের মধ্যে ব্রিগেডটি ফ্রন্টলাইনে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত ছিল। ফ্রান্সের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, পশ্চিমা যুদ্ধক্ষেত্রের প্রশিক্ষণ নিয়ে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা এখন যুদ্ধের জন্য সজ্জিত।
১,৭০০ সৈন্য পালানোর অভিযোগ
ইউক্রেনীয় সাংবাদিক ইউরি বুতুসভের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মোতায়েনের আগেই এই ব্রিগেডকে সৈন্য পালানো এবং নেতৃত্বজনিত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
বুতুসভ লিখেছেন, "ব্রিগেড প্রথম গুলি চালানোর আগেই ১,৭০০ সৈন্য স্বেচ্ছায় এটি ত্যাগ করেছে।"
তবে তিনি তার দাবির পক্ষে প্রমাণ উপস্থাপন করেননি। তিনি একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন, যাতে মার্চ থেকে নভেম্বরের মধ্যে প্রতি মাসে শত শত সৈন্য ব্রিগেড থেকে পালিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে নতুন সৈন্য দিয়ে ক্রমাগত ইউনিটটি পূরণ করতে হয়েছে।
বুতুসভ আরও জানান, ইউনিটটির অনেক সদস্যকে ইউক্রেনের রাস্তাগুলো থেকে জোর করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, যা পালানোর একটি মূল কারণ। এমনকি ফ্রান্সে প্রশিক্ষণের সময়ও প্রায় ৫০ জন সৈন্য নিখোঁজ হন।
ফ্রন্টলাইনে মোতায়েনের কয়েক দিনের মধ্যে ব্রিগেড কমান্ডার কর্নেল দিমিত্রো রিউমশিন হঠাৎ পদত্যাগের ঘোষণা দেন। দুইটি ব্রিগেডের কমান্ডিং অভিজ্ঞতা থাকা এই অভিজ্ঞ অফিসার ফেসবুক পোস্টে সৈন্যদের ধন্যবাদ জানান। তিনি লিখেছিলেন, "১৫৫তম ব্রিগেড একটি কঠিন কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ যাত্রা অতিক্রম করেছে।"