বিশ্বের সবচেয়ে শ্বাসরুদ্ধকর পরিত্যক্ত স্থান: পাকিস্তানের বিবি জিন্দি থেকে ইতালির পালাজ্জো অ্যাথেনা
থমাস জংলে নিজের নামেই প্রতিষ্ঠা করেছেন এক প্রকাশনা সংস্থা। সম্প্রতি তার সংস্থার সংগ্রহে কিছু আরবান এক্সপ্লোরার (উর্বেক্স) ক্যাটাগরির ছবি এসেছে। সেখান থেকেই ১০টি ছবি বাছাই করে প্রকাশিত হয়েছে 'দ্য অ্যাটলাস অব অ্যাব্যান্ডড প্লেসেস' নামে একটি সংকলন। বইটি শুধু চমৎকার ছবিই প্রকাশ করেনি বরং এর মাধ্যমে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা, সুরক্ষা এবং সংরক্ষণের আবেদন জানিয়েছে।
১. বিবি জিন্দির মাজার (পাকিস্তান)। 'দ্য অ্যাটলাস অব অ্যাব্যান্ডনড প্লেসেস' হয়তো জংলে প্রকাশনা সংস্থার প্রকাশিত সমস্ত উর্বেক্স ফটোগ্রাফি সংকলনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্যক্তিগত। এল পাইসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে থমাস জংলে বলেন, "আমি প্রায় ১০ জন ফটোগ্রাফারের থেকে সবচেয়ে চমৎকার ৫০টি ছবি বেছে নিয়েছি, যেগুলো আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। আমি এমন দেশগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছিলাম, যেগুলোর কোনো বই আমাদের কাছে ছিল না।"
বিবি জিন্দির মাজার, যা উচ সরিফ (দক্ষিণ পাঞ্জাব) এ অবস্থিত। ফটোগ্রাফার টেরেন্স আবেলার তোলা ছবির এই মাজারটি ১৪৯৩ সালে ইরানি প্রিন্স দিলশাদ তৈরি করেছিল। তিনি তৎকালীন সংগীতজ্ঞ সুফি সন্তের বিখ্যাত পুরোনো নাতি বিবি জিন্দির সম্মানে এটি তৈরি করেছিলেন। অত্যন্ত শোভিত এবং একটি মহিমান্বিত গম্বুজ দ্বারা সজ্জিত এই মাজারটি রক্ষণাবেক্ষণের প্রতি অবহেলা ও অঞ্চলের বৈরী আবহাওয়া কারণে নষ্ট হতে শুরু করেছে। ১৮১৭ সালের প্রবল বন্যায় কাঠামোর অর্ধেক অংশ এবং আশেপাশের বেষ্টনী ধ্বংস হয়ে যায়। আর্দ্রতা, লবণের কারণে এবং ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়াসহ অন্যান্য কারণে এর আরও ক্ষতি হয়েছে। পাকিস্তান সরকার এই মাজারটি সংরক্ষণে পদক্ষেপ নিয়েছে।
২. সিমেন্ট ফ্যাক্টরি (কাতালোনিয়া, স্পেন)। 'দ্য অ্যাটলাস অব অ্যাব্যান্ডনড প্লেসেস' বইয়ের পৃষ্ঠাগুলোতে অজানা স্থানও রয়েছে, যা সত্যিকারের 'উর্বেক্স' ফ্যাশনে উপস্থাপন করা হয়েছে। একটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি এমন একটি স্থান, যার সম্পর্কে ফটোগ্রাফার এবং লেখক জেরেমি চামট রসি খুব বেশি তথ্য দেননি। তিনি শুধু উল্লেখ করেছেন, এটি কাতালান উপকূল বরাবর ছড়িয়ে থাকা অনেক পরিত্যক্ত সিমেন্ট ফ্যাক্টরিগুলোর মধ্যে একটি।
