ট্রাম্পের ইউএসএআইডি কর্মীদের ছুটিতে পাঠানোর পরিকল্পনা আটকে দিল আদালত
![](https://www.tbsnews.net/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2025/02/08/74b62pm4w5jppe53dxm5athqn4.jpg)
মার্কিন উন্নয়ন সংস্থা ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট-এর (ইউএসএআইডি) ২ হাজার ২০০ কর্মীকে সবেতন ছুটিতে পাঠানোর জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা সাময়িকভাবে আটকে দিয়েছেন একজন বিচারক। ট্রাম্পের আদেশ কার্যকর হয় কয়েক ঘণ্টা আগে এই আদেশ দিলেন তিনি।
বিচারক কার্ল নিকোলস বলেন, তিনি ট্রাম্পের আদেশের বিরুদ্ধে 'খুব সীমিত' অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করছেন। ইউএসএআইডি ভেঙে দেওয়ার পরিকল্পনা থামানোর জন্য আদালতের দ্বারস্থ হওয়া দুটি শ্রমিক ইউনিয়নের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, স্থানীয় সময় শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ইউএসআইডির ১০ হাজার কর্মীর মধ্যে ৬১১ জন বাদে বাকিদের প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানোর কথা ছিল।
তবে ২ হাজার ২০০ কর্মীর পক্ষে করা মামলায় যুক্তি দেওয়া হয়, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান লঙ্ঘন করছে।
বিচারক ইউনিয়নগুলোর পক্ষে রায় দেন। তবে বাকি কর্মীদের চাকরির কী হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মামলা করা সংগঠনগুলো বিবিসিকে জানায়, আদালতের লিখিত আদেশ পাওয়ার পরই জানা যাবে সব কর্মীর ওপর এর প্রভাব কেমন হবে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় সহায়তানকারী সংস্থা ইউএসএআইডির বাজেটের বেশিরভাগই স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় হয়। সংস্থাটির ১০ হাজার কর্মীর দুই-তৃতীয়াংশ কাজ করেন বিদেশে।
ট্রাম্প যুক্তি দিয়েছেন, ইউএসএআইডির পেছনে করদাতাদের অর্থের সঠিক ব্যবহার হয় না। তার প্রশাসন ফেডারেল খরচ কমানোর লক্ষ্যে ইউএসএআইডিসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার বাজেট কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রথম মেয়াদে ট্রাম্পের মনোনীত বিচারক নিকোলস শুক্রবার ইউএসএআইডির কর্মীদের ছুটিতে পাঠানো স্থগিতের এই আদেশ দেন। আমেরিকান ফরেন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এবং আমেরিকান ফেডারেশন অভ গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ নামক দুটি ইউনিয়নের জরুরি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ এল।
জনস্বার্থে কাজ করা অ্যাডভোকেসি গ্রুপ পাবলিক সিটিজেন-এর আইনজীবী লরেন বেটম্যান বলে, আপাতত যে ২ হাজারের বেশি সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মী ইউনিয়নের আওতায় রয়েছেন, তারা নিরাপদ থাকবেন।
এরই মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন ইউএসএআইডির প্রায় ৫০০ কর্মীকে ছুটিতে পাঠিয়েছে।
শুনানির সময় বিচারক অনুদান ও চুক্তি পুনর্বহাল এবং ইউএসএআইডির ভবন ফের খুলে দেওয়াসহ মামলার অন্যান্য দাবিগুলোর পক্ষে আদেশ দেননি
মামলায় যুক্তি দেওয়া হয়, প্রেসিডেন্ট সংবিধান ও ফেডারেল আইন লঙ্ঘন করে সংস্থাটি ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছেন। আরও বলা হয়, ফেডারেল আইন অনুযায়ী কেবল কংগ্রেসই সংস্থাটি ভেঙে দেওয়ার বৈধ ক্ষমতা রাখে।
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা ব্রেট শুমেট আদালতকে বলেন, প্রেসিডেন্টের বিশ্বাস, ইউএসএআইডিতে ব্যাপক দুর্নীতি ও প্রতারণা হচ্ছে।
ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একটি নির্বাহী আদেশে এই তহবিলগুলো যাচাই করে তার 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার আগপর্যন্ত সব ধরনের বিদেশি সহায়তা স্থগিত করেন।
এ আদেশের ফলেই ইউএসএআইডির কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। সংস্থাটি প্রায় বিশ্বের দরিদ্রতম অঞ্চলসহ ১২০টি দেশে স্বাস্থ্য ও জরুরি কর্মসূচি পরিচালনা করে।
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সহায়তা প্রদানকারী দেশ। ইউএসএআইডির বাজেট প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার, যা মোট মার্কিন বার্ষিক সরকারি ব্যয়ের (৬.৭৫ ট্রিলিয়ন ডলার) প্রায় ০.৬ শতাংশ।
জাতিসংঘের উইনি ব্যানইমা বলেন, এইচআইভি/এইডস কর্মসূচির প্রধান বিবিসিকে বলেন, এই কাটছাঁটের ফলে সারা বিশ্বে ভয়াবহ প্রভাব পড়বে। 'আগামী পাঁচ বছরে এইডস-সংক্রান্ত মৃত্যু ৬.৩ মিলিয়ন বাড়বে।'