নাসুম-মিরাজে অল্পতেই শেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, সিরিজ জয়ের হাতছানি
ঘরের মাঠে স্পিনই সব সময় বাংলাদেশের প্রধান অস্ত্র। স্পিন দিয়েই প্রতিপক্ষকে কাবু করার পরিকল্পনা সাজায় বাংলাদেশ, মেলে ফলও। এবার একই অস্ত্র বিদেশের মাটিতে ব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে দিক ভুলিয়ে দিলো বাংলাদেশ। বুঝে ওঠার আগেই বাংলাদেশের স্পিন পাঁকে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস থেমে গেল অল্প রানেই।
আগের ম্যাচেই ওয়ানডে অভিষেক হওয়া বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের ঘূর্ণিতে কোণঠাসা হয়ে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও মেহেদী হাসান মিরাজও দেখান স্পিন ভেল্কি। সব মিলিয়ে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের স্পিন জাদুতে ১০৮ রানেই গুটিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস। স্বাগতিকদের কোনো ব্যাটসম্যানকে ২৫ রানের বেশি করতে দেননি বাংলাদেশের স্পিনাররা।
ঘরের মাঠে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটাই ক্যারিবীয়দের সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটা তাদের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন সংগ্রহ। বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের সর্বনিম্ন স্কোর ৬১। ২০১১ সালে চট্টগ্রামে অল্পতেই গুটিয়ে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছিল তারা।
গায়ানার প্রোভিডেন্স ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ক্যারিবীয়দের ১০ উইকেটের ৮টিই নিয়েছেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। সামনে থেকে নেতৃত্ব নেওয়া নাসুমের শিকার ৩টি। মিরাজের শিকার সর্বোচ্চ ৪টি। একটি উইকেট নেন মোসাদ্দেক। পেসারদের মধ্যে শরিফুল নিয়েছেন একটি উইকেট। বাকি উইকেটটি আসে রান আউট থেকে। প্রথম ওয়ানডে জেতায় এই ম্যাচ দিয়েই সিরিজ জেতার সুযোগ এখন বাংলাদেশের সামনে।
টস জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। কন্ডিশন ও উইকেট বিবেচনায় স্পিনার মোসাদ্দেককে দিয়ে ইনিংস শুরু করান তামিম। অপর প্রান্তে মুস্তাফিজুর রহমানকে বোলিংয়ে টানলেও তাকে দিয়ে তিন ওভারের বেশি করাননি তিনি।
দুই প্রান্ত থেকেই স্পিনাররা বোলিং করতে থাকেন। ১১তম ওভারে গিয়ে প্রথম আঘাতটি হানেন মোসাদ্দেক। কাইল মেয়ার্সকে ফিরিয়ে দেন ডানহাতি এই অফ স্পিনার। প্রথম উইকেট হারানোর আগে থেকেই অবশ্য ধুঁকছিল স্বাগতিকরা। ১০.৩ ওভারে মাত্র ২৭ রান তোলে তারা।
মোসাদ্দেক প্রথম উইকেট নিতেই ক্যারিবীয়দের চেপে ধরেন নাসুম। বাঁহাতি এই স্পিনার ৬ ওভারের ব্যবধানে তুলে নেন ৩ উইকেট। তার শিকারে পরিণত হন শেমার ব্রুকস, শেই হোপ ও নিকোলাস পুরান। ৪৫ রানের মধ্যেই ৪ উইকেট হারিয়ে দিক হারিয়ে বসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দিকহারা দলকে ঠিক পথে ফেরানোর চেষ্টা করেও পারেননি রভম্যান পাওয়েল, তাকে ফেরান শরিফুল। অনেকক্ষণ চেষ্টা করে যাওয়া ব্রেন্ডন কিংকে সাজঘর দেখিয়ে দেন মিরাজ। শেষ দিকে গিয়ে কিমো পল সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন। ডানহাতি এই অলরাউন্ডার ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন।
এ ছাড়া শেই হোপ ১৮, কাইল মেয়ার্স ১৭, ব্রেন্ডন কিং ১১ ও রভম্যান পাওয়েল ১৩ রান করেন। ৮ ওভারে ৪ উইকেট নিতে ৩২ রান খরচা করেন মিরাজ। নাসুম ছিলেন সবচেয়ে কৃপণ। ১০ ওভারে মাত্র ১৯ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি। এক উইকেট নেওয়া মোসাদ্দেকের ১০ ওভারে খরচা ৩৭ রান। মুস্তাফিজ ৪ ওভারে ১২ ও শরিফুল ৩ ওভারে ৯ রান দেন।