তিনি বলেন, "যারা বিভিন্ন শহর নিয়ে গবেষণা করেন, তাদের কাছে এটি পরিচিত।" সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই স্থানটি বাণিজ্যিক এবং সঙ্গীত ভিডিওর জন্য শুটিং লোকেশন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। চামট রসি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, "আমাদের অনেক স্থাপত্য শিল্প, ঐতিহ্য পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও তার অনেকগুলোই অজ্ঞাত রয়ে গেছে। অনেক রত্নকেই অতীত ভেবে মূল্যহীন করে রাখা হয়। বইটি আমাদের পৃথিবীর সাংস্কৃতিক ধন-সম্পদ হিসেবে ঐতিহাসিক স্থানগুলো রক্ষা করার প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করিয়ে দেয়।"
৩. টিবিলিসি ফুনিকুলার স্টেশন (জর্জিয়া)। ১৯২১ সালে সোভিয়েত প্রভাবের অধীনে আসার পর, জর্জিয়া দ্রুত রুশ বুদ্ধিজীবীদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্যে পরিণত হয়, যা বিলাসিতা এবং আনন্দের প্রতীক ছিল। নাচ থেকে শুরু করে প্রাচীন খাবার- নানান ধরনের আনন্দের উৎস ছিল এটি। সেই সোনালি যুগের সাক্ষ্য এখনও স্থানগুলোতে রয়ে গেছে; যেমন- তস্কালতুবো স্যানেটোরিয়ামগুলো ক্ষয়ে যাওয়া সত্ত্বেও এখনও সেই যুগের মহিমার প্রমাণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। আজকাল, এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগই আবখাজিয়া থেকে পালানো শরণার্থীরা দখল করে রেখেছেন বলে 'দ্য অ্যাটলাস অব অ্যাব্যান্ডনড প্লেসেস' বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই সময়ের আরেকটি স্মৃতিচিহ্ন হল টিবিলিসি ফুনিকুলার। ছবি ক্যাপচার করেছেন টেরেন্স আবোলা। ১৯০৩ সালে নির্মিত, ফুনিকুলারটি এক সময় টিবিলিসির কেন্দ্র থেকে মটাটসিন্দা পার্কের উচ্চতায় প্রতি বছর পাঁচ লাখ পর্যন্ত মানুষ পরিবহন করত। এটি ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চলেছে। পরে এতে এক দুর্ঘটনায় ২০ জনের মৃত্যু এবং ১৫ জন আহত হন। বর্তমানে, এই ঐতিহাসিক স্থানটিকে পুনরুদ্ধার করার জন্য একটি সংস্কার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
৪. স্ট্যাক রক ফোর্ট (ওয়েলস, যুক্তরাজ্য)। ছবিটি স্ট্যাক রক ফোর্টের একটি দৃশ্য। এটি পেমব্রোকশায়ারের মিলফোর্ড হেভেনের কাছে একটি পাথুরে দ্বীপে অবস্থিত, যা এক বিশাল পাথরের প্রতিরক্ষা ব্যাটারি। ফটোগ্রাফার ম্যাট এমেটের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ফোর্টটি দুটি পর্যায়ে নির্মিত হয়েছিল। প্রথমে এটি একটি মারটেলো-ধরনের দুর্গ ছিল, যা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ১৯ শতকের উপকূলীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল। এটি পেমব্রোক ডকের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর পর্যন্ত পৌঁছানোর পথের মুখে কৌশলগতভাবে অবস্থান করেছিল। ১৮৫৯ সালে, ফরাসি আক্রমণের ভয়ে ব্রিটেন তার উপকূলীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করে এবং স্ট্যাক রক ফোর্টটিকে বর্তমানে যা দেখা যায়, তার বড় আকারের বৃত্তাকার কাঠামোতে সম্প্রসারিত করা হয়।
ফোর্টটিতে ১৫৪ সেনা এবং ৫৪টি ভারী গান ধারণ করার জন্য বাসস্থানসহ সম্পূর্ণ ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু কখনও যুদ্ধের সময় তা ব্যবহৃত হয়নি। এর বিশাল গ্রানাইট ক্যাসেমেটস এবং এমব্রেসারগুলি আর্টিলারিকে সুরক্ষিত রাখার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। কিন্তু বছরের পর বছর এগুলো এভাবেই রয়েছে। সম্প্রতি দুর্গটির ধ্বংসাবশেষ পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে।
২০২১ সালে সাইটটি আনোনিয়েম কালেকটিভের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারা পরবর্তীতে ফটোগ্রাফারদের এই স্থানে আসতে এবং এটি নথিভুক্ত করতে আমন্ত্রণ জানায়। ভবিষ্যতে, এটি শহুরে অন্বেষণ উৎসাহীদের জন্য খোলার পরিকল্পনা চলছে।
৫. মনসো-সুর-সামব্রের কুলিং টাওয়ার (বেলজিয়াম)। ২০০৩ সালে জংলে প্রকাশনা হাউস প্রতিষ্ঠা করার আগে, থমাস জংলে সাত বছর স্টেইনলেস স্টিল কোম্পানিতে কাজ করেছিলেন। সে সময়ের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, "যখন আমি শিল্প কলাগুলো দেখতাম তখন খুব প্রভাবিত হতাম।" এই অভিজ্ঞতা তাকে পরিত্যক্ত কারখানা এবং বিভিন্ন প্রকৌশলগত শৈল্পিক ল্যান্ডস্কেপগুলোর প্রতি তাকে আগ্রহী করে তোলে। পরে তিনি সেগুলো উর্বেক্স বইতে তুলে রাখার চেষ্টা করেন।
'দ্য অ্যাটলাস অব অ্যাবান্ডনড প্লেসেস' এ উদাহরণস্বরূপ, মনসো-সুর-সামব্রের এই কুলিং টাওয়ারটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। "কিছু স্থান দ্রুত অন্বেষক এবং ফটোগ্রাফারদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে," বলেন ছবিটির ফটোগ্রাফার ম্যাট এমেট।
কুলিং টাওয়ারটি একটি পরিত্যক্ত পাওয়ার স্টেশনের পাশে অবস্থিত। এটি একটি খাল এবং স্লুইস গেঠ দ্বারা আলাদা করা হয়েছে। এর কার্যাবলী ছিল সেই পানি ঠান্ডা করা এবং পুনরায় চক্রবৃদ্ধি করা, যা বাষ্প উৎপাদনের জন্য ফুটানো হতো। এটি স্টেশনের টারবাইন চালাতে ব্যবহৃত হতো।
৬. টেরে রুজ (লুক্সেমবার্গ)। ১৯০৭ সালে নির্মিত, এই খনিজ স্তূপটি ১৯৭৭ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি বৃহৎ স্টিলমিলের শেষ স্মৃতিচিহ্ন। একটি শিল্প এলাকায় এবং একটি পরিত্যক্ত রেলপথের পাশে অবস্থিত। এই স্থানটি এলাকার অতীতের শৈল্পিক আর্কিটেকচারকে তুলে ধরে। ছবিটির ফটোগ্রাফার ফ্রান্সিস মেসলেট বলেন, "যদি এর ধ্বংস এখনও না হয় তাহলে খুব দ্রুতই এটি ধসে পড়বে। তবে এর স্বতন্ত্র স্টিল গ্যান্ট্রি কাঠামো সংরক্ষিত হবে এবং পুনর্বাসিত করা হবে।"
তিনি আরও বলেন, "অন্তরীণ পুকুরটি পার হওয়ার পর, আমরা এক ধরনের সুড়ঙ্গের মধ্যে প্রবেশ করি, যা ১৫০ থেকে ২০০ মিটার দীর্ঘ, যার পুরো দৈর্ঘ্য জুড়ে একটি স্থির জলাশয় রয়েছে। দুই পাশে দুটি সরু পথ রয়েছে। জলটি স্ফটিকের মতো পরিষ্কার এবং যা কিছু যন্ত্রপাতি এখনও অবশিষ্ট রয়েছে, তার প্রতিফলন ঘটায়। এটি একটি চমৎকার দৃশ্য।"
এই স্থানটি ফটোগ্রাফারদের মধ্যে বেশ পরিচিত। যদিও দেখে মনে হবে এখানে ঢোকা সহজ, কিন্তু আসলে এটি বিপজ্জনক; বিশেষ করে, উপরের স্তরে প্রবেশ করা। এটি ফরাসি চলচ্চিত্র 'ক্রিমসন রিভার্স: অ্যাঞ্জেলস অফ দ্য অ্যাপোক্যালিপস' এ একটি পালানোর দৃশ্যের স্থান হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছিল।
৭. লন্ডনের সাবওয়ে রিজার্ভয়র। ফিন্সবুরি পার্কের নিচে অবস্থিত, এই পরিত্যক্ত ভিক্টোরিয়ান রিজার্ভয়রে পানি সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের জন্য ডিজাইন করা সিস্টার্নগুলোর একটি। এটি পানিরোধী স্তর দ্বারা আবৃত এবং আন্ডারগ্রাউন্ডে নির্মিত, যাতে সূর্যালোকের কারণে শেওলা না জন্মে। এটি 'গোপন শহর' নামে পরিচিত। লন্ডনের গোপন স্থানগুলোর একটি নেটওয়ার্কের অংশ এটি। এ স্থানটি কৌতূহলী এবং সাহসী ভ্রমণকারীদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান।
ছবিটির ফটোগ্রাফার এবং সংযুক্ত টেক্সটের লেখক ম্যাট এমেট বলেন, "একবার সূর্য ডুবে যাওয়ার পর, অনুসন্ধানকারীরা চুপচাপ শ্যাফট এবং সুড়ঙ্গের মধ্যে নামেন, সিঁড়ির সাথে আলো জ্বালিয়ে অন্ধকারে হারিয়ে যান।" লন্ডন তার বৃহত্তম সাবওয়ে নেটওয়ার্কের জন্য পরিচিত, তবে এটি এমন স্থানগুলোও লুকিয়ে রাখে, যা সরকার এবং গোয়েন্দা সেবার সাথে যুক্ত, যেমন- সার্ভিস টানেল, বাঙ্কার, বেসমেন্ট এবং আরও অনেক গোপন এলাকায়।
৮. গুণকানজিমা (জাপান)। হাশিমা দ্বীপ, যা গুণকানজিমা (ব্যাটলশিপ আইল্যান্ড) নামেই বেশি পরিচিত, একটি সামরিক যুদ্ধজাহাজের মতো দেখতে হওয়ার কারণে এই নাম পেয়েছে, তার অদ্ভুত দেওয়ালের পেছনে একটি পরিত্যক্ত শহর লুকিয়ে রয়েছে। ছবিটির ফটোগ্রাফার জর্ডি মেও একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।
তিনি বলেন, "১৮৯০ সালে মিতসুবিশি দ্বীপটি কিনে নেওয়ার পর এর মাইনিং শুরু হয়। ১৯৫৯ সালে সেখানে শ্রমিকরা তাদের পরিবার সঙ্গে নিয়ে বসবাস করা শুরু করে। দ্বীপটির ৬.৩ হেক্টর জায়গায় প্রায় আট হাজার বাসিন্দা বসবাস করে।"
মেও আরও জানান, "তখন এটি বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ স্থান ছিল।" দ্বীপটিতে অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক, স্কুল, হাসপাতাল, সিনেমা, উপাসনালয়, দোকান এবং এমনকি একটি পতিতালয়ও ছিল। ১৯৭৪ সালে যখন কয়লাখনি বন্ধ হয়ে যায়, তখন গুণকানজিমা পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। এটি প্রায় ২০১০ সালের প্রথম দিক পর্যন্ত জনশূন্য ছিল। পরে এখানে আবার প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়।
দ্বীপটি 'স্কাইফল' (জেমস বন্ড সিরিজের ছবি) এবং 'ইনসেপশন' (পরিচালক ক্রিস্টোফার নোলান) চলচ্চিত্রের পটভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। নাগাসাকি শহর এখান থেকে মাত্র তিন মাইল দূরে অবস্থিত। এই দ্বীপের ছোট একটি অংশ এখন পর্যটকদের জন্য খোলা রাখা হয়েছে।
৯. কেলেনফোল্ড পাওয়ার প্ল্যান্ট (হাঙ্গেরি)। 'দ্য অ্যাটলাস অব অ্যাব্যান্ডন্ড প্লেসেস' অন্যান্য আরবান এক্সপ্লোরেশন (উর্বেক্স) সংকলন থেকে নিজেকে আলাদা করেছে এর বেশিরভাগ সাইটের সুনির্দিষ্ট নাম ও অবস্থান উল্লেখ করে। তবে এর মানে এই নয় যে এগুলো সহজে বা নিরাপদে দেখা যাবে। এই ছবির ফটোগ্রাফার রোমান রোব্রোক কেলেনফোল্ড পাওয়ার প্ল্যান্টের বিশাল স্থাপনার একটি ছোট অংশই ডকুমেন্ট করার অনুমতি পেয়েছিলেন।
পাওয়ার প্ল্যান্টটি দুই ভাগে বিভক্ত-একটি পরিত্যক্ত অংশ এবং একটি অংশ যা একটি বেসরকারি কোম্পানি পরিচালনা করে। শত বছরেরও বেশি পুরোনো এই পাওয়ার প্ল্যান্টটি এক সময় ইউরোপের সবচেয়ে আধুনিক প্ল্যান্ট হিসেবে পরিচিত ছিল এবং হাঙ্গেরির শিল্প ঐতিহ্যের একটি রত্ন হিসেবে বিবেচিত হয়।
এর কন্ট্রোল রুম ২০০৫ সাল থেকে অকার্যকর। রোব্রোকের ভাষায়, "সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য যা আমার চোখ দেখেছে, বিশেষ করে এর চমকপ্রদ আর্ট ডেক গ্লাস যা সিলিংয়ে রয়েছে। ১৯২৭ সালে স্থপতি কালমান রাইখল এবং ভার্জিল বোরবিরো দ্বারা নকশাকৃত এই স্থাপনাটি আইনি সুরক্ষার আওতায় রয়েছে, যা এর ধ্বংস রোধ করে; কিন্তু সংস্কার কাজকে নিরুৎসাহিত করে।"
১০. পালাজ্জো আথেনা (লোম্বার্দি, ইতালি)। ২০ শতকের শুরুতে সিলভিও স্ট্রুমিয়া, সিল্ক শিল্পের এক বিশিষ্ট উদ্যোক্তা, পালাজ্জো আথেনা এর মালিক ছিলেন। এটি একটি বৃহৎ নীওক্লাসিক্যাল শৈলীর প্রাসাদ। ফটোগ্রাফার রবার্ট ব্রিনায়ারের দেওয়া তথ্য অনুসারে, এই প্রাসাদটি একটি বিশাল অ্যালিপটিক হলের চারপাশে তৈরি, যা দুটি স্তরের বিস্তৃত এবং একটি গম্বুজ রয়েছে যার মধ্যে স্কাইলাইট রয়েছে।
ব্রিনায়ার বলেন, "গম্বুজটি সাদা স্টুকো ক্যারিয়াটিড দ্বারা সজ্জিত, যা ১৬টি করিনথিয়ান স্তম্ভ দ্বারা সমর্থিত। প্রতিটি স্তম্ভে একটি কারিগরি বা পেশার প্রতীকী চিহ্ন রয়েছে।"
প্রাসাদের বাগানগুলোতে একসময় একটি স্পিনিং মিল ছিল- যা তার উঁচু চিমনির মাধ্যমে বোঝা যায়। এখানে অনেক স্থানীয় নারীর কর্মসংস্থান হয়েছিল। মিলটি বন্ধ হওয়ার কয়েক বছর পর, ১৯৯২ সালে অগ্নিকাণ্ডে ধ্বংস হয়ে যায়।